ইয়াসিন আরাফাত : [২] লিন্ডা টিরাদো নামে বছর ৩৭-এর ওই মহিলা সাংবাদিকের দাবি, বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ছুড়লে, রাবার বুলেট তার বাম চোখে এসে লাগে। চিরদিনের মতোই তার ওই চোখের দৃষ্টি চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন লিন্ডা। নিউইয়র্ক টাইম, ডেইলি মেইল, ইউএসএ টুডে
[৩] জানা যায়, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার বিক্ষোভ কভার করতে শুক্রবার ন্যাশভিল থেকে মিনিয়াপলিসে যান ওই চিত্র সাংবাদিক। বিক্ষোভের নানা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করার সময়, আচমকা একটি রাবার বুলেট ছিটকে এসে তার চোখে লাগে।
[৪] রোববার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজের ছবি শেয়ার করে দুই সন্তানের মা লিন্ডার জানান, সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল, আমার মুখ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে।' অস্ত্রোপচার করে তার চোখ থেকে গুলি বের করা হলেও, তিনি যে ওই চোখে ভবিষ্যতে আর দেখতে পাবেন না, ডাক্তাররা তা নিশ্চিত করেছেন। অস্ত্রোপচারের পর কমপক্ষে দু-সপ্তাহ তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।
[৫] আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের হত্যায় গত সপ্তাহ থেকে উত্তাল আমেরিকা। মিনিয়াপলিস থেকে নিউ ইয়র্ক হয় লস অ্যাঞ্জেলেস-- বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। চার রাত ধরে প্রবল উত্তজেনার পর, মিনোসোটা ন্যাশনাল গার্ড নামায় ট্রাম্প প্রশাসন। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যে অস্থিরতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলায় উত্তজেনাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে আরও ন্যাশনাল গার্ড নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। কয়েকটি শহরে ইতিমধ্যে কারফিউও জারি হয়েছে।
[৬] রাবার বুলেটে লিন্ডার চোখ হারানো কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুক্রবার পুলিশের রোষানলে পড়তে হয়েছে আরও অনেক সাংবাদিককে। স্থানীয় টিভি নিউজ রিপোর্টারের চোখে, 'গোলমরিচের বল' গুলি করেছিল কেন্টাকি পুলিশও। বিক্ষোভের লাইভ কভার করার সময় আর এক নামী নিউজ চ্যানেলের রিপোর্টারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
[৭] গত ২৫ মে, সোমবার, আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডকে নিরস্ত্র অবস্থায় খুনের অভিযোগ ওঠে মার্কিন পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। তা থেকেই আন্দোলনের সূত্রপাত। খুনের দু-দিন পর মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনোপোলিস শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ২৭ মে বিক্ষোভকারীরা থানায় আগুন দেয়। এসময় পুলিশের গাড়িও পুরানো হয়।
[৮] ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা যায়, ৪৬ বছর বয়সি জর্জ ফ্লয়েডকে অন্যায় ভাবে পুলিশ হত্যা করে। হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরা হয়েছিল। নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য বারবার আর্তনাদ করতে থাকেন ফ্লয়েড। বাঁচার আকুতি জানান। কিন্তু, পুলিশ ছিল নির্বিকার। সেই অত্যাচারে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান ওই কৃষাঙ্গ।
[৯] জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকণ্ডে ইতিমধ্যে মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগের চার অফিসারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার পরেও কিন্তু বিক্ষোভ সামাল দেয়া যায়নি। উপরন্তু, আমেরিকার ছোট-বড় শহরগুলিতে নতুন করে দানা বাঁধছে বিক্ষোভ।
আপনার মতামত লিখুন :