সানী সানোয়ার : ৮মার্চ দেশে ৩ জন করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে, এ সংবাদ শুনে দেশেব্যাপী যে আঙ্ক লক্ষ্য করা গেছিল, ২৯ মে আড়াই হাজার পজেটিভ শুনেও তার এক-পঞ্চমাংশ আতঙ্কও লক্ষ্য করা যায়নি। ১৮ মার্চ দেশে ১ জন করোনা রোগী মারা গেছে, এ খবর শুনে সেদিন ঢাকা শহরের রাস্তায় যতো সংখ্যক মানুষ এবং গাড়ি দেখা গিয়েছিল ২৯ মে পর্যন্ত মোট ৫৮২ মৃত্যুর খবর শুনে তার থেকেও এক লাখ গুণ মানুষ এবং কয়েক হাজার গুণ গাড়ি রাস্তায় দেখা গিয়েছে। অথচ ১৮ মার্চ কোনো প্রকার লকডাউন ছিল না, রাস্তায় আটকানোর জন্য পুলিশের তেমন কোনো বাঁধাও ছিল না। এ দৃশ্য শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো পৃথিবী জুড়েই। মানুষ যখন জেনে গেছে যে, এ রোগের ভ্যাক্সিন কিংবা ঔষধ কে নোটাই খুব কাছাকাছি সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না তখন তারা দীর্ঘ সময় আর লকডাউন থাকতে নারাজ। তারা ঢাল-তলোয়ার ছাড়াই করোনাকে মোকাবেলা করতে চায়। তাই তো অনেক দেশ প্রতিদিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু গুণলেও সরকারি ভর্তুকি দিয়ে মানুষকে পর্যটনে যেতে উৎসাহিত করছে। কী বিচিত্র এই জীবন! কতোটা অদ্ভূত মানুষের আচরণ!
খুব সহজেই মানুষ আবার সব ভুলেও যায়। সব ঠিকও হয়ে যায়। তখন একজন ফুটবল প্লেয়ায়ের মূল্য আবারো হাজারটা ভ্যাক্সিন বিজ্ঞানীর বেতনকে অতিক্রম করতে শুরু করে। বিশ্বের কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচানো বিজ্ঞানী-চিকিৎসক-পুলিশদের ছাপিয়ে আবার এন্টারটেইনমেন্ট দুনিয়া সামনের কাতারে চলে আসে। এটা অনেকটা মা আর গার্লফ্রেন্ডের মধ্যকার বৈপরীত্যের মতো। চোখের চাকচিক্য বেশির ভাগ সময় হৃদয়ের বীট শুনতে দেয় না।
পৃথিবীটা আসলেই একটা ‘বোকা মানুষের বাক্স’! তা না হলে জীবন রক্ষার জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা বা জটিল রোগের ঔষধ আবিষ্কারের জন্য বিনিয়োগ না করে মশলা ফ্যাক্টরি বা জুয়া খেলায় এত বিনিয়োগ কেন করবে? এরকম হচ্ছে বলেই আবার ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকের কপালে অসময়ে জুটছে না সামান্যতম একটি ভেন্টিলেটর ম্যাশিন। ফলে, তারা মারা যাচ্ছে বুকফাঁটা আর্তনাদ, বিভীষিকাময় যন্ত্রণা আর সীমাহীন আফসোস নিয়ে। আহা, বোকা বাক্সের বোকা মানুষ। তোর সংগৃহীত জ্ঞান সামান্য একটি আরএনএ ভাইরাসের অভিযোজন জ্ঞানের থেকেও কত তুচ্ছ! হাহাহাহহাহ.... তাই নিয়েই কতো অহংকার।
ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :