শরীফ শাওন : [২] বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এর সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, জাপানের যে সকল প্রতিষ্ঠান চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে তারা পুনরায় বিনিয়োগ করতে ৫ টি দেশকে তালিকায় রেখেছে।
[৩] জাপানের সঙ্গে বিশাল বর্ডার থাকায় প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার সঙ্গেও রয়েছে ভালো সম্পর্ক। এছাড়াও তালিকায় আছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া।
[৪] এর আগে কোভিড-১৯ এর উৎপত্তিস্থল হিসেবে চীনকে চিহ্নিত করে বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তাদের শিল্প কারখানা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান তাদের ৩৪টিরও বেশি কোম্পানি ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।
[৫] সহসভাপতি বলেন, তারা চাইলে বাংলাদেশে এসব কারখানা গড়তে পারে। এখানে স্বস্তা দরে শ্রমিক ও ভালো মানের কাজের নিশ্চয়তা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের ইকোনোমিক জোন রয়েছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকাতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সুব্যস্থা রয়েছে। যে কোন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি এখানে গড়ে ওঠা সম্ভব জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে তাদের টেকনিশিয়ান দিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খরচ এবং মানের দিক থেকে পণ্য উৎপাদনে যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের সক্ষমতা বেশি।
[৬] তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর থেকেই বহির্বিশ্বের বিনিয়োগ পেতে বিডা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছে, এছাড়া সরকারও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি ও ফরেন মিনিস্ট্রি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জানান তিনি।
[৭] অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে কিনা, তা নির্ভর করে খরচের উপর। গণমাধ্যমের তথ্য দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এই খরচ অনেক উর্দ্ধে। তাই প্রতিযোগিতার বাজার ধরা তেমন সহজ হবে না। ব্যবসার অ্যাপ্রুভাল নিতে বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় এ দেশে সময় বেশি লাগে। এছাড়াও কর্মীদের কর্মক্ষমতা ও যোগ্যতার বিবেচনাতেও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে আছি। তিনি বলেন, বহির্বিশ্ব বিনিয়োগের আগে যাচাই করবে, এ কাজে তাদের অতিত অভিজ্ঞতা ও শিল্প চালানোর মত উদ্যোক্তা আছে কিনা।
[৮] এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমেরিকা জাপানের সঙ্গে আতাত করে বিশ্ব রাজনীতিতে চীনকে বিপাকে ফেলতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়। যেন বিনোয়গকারীরা সরে আসেন। রাজনীতি দিয়ে অর্থনীতির হিসেব করলে সাফল্য পাওয়া যাবে না। অর্থনীতি চলবে নিজস্ব হিসেবে। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির টানাপোড়নকে অস্বিকার করা যায় না।
[৯] চীনকে দুর্বল করতে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা পেলে, বর্তমান যে সম্পর্ক আছে তার ভবিষ্যত নিয়েও সরকারকে চিন্তা করতে হবে। চীনের সঙ্গে কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের সম্পর্ক খুবই ভাল। ফলে তারা এমন কিছু করবে না যাতে তাদের বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :