মঞ্জুরে খোদা টরিক
[১] সব কিছুর মূলে দুর্নীতি ও আইনের শাসনে অভাব। আইনের শাসন থাকলে দুই-চারটা রশিতে ঝুলালে এই বদমাইশরা তরুণদের জীবন নিয়ে এমন বাণিজ্য করতে পারতো না। মানব পাচারের ঘটনা নতুন না, অনেক শিউরে ওঠা ঘটনা আমরা জানি। তারপরও থামছে না পাচার। থামছে না মৃত্যু। [২] আমাদের দেশের মানুষগুলা কি সচেতন হবে না? বিদেশে গেলেই কি সুখ? সেখানে সুখ-শান্তি আছে কিন্তু তা সবার জন্য না। আপনি অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে যাবেন। যে কাজ করবেন তা অনেক পরিশ্রমের, কষ্টের। নিজের বিনিয়োগ, খরচ, দেশে পাঠানোর টাকা তুলতে আপনার সময় ও শরীর দুইই শেষ হয়ে যাবে। বিদেশে জীবনকে উপভোগ করতেও অনেক টাকা ও সময়ের দরকার। ছোট একটা ঘরে গাদাগাদি করে থাকা, রান্না করে খাওয়া, অতো আনন্দের না। বিদেশের চাকচিক্য, বিদেশে থাকি এই ভাবনা মারাত্মক বিপজ্জনক।
[৩] কোনোভাবে কোনো দেশে ঢুকতে পারলেই, সেখানে থেকে যাবেন, আর বেরুতে হবে না, এমন ধারণা ভুল। দুনিয়ায় এখন আর সেই সময় নাই। সবকিছুর পরিবর্তন হয়েছে। তার জন্য আমরাই দায়ী। আমরাই সুযোগের অপব্যবহার করে সে দরজা বন্ধ করেছি। এখন স্বপ্ন মিলে যাবার সহজ পথ নাই। এমন স্বপ্নে জীবন হারাবেন। আগে কে কীভাবে কোনো দেশে ঢুকে টিকে গেছে, এখন সে কথা ভুলে যান। তাদের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না। তাদের কথায় বিপদ পড়বেন না। [৪] যে সব ভাইবোনেরা বিদেশে যাবার কথা ভাবছেন। তাদের অনুরোধ করবো, বিদেশে যাওয়ার আগে হাজারবার ভাববেন। বিশ্বাসযোগ্য মানুষ ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেন। ইন্টারনেটের যুগে, হাতেই মোবাইলেই সব তথ্য পেয়ে যাবেন। একটু টেপাটেপি করে দেখেন কোথায়, কী অবস্থা? অভিবাসীর আইন জানতে পারবেন। ভাষার সমস্যা থাকলে অন্যদের সাহায্য নিন। নিজেরাও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অন্যদের থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। গোপনে দালাল-এজেন্সির তালে পড়ে নিজে-পরিবারকে সাগরে ফেলবেন না।
[৫] ফেসবুকের পরিচিত-অপরিচিত বন্ধুরা যারা বিদেশ যেতে চান তাদের বলছি, ভুল পথে পা বাড়াবেন না। এ বিষয়ে যদি আপনাদের কোনো পরামর্শ লাগে স্বেচ্ছায় দিতে আগ্রহী। সর্বত্রই এখন অনেক শিক্ষিত সংবেদনশীল মানুষে আছেন, যারা বিশ্ব শ্রমবাজার ও অভিবাসির খবর রাখেন, তাদের সাথে আলাপ করেন, অনেক ভালো পরামর্শ পাবেন। [৬] মার্কিনে একজন নাগরিক হত্যায় সারাদেশে আগুন জ্বলছে। করোনা তাদের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, জমায়েতে বাধা হয়নি, পথে নেমে এসেছে মানুষ। একজনের হত্যার প্রতিবাদে ৭ জন জীবন দিয়েছেন। লিবিয়ায় আমাদের ২৬ জন গুলিতে মরলো, ২৬ জন মানুষও রাস্তায় নামেনি! যে দেশে প্রতিদিনিই যে দেশে ২-৪ ডজন মানুষ মরে, সেখানে আর প্রতিবাদ কী হবে? হিসাব পরিষ্কার, লোক কমাতে হবে, তা যেভাবে কমে কমুক। দাও চাকার নিচে কিছু, পানিতে কিছু, বনজঙ্গলে কিছু, মাফিয়ার হাতে কিছু, বাদশাহী চাবুকে কিছু, আর করোনায় তো পাইকারি যাবে!
[৭] করোনায় বয়স্ক মানুষ মরায় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো খুব পুলকিত। হিসাব পরিষ্কার বয়স্ক ভাতা, চিকিৎসা খরচ কিছু টাকা বাঁচবে সে টাকা দিয়া রাস্তা বানাবে, বিল্ডিং বানাবে দেশের উন্নয়ন হবে। বুঝতে পারছেন নিউ লিবারালিজমের বিউটি? অসুখে মরায় বিষয়টিকে খুব নিরীহ মনে করছেন, অপেক্ষা করেন পরে প্রয়োজনে ওলড হোমে ছাড়পোকা জ্ঞানে অন্য কৌশলে ঝাঁকে ঝাঁকে পিসবে। এর নাম পুঁজিবাদ। সে চেনে বাজার ও মুনাফা, মানবতা না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :