শাহীন খন্দকার : [২] আগামী ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে রেল চলাচলও শুরু হতে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করলেন এবিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথম ধাপে ৮টি ট্রেন চালাবে রেলওয়ে। প্রতিটি ট্রেনে পাচঁশত সিট থাকলেও জনস্বার্থে কোভিড-১৯ সংক্রমনরোধে ২৫০ জন যাত্রী নিয়ে কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বলে জানালেন। মুঠোফোনে মন্ত্রী প্রতিবেদককে জানালেন আগামীকাল শনিবার তিনি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করবেন।
[৩] সেই সাথে রেলওয়ের সকল বিভাগের কর্মকর্তা কর্মাচারীদেরে সাথেও কথা বলবেন। ইতিমধ্যে সারাদেশের সাথে রেলওয়ের যাতায়াতের জন্য যেসকল ট্রেন প্রস্তুত করা হয়েছে তারও খোজ খবর নিবেন এবং প্রেসব্রিফিংয়ে অংশ নিবেন বলে নিশ্চিত করেন। ট্রেন চালুর বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারেই আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
[৪] তিনি বলেন, আগে যে রুটে পাঁচটি আন্তঃনগর ট্রেন চলতো, সেই রুটে এখন দুটি ট্রেন চলবে। সেক্ষেত্রে একটা সিট বাদ দিয়ে টিকিট বিক্রি করা হবে। এভাবে আমরা আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত ট্রেন চালিয়ে দেখবো। তারপর সরকার থেকে নতুন কোনও নির্দেশনা এলে আমরা আবার বিষয়টি বিবেচনা করবো।’উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
[৫] এদিকে আজ শুক্রবার (২৯ মে) সরেজমিনে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন কর্মীর ব্যাস্ততা। তারা কাউন্টারের সামনে সুতা বসিয়ে নির্ধারিত দূরত্ব রেখে লাল রঙ দিয়ে বৃত্তচিহ্ন করে দিচ্ছে। এবিষয়ে রেলওয়ের পরিচালক ( ট্রাফিক ) মাহবুবুর রহমান জানালেন, জনস্বার্থে কোভিড-১৯ সংক্রমনের বৈশ্বিক মহামারির কথা মাথায় রেখেই দায়িত্বরত কর্মীরা প্রতিটি কাউন্টারের সামনে ৮টি করে চিহ্ন দিচ্ছে।
[৬] আর স্টেশনের কাউন্টারগুলোর মধ্যে পাশাপাশি একটি কাউন্টার চালু রেখে অপরটি বন্ধ রাখা হবে। এই স্টেশনের ৮টি কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। টিকিট নিতে আসা যাত্রীরা যাতে সমাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।তিনি জানালেন,যে রোববার থেকে দুটি গ্রুপে ভাগ করে ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে প্রথমে ‘ক’ গ্রুপে রাখা ট্রেনগুলো ৩১ মে থেকে পরিচালনা করা হবে। [৭] এই ট্রেনগুলো হচ্ছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, ঢাকা-সিলেট রুটে কালনী এক্সপ্রেস, ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন রুটে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, ঢাকা-রাজশাহী রুটে বনলতা এক্সপ্রেস, ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন/পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-খুলনা রুটে চিত্রা এক্সপ্রেস। আর ‘খ’ গ্রুপে রাখা ট্রেনগুলো ৩ জুন থেকে পরিচালনা করতে সুপারিশ করা হয়েছে। এই ট্রেনগুলো হচ্ছে, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নীলসাগর এক্সপ্রেস, খুলনা-চিলাহাটি রুটে রূপসা এক্সপ্রেস, খুলনা রাজশাহী রুটে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, রাজশাহী-গোয়ালন্দ ঘাট রুটে মধুমতি এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস।
[৮] রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান গত ২৮ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ৮ জন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞকে দায়িত্ব দেন সরকার। তাদের দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা ও সেবা বৃদ্ধি এবং কার্যকর করার জন্য পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
[১০] করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করতেও বলা হয় তাদের। এরই মধ্যে কমিটি বেশ কিছু কারিগরি নির্দেশনা তৈরি করেছে।কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী রেলপথে যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ম মেনেই ট্রেনে ভ্রমণ করতে হবে যাত্রীদের।
আপনার মতামত লিখুন :