অপূর্ব চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি : [২] করোনার ভয়াবহ প্রকোপে অসহায়ত্বের শিকার হলবিহীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও পিছু ছাড়েনি মেসভাড়া সংক্রান্ত জটিলতা৷ টিউশনিসহ অন্যান্য আয়ের পথ বন্ধ থাকায় মেসভাড়া জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অপরপ্রান্ত থেকে বাড়ির মালিকরা ফোন দিয়ে ভাড়ার জন্য হুমকি ধামকিও দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের।
[৩] বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নিকটবর্তী থানার সহযোগিতা নেওয়ার কথা বলা হলেও, থানা থেকে আশানুরূপ সাড়া বা সাহায্য পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
[৪] পুরান ঢাকার একটি মেসে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমরা মেস ছেড়েছি মার্চের ২০ তারিখে।কিন্তু বাড়ির মালিক মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসের ভাড়া চাচ্ছেন। শুরুর দিকে আমরা বাড়িওয়ালাকে বলেছিলাম, এই পরিস্থিতি তে এখন ভাড়া পরিশোধ করা সম্ভব না। তিনিও আমাদের সাথে একমত হয়ে বলেছিলেন এখন ভাড়া পরিশোধ করতে হবে না।পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে একটা সিদ্ধান্তে আসবে।কিন্তু গত ৩/৪ দিন ধরে বারবার ফোন দিচ্ছে এবং ভাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।আমরা ৫০% ভাড়া এখন পরিশোধ করতে চেয়েছি বাকি ৫০% পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে।কিন্তু তিনি এখনই তিন মাসের সম্পূর্ণ ভাড়া চাচ্ছেন।
[৫] পুরান ঢাকার কলতা বাজারের একটি মেসে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী টুম্পা দে বলেন,মার্চ মাসের ১৭ তারিখ ঢাকা থেকে বাড়ি এসেছি।কিন্তু মেসভাড়ার বোঝা পিছু ছাড়েনি।ঈদের সময় মালিক ফোন দিয়ে দুই মাসের বাড়ি ভাড়া চেয়েছে। বাড়ি থাকা স্বত্বেও এক প্রকার বাধ্য হয়েই দুই মাসের মেসভাড়া দিতে হয়েছে। এটা যেন নতুন একধরনের ভোগান্তি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত বিলম্ব না করে দ্রুত এই জটিলতা থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
[৬] কয়েকজন বাড়িওয়ালা জানান, বাসা ভাড়ার টাকা দিয়ে তাদের পরিবার চলে। ভাড়ার টাকা না হলে তাদের পরিবার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে বেশিরভাগ বাড়িওয়ালা, ভাড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ দেওয়ার কোনো কারণ জানাতে পারেননি। উল্টো শিক্ষার্থীদের বাসা ছাড়া করার হুমকিও দেন।
[৭] জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী বেশি। তাদের হল সুবিধা না থাকায় সমস্যাও বেশি। এজন্য স্থানীয়ভাবে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে ক্যাম্পাস খুললেই এই ব্যাপারে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিবো। বেশি পরিমাণ শিক্ষার্থীর সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয়ভাবেই করতে হবে। এর মধ্যেও যদি কোনো শিক্ষার্থী বাড়ি ভাড়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়, আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নিবো। পার্শ্ববর্তী থানায় জানালে তারাও সহযোগিতা করবে।
[৮] উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাস খুললেই আমরা বাসা ভাড়া সমস্যা নিয়ে কাজ করবো। এখন কোনো সমস্যা হলে প্রক্টরকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। আমরা এখন শিক্ষার্থীদের খাবার ও চিকিৎসা সংকট নিয়ে কাজ করছি।
আপনার মতামত লিখুন :