শিরোনাম
◈ পঞ্চগড় এক্স‌প্রেস ট্রেনের ব‌গি চার ঘণ্টা পর উদ্ধার, ট্রেন চলাচল স্বাভা‌বিক ◈ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ◈ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার টু শব্দ করার সাহস পাচ্ছে না: বিএনপি ◈ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয় পুলিশ ও বহুজাতিক নৌবাহিনী ◈ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ডিবিতে অভিযোগ করলেন জবি ছাত্রী ◈ ঈদের পর কাওরান বাজার যাবে গাবতলীতে: মেয়র আতিক ◈ আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা কয়লায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই: এস আর শিপিং ◈ পাপেট সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত সব নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ বলবে যুক্তরাষ্ট্র: জয়  ◈ চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে তিন দিন লাগতে পারে: রেল সচিব ◈ তামিম ও রিশাদ ঝড়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২০, ০৯:৫৭ সকাল
আপডেট : ২৫ মে, ২০২০, ০৯:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বোনাস হয়নি ১২৫৮ কারখানার, এপ্রিলের বেতন বাকি ৯২০টির

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] ছয় শিল্প এলাকায় এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ হয়নি ৯২০ কারখানার। আর ঈদ উৎসবের ভাতা বাবদ বোনাস পরিশোধ হয়নি ১ হাজার ২৫৮ কারখানার।

[৩] শিল্প পুলিশ বলছে, এসব কারখানার ১০ শতাংশ সচল ছিল। বাকি কারখানাগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ। সাধারণ ছুটি শিল্প কারখানার ক্ষেত্রে শিথিল হওয়ার পরও সেগুলো চালু হয়নি।

[৪] কারখানা সচল ও বন্ধের পরিসংখ্যান বলছে, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৬৮টি কারখানা খোলা ছিল। গত সপ্তাহে ২১ মে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে মোট ৭ হাজার ৬০২টির মধ্যে বন্ধ ছিল ৩ হাজার ৪২৩টি।

[৫] এদিকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিল্প শ্রমিকরা ঈদের ছুটি নিয়ে কারখানা এলাকা ছেড়ে না যাওয়ার দিক নির্দেশনা দিলেও তা যথাযথ অনুসরণ করা হয়নি। শ্রমিকদের অসচেতনতাসহ ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের শিথিলতার সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে। সব মিলিয়ে আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও খুলনা- এই ছয় শিল্প এলাকায় ৪০ থেকে ৪১ লাখ শ্রমিক থাকলেও এখন অর্ধেকের বেশি এলাকায় নেই।

[৬] শিল্প পুলিশ বলছে, বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়নি এমন কারখানাগুলোর বেশিরভাগই চালু ছিল না। তারা আগেই বন্ধ করে দিয়েছে। সচলগুলোর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ দিতে পারেনি। তারা বলছে, ব্যাংকের সহযোগিতা পায়নি। আবার ব্যাংকের প্রয়োজন অনুযায়ী কাগজপত্র দিতে পারেনি এমন কারখানাও আছে। বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেনি। রোববার ছয় শিল্প এলাকায় ১৫টির কিছু বেশি কারখানাকেন্দ্রিক শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

[৭] জানা গেছে, যেসব কারখানা চালু হয়নি, সেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হলে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। চালু না হওয়া কারখানার শ্রমিকরা অনেকেই আশেপাশে আছেন। কিছু বাড়ি চলে গেছেন। বেতন-ভাতা অপরিশোধিত কারখানাগুলোর বেশিরভাগই ঠিকায় কাজ করে।

[৮] শিল্প কেন্দ্রীভবনের কারণেই ছয় শিল্প এলাকায় একক খাতভিত্তিক কারখানার সংখ্যা বেশি। ছয় শিল্প কারখানা শুধু পোশাক খাতের কারখানা আছে ২ হাজার ৮৯৩টি। এ খাতেরই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বস্ত্র শিল্পের কারখানা আছে ৩৮৯টি। এছাড়া বেপজার আওতায়ও আছে বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানা। এভাবে ছয় শিল্প এলাকায় মোট ৭ হাজার ৬০২টির মধ্যে পোশাক খাত কেন্দ্রীক মোট কারখানার সংখ্যা ৩ হাজার ৩৭২টি। বেতন বোনাস পরিশোধের চিত্রেও এ কেন্দ্রীভবনের প্রতিফলন দেখা যায়।

