মুশফিক ওয়াদুদ
বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের আবেগী মুসলমানরা ভারতকে নিয়ে যতোই হাসাহাসি আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করুক না কেন, ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কৌশলগতভাবে সফল হয়েছে দেশটি। আর এই সফলতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। এক দিকে যেমন সিকিম দখল, পাকিস্তান ভাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে স্বাধীনতা আন্দোলনকে জোড়দার করা, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতায় সংশ্লিষ্টতা (অভিযোগ), অন্য দিকে নিজের দেশে কাশ্মীরে আর আসামে স্বাধীনতা এবং পাঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলন কঠোরভাবে দমন সবটাই আসলে সফলতার গল্প।
তবে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভারতের একমাত্র বড় ব্যর্থতা হলো ১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়। ‘র এর কাওবয়েরা’ বইতে বি রমন লিখেছেন ৬২ সালে ভারতের মূলত গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল। মায়ানমার অংশ থেকে চীন খুব দ্রুত সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে আতর্কিত আক্রমণ করে। এই ব্যর্থতার কারণেই ‘র’ গঠণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
৬২ সালের চীনের সাথে পরাজয় ভারতের মিলিটারী এবং পলিসি মেকারদের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদী একটি ভয় তৈরি করেছে। ভারতের একটি বড় দুর্বল জায়গা এই যুদ্ধ। আমার এটা মনে হয় যে চীন ভারতের এই মনস্ততাত্ত্বিক দুর্বলতাটি খুবই ভালোভাবে বোঝে। যখনই বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান, শ্রীলংকা কিংবা অন্য কোনো ইস্যুতে ভারতকে ভয় দেখিয়ে সমঝোতায় নিয়ে আসার দরকার হয়, তখনই সৈন্য সমাবেশ করে ভয় তৈরি করে এবং আমার মনে হয় যে এতে কাজও হয়। ট্রাম্পের চীনবিরোধী পলিসি সফল করতে হলে অবশ্যই ভারতের সহযোগিতা দরকার। ভারত যাতে সে পথে না হাঁটে, সেজন্য লাদাখে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলো চীন এবং সম্ভবত কাজও হবে। যুদ্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :