সুজন কৈরী : [২] করোনা শনাক্ত রোগীর চিকিৎসায় অনেকটা দায়সারাভাবেই আলাদা আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করেছিল ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
[৩] বৃহস্পতিবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সংস্থার ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জাবাবে বলেন, যেহেতু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগী রাখার জন্য আলাদা আইসোলেশন করতে সরকারিভাবে নির্দেশনা পেয়েছে, করার জন্যই করেছে আরকি। এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। মৃত পাঁচ জন সানসেটের ঠিক নিচে ছিলেন। আর বাইরে একটা এক্সটেনশন আছে টিনশেডের। অস্থায়ীভাবে তৈরি ওই ইউনিটের পার্টিশনগুলো পার্টেক্সজাতীয়, যা অতিদাহ্য।
[৪] তিনি আরও বলেন, হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার তো কাজ করবে না। কাজ করেও নাই। আমাদের ইউনিটগুলো আসার পর দেখেছে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। অগ্নিনির্বাপণ করার পর আমরা পাঁচটি লাশ উদ্ধার করেছি।
[৫] মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা, জানতে চাইলে দেবাশীষ বর্ধন বলেন, অবশ্যই। আমরা তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবো। মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখার দায় হাসপাতালের। দেড়মাস আগেই রিফিল করা উচিত ছিল। হাসপাতালে ফায়ার হাইড্রেন্ট ছিল। কিন্তু আমরা আসার আগে কেউ কাজ করেনি। আমরা আসার পর একটা লাইন খোলা হয়।
[৬] সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নামে মাত্র ইউনিট খুলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল কিনা, জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের এই উপপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, অবকাঠামো দেখে তাই মনে হচ্ছে। এ ধরনের রোগীর ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া দরকার ছিল। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, হাসপাতালগুলো আইসোলেশন সেন্টার করলেই হবে না, ফায়ার প্রটেকটিভ মেজারটাও রাখতে হবে। সার্বক্ষণিক একটি টিম অবশ্যই রাখা উচিত ছিল।
[৭] অগ্নিকাণ্ডের সম্পর্কে তিনি বলেন, এখনই কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বলা যাচ্ছে না। আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। প্রথম দিনের কাজ শেষ হয়েছে। এদিন আমরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত ও কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। শুক্রবার বাদ দিয়ে শনিবার থেকে আবারও কাজ শুরু করবো। আমরা ঘটনাস্থলে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলবো ও মৃত রোগীদের স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলবো।
[৮] আগুন লাগার কারণ তদন্ত করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তার, বিভিন্ন ডিভাইস, এসির ভেতরে থাকা দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে কাজ করা হচ্ছে। ভেতরে এসি ছিল, অনেক ইলেকট্র্রিকাল ডিভাইস ছিল, এসিগুলো নেগেটিভ প্রেসারে ছিল। আমরা সবগুলো খতিয়ে দেখছি। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :