শামীম আহমেদ
পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এনবিসির এক সাংবাদিক সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ কর্তৃক এক কালো বর্ণের ব্যক্তিকে হত্যার ফলশ্রুতিতে বর্তমান উদ্ভুত অস্থিরতা বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, যে ট্রুডো সাধারণ ট্রাম্পের কোনো কার্যকলাপ নিয়ে মন্তব্য করেন না, কিন্তু ট্রাম্প যে তার দেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে সেনাবাহিনী নিয়োগ করবে সেই বিষয়ে ট্রুডো কী ভাবছেন? সাথে সাথে এও বলেন ট্রুডো যদি এর উত্তর না দিতে চান, তাহলে তিনি আসলে কী ধরনের মেসেজ পাঠাচ্ছেন মানুষের কাছে?
এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষীতে জাস্টিন ট্রুডো উত্তর দেবার আগে প্রায় ২১ সেকেন্ড চুপ থাকেন। এই সময়ে তিনি কয়েকবার উত্তর দিতে গিয়েও দেননি, এবং পরবর্তী সময়ে তার স্বভাবসুলভ ডিপ্লোমেটিক উত্তর দেন। পৃথিবীতে যেকোনো রাজনৈতিক নেতার পতনে যে একটি ফ্যাক্টর সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে সেটি হচ্ছে সেনাবাহিনীর উপর তার নির্ভরতা। সেনাবাহিনী যখনই কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়, তখনই সেই দেশের পতন কিংবা অবনমন নিশ্চিত হয়ে যায়। সারা বিশ্বেই সেনাবাহিনীর জন্ম বহিঃশক্তি মোকাবেলায় আর পুলিশের জন্ম অভ্যন্তরীণ শান্তিরক্ষায়। যে নেতা এটি মেনে চলেন, তিনি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকেন। খুব ভালো উদাহরণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যাই হোক, আজ ওই সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ট্রডো যে ২১ সেকেন্ড চুপ করে ছিলেন, এটি মানব সভ্যতার রাজনৈতিক ইতিহাসে একটা গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি। একজন রাজনৈতিক নেতার কথা বলার চাইতে না বলাও যে কখনো কখনো বেশি অর্থপূর্ণ, এই নীরবতা তার ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বেঁচে থাকবে এবং পৃথিবীর নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পলিটিক্যাল সায়েন্সে এই ভিডিও দেখানো হবে, এই বিষয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হতে থাকবে ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে।
করোনায় অন্যতম আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে কানাডা শীর্ষেই আছে। কিন্তু শুধু রাজনৈতিক শীর্ষ নেতৃত্বের বিচক্ষণতা ও আন্তরিকতা কীভাবে প্রস্তুতির ব্যর্থতাকেও তাদের জনগণের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার পরিস্থিতি তৈরি করে, তার একটি বড় উদাহরণ জাস্টিন ট্রুডো। বাংলাদেশে যারা রাজনৈতিক নেতৃত্বে আসতে চায়, তাদের ট্রুডোর নানা পরিস্থিতিতে দেওয়া ১০০টা বক্তৃতার উপর একটা সংক্ষিপ্ত কোর্সের আয়োজন করতে পারে কোন একটি সংস্থা। সবার লাভ হবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :