শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০৪ জুন, ২০২০, ০৬:২৫ সকাল
আপডেট : ০৪ জুন, ২০২০, ০৬:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ১০০ বছর আগের মহামারি যেভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছিল

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] সারাবিশ্বকেই বর্তমানে অচল করে দিয়েছে এক ভাইরাস। যা গেল বছর ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম দেখা দেয়। মাত্র কয়েকদিনেই তা মাহামারি আকার ধারণ করে। প্রতি মুহূর্তেই বাড়তে থাকে আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা।বন্য বাদুড় থেকে নভেল করোনাভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়ায়।

[৩] প্রতি শতাব্দীতেই পৃথিবী মুখোমুখি হয়েছে কোনো না কোনো মহামারিতে। সেসব কাটিয়ে শোক নিয়েই আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পুরনোকে পেছনে ফেলে নতুন করে সেজে উঠেছে। এই সব মহামারির মধ্যে কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। আবার অনেকগুলো পুরোপুরিই ভিন্ন।

[৪] বর্তমানের মহামারি এবং ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু’র মধ্যে হয়ত তেমন কোনো মিল নেই! তবে সেসময় বিভিন্ন দেশের সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল তার সঙ্গে বর্তমানে নেয়া পদক্ষেপগুলোর অনেকটা মিল রয়েছে। স্প্যানিশ ফ্লুতে সারা বিশ্বে অন্তত পাঁচ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল। করোনাভাইরাসে বয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকলেও স্প্যানিশ ফ্লুতে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল।

[৫] বেশিরভাগ ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব সাধারণত খুব অল্প বয়স্ক এবং বৃদ্ধদের উপরে পড়ে। যারা এর মাঝামাঝি বয়সে থাকে তাদের ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার হার বেশি। তবে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারিতে মৃত্যুর হার তরুণ-যুবকদের মধ্যেই বেশি ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা ঠিক করতে স্প্যানিশ ফ্লু সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড। গবেষণায় মূল যে বিষয়টি উঠে আসে, তা হলো ১৯১৮ সালের শরৎকালে রোগটি দ্বিতীয় ধাপে ছড়িয়ে পড়ে।

[৬] প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধ দফতরে কাজ করা নারীরা রাতে এবং দিনে ১৫ মিনিট করে বাইরে হাঁটতে যেতো। এটি ফ্লুকে দূরে রাখতে পারে বলে মনে করা হতো। ১৯১৮ সালের মে মাসে প্রথম স্প্যানিশ ফ্লু’র রোগী শনাক্ত হয় যুক্তরাজ্যে। সেখানে তখনো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে। তখন যুদ্ধ না রোগকে, কোনটাকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে! এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যায় অন্যান্য অনেক দেশের সরকারের মতো যুক্তরাজ্যের সরকারও। ধারণা করা হয়, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ সংক্রান্ত কার্যক্রমকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তারা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নিকটতম মহল এবং বিশাল সেনা আন্দোলন মহামারিটি ত্বরান্বিত করেছিল। সম্ভবত উভয়ই সংক্রমণ বৃদ্ধি করেছিল।

[৭] যুদ্ধের ফলে ভাইরাসের প্রাণঘাতীতাও সম্ভবত বেড়ে গিয়েছিল। অনেকে মনে করেন, সৈন্যদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি যুদ্ধ ও রাসায়নিক আক্রমণগুলোর চাপ তাদের সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তুলেছিল। এই ফ্লু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ ছিল ভ্রমণ বৃদ্ধি।
আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থায় সৈন্য, নাবিক এবং বেসামরিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই রোগ আরো সহজে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯১৮ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সাসের হাস্কেল কাউন্টি এই রোগটি প্রথম লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

