খালেদ সাইফুল্লাহ : ঘুম ঘুম চোখে শুয়ে ছিলাম।হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হল।তাড়াহুড়ো করে জানালা বন্ধ করছি।বাড়ির পাশেই বড় ভাইয়ের কবর।কবরটা নিয়ে চিন্তা হচ্ছিল। খোলা আকাশের নীচে তিনি শুয়ে আছেন।উপরে সামান্য বাশ আর মাটি দেওয়া।মুশলধারার বৃষ্টির পানি হয়তো মাটি চুইয়ে তার শরীরকেও সিক্ত করবে।
গতকাল রাতে কারেন্ট চলে গিয়েছিল অনেক সময়ের জন্য। আইপিএস হয়ত আর বেশী সময় ব্যাকআপ দিবেনা। রাতে গরমে আলোহীন রুমে কিভাবে থাকব এটা নিয়ে পেরেশানি করতে গিয়ে বড় ভাইয়ের রুমের কথা মনে হল।ছোট একটা রুম।এপাশ ওপাশ করার জায়গা নেই।উচ্চতা খুবই সামান্য। কোন দরজা নেই,জানালা নেই।চারপাশে মাটি,ছাদেও বাশঁ আর মাটি।নীচে বিছানা নেই। কারেন্ট নেই,আলো বাতাসের ব্যাবস্থা নেই।চারদিকে নিস্তব্ধ। এই রুমে একটা মানুষ শুয়ে আছে।একা!
এই রুমে আমারও একদিন থাকতে হবে!সবারই থাকতে হবে!
আল্লাহ যদি সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে রুমটা অবশ্য এমন থাকবে না।রুমের বাসিন্দাকে পড়ানো হবে জান্নাতের পোশাক,দেওয়া হবে জান্নাতের বিছানা, তার রুমকে প্রশস্ত করা হবে অনেকদূর,সংযোগ করা হবে জান্নাতের সাথে।এরপর রুমের বাসিন্দা দিবে একটা প্রশান্তির ঘুম।
আর আল্লাহ যদি সন্তুষ্ট না হন প্রথমদিকেই কবরের দুই পাশের মাটি এমন চাপা দিবে যে পাজরের হাড় একটা আরেকটার ভেতর চলে যাবে।
দুনিয়া খুবই অদ্ভুত একটা জায়গা।কিভাবে মৃত্যুকে ভুলিয়ে দেয় যেটা সবারই বরণ করতে হবে।সত্যি বলতে কি আপনজন কেউ মারা গেলে কিছুটা মৃত্যুকে স্মরণ হয়,অন্য সময় দুনিয়া এমন চাকচিক্য সামনে নিয়ে আসে তখন আর মৃত্যুকে দেখা যায়না।
এই দুনিয়ায় পরীক্ষার কেউ পাশ করা সম্ভব না।পরকালের একমাত্র ভরসা আল্লাহর দয়া।আল্লাহ আমাদের মা-বাবার চাইতে আমাদেরকে বেশি ভালবাসেন।সেই ভালবাসার কারণেই জান্নাতের আশা করার সাহস পায়।
আমাদের প্রিয়জন যারা কবরে চলে গেছেন, আল্লাহ সবাইকে মাফ করে জান্নাতের বাসিন্দা বানিয়ে দিন।
ফেসবুক পেজ ‘দ্য পাথ অব রাইটাসনেস’ থেকে নেয়া।
আপনার মতামত লিখুন :