[৯] ছয় শিল্প এলাকায় এপ্রিল মাসের বেতন-বোনাস পরিশোধ হয়নি বিজিএমইএর সদস্য কারখানা ১৬১টি। আর বোনাস পরিশোধ হয়নি ৩৫৮ কারখানার। শিল্প এলাকাগুলোতে বিজিএমইএ সদস্য মোট কারখানা ১ হাজার ৮৮২টি। বিকেএমইএর সদস্য মোট ১ হাজার ১০১টি কারখানার মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়নি ৬০টির আর বোনাস পরিশোধ হয়নি ৮৫টির। বস্ত্র খাতের সংগঠন বিটিএমএ সদস্য ৩৮৯ কারখানার মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়নি ৪০টি কারখানায় আর বোনাস পরিশোধ হয়নি ৪৭টিতে।

[১০] বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অ ল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) আওতাভুক্ত মোট ৩৬৪টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ হয়নি ১১টিতে। আর ৮ কারখানার বোনাস পরিশোধ হয়নি। ছয় শিল্প এলাকায় বস্ত্র ও পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর ও বেপজার আওতাভুক্তগুলোর বাইরে চামড়াজাত পণ্য, আসবাব, সেলফোন সংযোজন, ওষুধ সব খাত মিলিয়ে অন্যান্য কারখানা আছে ৩ হাজার ৮৬৬টি। যার মধ্যে বেতন পরিশোধ হয়নি ৬৫১, বোনাস পরিশোধ হয়নি ৭৭৭ কারখানার।

[১১] আইন অনুযায়ী, চলতি মাসের বেতন পরবর্তী মাসের প্রথম ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সময়সীমা থাকলেও চলতি মে মাসের বেতন আংশিক বা কিছু অগ্রীম পরিশোধ করেছে এমন কারখানাও আছে ছয় শিল্প এলাকায়। শিল্প গোয়েন্দারা বলছেন, খুব বেশি হলে ১০০টি আছে এমন। কিছু ক্ষেত্রে মে মাসের ১৫ দিনের বেতন, কিছু ক্ষেত্রে মোট বেতনের সঙ্গে ২ হাজার টাকা বেশি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে গোপনে।

[১২] শিল্প পুলিশের সদরদপ্তরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, বেতন-বোনাস বকেয়া কারখানাগুলোর মালিকরা চেষ্টা করেছেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে ঈদের পরে পরিশোধ করবেন বলে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে। আমরাও তদারকি করবো যেনো শ্রমিকরা বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত না হোন।

[১৩] দেশের ছয় শিল্প এলাকার ৭ হাজার ৬০২টি কারখানায় ৪০ থেকে ৪১ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এই শ্রমিকরা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন এমন তথ্যানুসন্ধানের ক্ষেত্রে শিল্প পুলিশ বলছে, এ বিষয়টি তদারকি করে যথাযথ নজরদারি সম্ভব হয়নি। কারণ ঈদের ছুটিতে কারখানা এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না বলে ঘোষণা থাকলেও সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে ব্যাক্তিগত গাড়ি দিয়ে অনেকে যেতে পারবেন। একটা অংশ ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে বলে ধারণা করছে শিল্প পুলিশ। অনেকে যেতে চাইলেও আর্থিক কারণে যেতে পারেনি।

[১৪] শিল্প পুলিশের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ২৬ এপ্রিল থেকে কারখানা চালুর ঘোষণা আসার পরে শ্রমিকদের বড় একটি অংশ আসেনি। কারণ কারখানা চালু হয়নি। ৩ হাজার কারখানা বন্ধ আছে। খুলেছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার। অর্থাৎ বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের একটি অংশ আছেন, কিছু পালিয়ে গেছেন।

[১৫] শিল্প গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, অর্ধেকেরে বেশি শ্রমিক এলাকায় নেই। অনেকে নানাভাবে পালিয়ে গেছেন। কয়েকদিন আগে ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন, তারাও শ্রমিকি। করোনা প্রেক্ষাপটে সার্বিক পরিস্থিতিতে শ্রমিকের সচেতনা, আবেগ এগুলোর ন্যায্যতা নিশ্চিত করা খুব কঠিন ছিল।বণিক বার্তা, দেশ রূপান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়