[৮] ১৯১৮ সালের আগস্টে ফ্রান্সের ব্রেস্টসহ একযোগে আরো ছড়িয়ে পরে ফ্রিটাউন, সিয়েরা লিওনে। স্পেনীয় ফ্লু আয়ারল্যান্ডে ফিরে যাওয়া আইরিশ সৈন্যদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনী এটিকে স্প্যানিশ ফ্লু বলে আখ্যায়িত করেছিল। মূলত ১৯১৮ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স থেকে স্পেনে চলে আসার পর মহামারিটি ব্যাপকভাবে প্রেসের নজরে আসে। স্পেন যুদ্ধে জড়িত ছিল না এবং যুদ্ধকালীন সেন্সরশিপ চাপায়নি। তারপরও তারা কীভাবে আক্রান্ত হলো তা খুঁজতে গিয়েই প্রেসের নজর পড়ে। এরপর এটি নিয়ে শুরু হয় সতর্ক বার্তা ও প্রচারণা।

[৯] ১৯১৯ সালে রয়্যাল সোসাইটি অব মেডিসিনের জন্য স্যার আর্থার নিউজহোমের করা এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, গণপরিবহণ, সৈনিক বহণকারী পরিবহণ এবং যুদ্ধ উপকরণ তৈরির কারখানার মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। এর ঠিক এক বছর আগে ১৯১৮ সালের জুলাইয়ে, স্যার আর্থার নিউজহোম এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। যেখানে স্প্যানিশ ফ্লু থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে ঘরে থাকতে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দেয়ার কথা ছিল।

[১০] তবে সেসময় ব্রিটিশ সরকার সেই গণবিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেনি। স্যার আর্থার মনে করতেন, নিয়ম মেনে চললে সে সময় বহু প্রাণ বাঁচানো যেতো। করোনাভাইরাসের মতোই ১৯১৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জার কোনো চিকিৎসা ছিল না। এমনকি সেসময় নিউমোনিয়ার মতো রোগের চিকিৎসায়ও কোনো অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার হয়নি। তখন আক্রান্ত রোগীদের দিয়ে দ্রুত পরিপূর্ণ হয়ে যেত হাসপাতালগুলো।

[১১] এখনকার মতো সেই সময়ও সংক্রমণ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো ধরণের লকডাউন জারি করা হয়নি। তবে অনেক থিয়েটার, নাচের হল, সিনেমা হল এবং গির্জা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ডের ফুটবল লিগ এবং এফএ কাপ যুদ্ধের জন্য আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তবে মহামারির কোনো প্রভাব খেলার ওপর পড়েনি। স্টেডিয়ামে দর্শক কম রাখার বা খেলা বাতিল করার কোনো ধরণের প্রচেষ্টাই করা হয়নি সে সময়।

[১২] কিছু শহরে জীবাণুনাশক ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং কিছু লোক জীবাণু বিরোধী মাস্ক পড়তো। তখনকার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বার্তাগুলো ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। আর এখনকার মতো তখনো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি ছিল। যদিও এখনকার মতো তখন এত আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। তারপরও ভুয়া সংবাদ ছড়াতে সময় লাগতো না। কিছু কিছু ফ্যাক্টরিতে ধূমপান না করার নিয়ম শিথিল করা হয়েছিল। কারণ এরকম একটা বিশ্বাস ছিল যে ধূমপান সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

[১৩] তখন ডেইলি মিরর পত্রিকার একজন কার্টুনিস্টের আঁকা ব্যঙ্গচিত্র ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করতে প্রজ্ঞাপণ ও প্রচার করা হয়েছিল। সেখানে দেখানো হয়েছিল কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। সরকারি নির্দেশনা নিয়েই তৈরি করা হয়েছিল এই ব্যঙ্গচিত্র। ১৯১৮ সালের নভেম্বরে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড পত্রিকা থেকে পাঠকদের পরামর্শ দেয়া হয়।

[১৪] সেখানে জনসাধারণকে পরামর্শ দেয়া হয়, প্রতিদিন রাতে ও সকালে নাকের ভেতরে সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সকালে ও রাতে জোর করে হাঁচি দিন, এরপর লম্বা নিঃশ্বাস নিন। মাফলার পরবেন না, প্রতিদিন দ্রুত বেগে হাঁটুন এবং কাজ থেকে হেঁটে ঘরে ফিরুন। ১৯১৮ সালের মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি, এমন কোনো দেশ নেই। তবে মহামারির প্রাদুর্ভাব ও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বিভিন্ন দেশের সরকারের নেয়া পদক্ষেপের মধ্যে বিস্তর ফারাক ছিল।

