শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২০, ০৫:১৬ সকাল
আপডেট : ২৯ মে, ২০২০, ০৫:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তদন্তে হাসপাতালের অবহেলার প্রমাণ মিলেছে, তবে মানতে নারাজ ইউনাইটেড

সুজন কৈরী : [২] করোনা ইউনিটে অবহেলার অভিযোগ নাকচ করেছে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তে গঠন হয়েছে ১২ সদস্যের কমিটি। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

[৩] অগ্নি দূর্ঘটনার ১৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনাইটেড হাসপাতালের কমিউনিকেশন এন্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক ডা. শাগুফা আনোয়ার বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরে মাস খানেক আগে করোনা রোগীদের জন্য ৫ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার করেছিলাম। পাঁচটিই আইসিউ বেড। সেই ভবনের দুর্ভাগ্যজনকভাবে সম্ভবত শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। সে সময় আবহাওয়া খারাপ ছিল। প্রচন্ড বাতাসের তীব্রতা ছিল। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। ঘটনার পরপরই আমাদের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপণ টিম ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমকে অবহিত করে। আইসোলেশন ইউনিটের পাশেই ফায়ার হাইড্রেন্ট রয়েছে। ইনফ্যাক্ট আইসোলেশন ইউনিটটি তৈরির এটা একটা বড় কারণ ছিল। দমকল বাহিনী আসার পর আমাদের ফায়ার হাইডেন্ট দিয়েই আগুন নিভিয়েছে।

[৪] তিনি বলেন, যে রোগীরা আইসোলেশ সেন্টারে ছিলেন, তারা অত্যন্ত অসুস্থ ছিলেন। করোনা সন্দেহেই তাদের সেখানে রেখেছিলাম। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাউকেই আমরা বের করতে পারিনি। তারা হাই ফ্লো অক্সিজেনের মধ্যে ছিলেন। ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিলেন। অক্সিজেন অত্যন্ত দাহ্য একটা গ্যাস। যার ফলে বাতাসের তীব্রতায় যখন আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর আমরা কিছু করার আগেই, কোনো ব্যবস্থা নেতেই ফোন করতে করতেই আগুনের লেলিহান শিখা আইসোলেশন সেন্টারটিকে গ্রাস করে নেয়। আমরা ওই ৫ জনকে বের করার আগেই তারা দুর্ভগ্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা কাউকেই জীবিত বের করে আনতে পারিনি। এরপর বিষয়টি আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনীকে জানিয়েছি। আমরা সারারাত মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে ছিলাম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মৃতদের স্বজনদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

[৫] সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাগুফা আনোয়ার বলেন, আগুনের সূত্রপাতের পর থেকে আমরা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বারিধারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনসহ সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমে ফোন দেয়া হয়েছে। রোগীরা শয্যাশায়ী থাকায় বের হতে পারেননি।

[৬] অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কিছু ফায়ার এক্সেটগুশার ছিল। যেগুলোর এপ্রিলের শেষের দিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লকডাউনের কারণে আমাদের বিভিন্ন জিনিসের ধীরে ধীরে বদল করছিলাম। নতুন জিনিস আনছিলাম। সে কারণে কিছু থেকে গিয়েছিল। আগুনের যে শিখা ছিল, সেখানে ফায়ার এক্সেটগুইশার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ছিল না। চেষ্টাটাই বৃথা। সেখানে আগুন নির্বপণের প্রধান অস্ত্রই ছিল ফায়ার হাইড্রেন্ট্রের ব্যবহার। যেটা ফায়ার ফাইটাররা করেছেন।

[৭] নেগেটিভ থাকার পরও রোগী রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনার চিকিৎসায় টেস্টের রেজাল্ট একটা মাত্র পরিমাপক। প্রধান পরিমাপক হচ্ছে রোগীর উপসর্গ কেমন। রোগীর ইনভেস্টিগেশনের উপসর্গ কেমন। যে রোগী নেগেটিভ আসে, তারপরও তার যদি উপসর্গে বুঝা যায়, বা আমাদের ক্লিনিশিয়নরা অনুমান করেন না রোগীর মধ্যে কোভিডের সকল উপসর্গ বিদ্যমান এবং এক্সরে রিপোর্টে আমরা সেরকম পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে রোগীর রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরও আমরা তাকে হাইলি সাসপেসিয়াস কোভিড হিসেবে ট্রিটমেন্ট দেই। পরে আরেকটা টেস্টের জন্য রোগীর নমুনা পাঠাই।

[৮] তিনি বলেন, পাঁচজনের প্রত্যেককেই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় ছিলেন। না থাকলে কেন ভেন্টিলেটরে রাখবো।

[৯] সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাগুফা আনোয়ার বলেন, সাময়িকভাবে আইসোলেশন ইউনিটটি করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় করেছি। সাময়িক স্ট্রাকচারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন হয়না। যা মূল ভবন তৈরির জন্য প্রয়োজন হয়। আইসোলেশন ইউনিট করতে নিয়ম মেনে যা যা করা দরকার ছিল, তা করেছি।

[১০] ১৪ বছর ধরে পরিচালিত এই হাসপাতালে সাড়ে ৪ লাখেরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। কোনো রোগীর যদি ভেন্টিলেটর না লাগে, তাহলে ওই রোগীকে কেন ভেন্টিলেটরে নেবো।

[১১] নিরপত্তার বিষয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা ঘটনার কারণ, কর্তৃপক্ষের গ্যাপ থাকাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো তদন্ত করবে। শেষ হলে বিস্তারিত পাওয়া যাবে। [১২] বর্তমানে ৮জন করোনা রোগী হাসপাতালে আছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়