[১৫] যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো রাজ্য তাদের নাগরিকদের কোয়ারেন্টিন করার নির্দেশ দেয়। কোনো কোনো রাজ্য মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যে কোনো এলাকার তুলনায় নিউইয়র্কের প্রস্তুতি বেশি ছিল। আগের ২০ বছর তারা যক্ষ্মার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চালিয়ে আসছিল। সেই অভিজ্ঞতা তারা মহামারি পরিস্থিতিতে কাজে লাগায়। ফলস্বরূপ, নিউইয়র্কে মৃত্যুর হার ছিল সবচেয়ে কম।

[১৬] স্যান ফ্রান্সিসকোতে উন্মুক্ত স্থানে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরেই জনসমাগম বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে ধর্মীয় উপাসনার জায়গাগুলোতে মানুষের জমায়েত বন্ধ করা যায়নি। সিনেমা হল এবং মনোরঞ্জনের অন্যান্য জায়গাগুলো উন্মুক্ত রাখার জন্য শহরের স্বাস্থ্য কমিশনারের ওপর চাপ ছিল ব্যবসায়ী মহল থেকে।

[১৭] মহামারি শেষ হতেই যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ২৮ হাজারে। জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এই ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। রয়েছে অনেকের অনেক মত। ধারণা করা হয় সদ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়া দেশগুলো শত্রুতার বশে একে অন্যের দেশে এই ফ্লু ছড়িয়েছে।

[১৮] এই ভাইরাসের অনেক তথ্যই অনেক দেশ লুকিয়েছিল। ফলে উৎপত্তি স্থল ও মৃতের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি।কেউ কেউ মনে করেন এর উৎপত্তি হয়েছিল ফ্রান্সের এটেপলসে যুক্তরাজ্যের প্রধান সেনা মঞ্চায়ন ও হাসপাতালের শিবির থেকে। গবেষকরা তাত্ত্বিকভাবে একেই স্প্যানিশ ফ্লুর কেন্দ্রস্থল মনে করেন। আবার অনেক বিবৃতিতে এই মহামারির উৎস হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ আছে।

[১৯] ঐতিহাসিক আলফ্রেড ডব্লু ক্রসবি ২০০৩ সালে বলেছিলেন, এই ফ্লু’র উদ্ভব ঘটে ক্যান্সাসে। জনপ্রিয় লেখক জন এম ব্যারি তার ২০০৪ সালের এক নিবন্ধে ক্যান্সাসের হ্যাসকল কাউন্টিতে একটি প্রাদুর্ভাবের বর্ণনা করেছিলেন। এই ভাইরাসের মহামারিতে বিশ্বের কয়েকটি দেশ আপাতদৃষ্টিতে কম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো চীন।

[২০] একাধিক গবেষণায় নথিভুক্ত করা হয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় চীনের ফ্লুতে অপেক্ষাকৃত কম লোক মারা গিয়েছিল। এ থেকে অনুমান করা হয়েছিল যে ১৯১৮ ফ্লু মহামারীর উৎপত্তি হয়েছিল চীনে। তবে সেখানে এই ফ্লুতে নিম্ন মৃত্যু হার ছিল। চীনা জনগণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো বলেই নাকি এমনটি ঘটেছিল বলে অনেকের মত। তবে কেএফ চেং এবং পিসি লেইং ২০০৬ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উল্লেখ করেন, এমনটি সম্ভবত সম্ভব হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ও চিকিৎসার কারণে।

[২১] বিভিন্নভাবে এই মহামারিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল। আবার কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য তার মাশুলও দিতে হয়েছে প্রাণ দিয়ে। রেকর্ড অনুযায়ী, এই ভাইরাসে এক দশমিক সাত থেকে পাঁচ কোটি মানুষ মারা যায়। তবে ধারণা করা হয়, এর সংখ্যা ছিল ১০ কোটি। মহামারি শেষ হওয়ার পর আরো কয়েক বছর চলে ভাইরাস ধ্বংসের প্রয়াস। অবশেষে পৃথিবী এই ফ্লুর মহামারি থেকে মুক্তি পায়। টেকনোলজি ও লাইফস্টাইল, প্রিয়ডটকম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়