শাহীন খন্দকার : [২] নাটোরের লিচু বাগানের মালিকেরা গাছ থেকে লিচু নামানো শুরু করেছে। ফলন ভালো হলেও সম্প্রতি বয়ে যাওয়া আম্ফাননের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ্য ও হয়েছেন চাষীরা। তেমনি বৈশ্বিক দূর্যোগ করোনাভাইরাস সংক্রমনের ফলে এসব লিচু বাজারজাত নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা। ফলে লিচু বাজারজাত করনের জন্যে সহায়তা চেয়েছেন তারা প্রশাসনের।
[৩] এ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসক, লিচু বাজারজাত করণে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের। জেলার প্রায় দেড় হাজার লিচু বাগান রয়েছে। ২১মে থেকে শুরু হয়ে ১৫ জুনের মধ্যে জেলার বাগানগুলো থেকে লিচু নামানো শেষ করা হবে। তবে লিচু নামানোর সময় চলে আসলেও বাগান মালিকদের কাছ থেকে এখনো ব্যবসায়ীরা লিচু ক্রয় শুরু করেনি।
[৪] প্রতিবছর বাগান থেকে প্রকারভেদে ১ থেকে ২ টাকা পিস লিচু বিক্রি হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে এবার অধিকাংশ বাগান বিক্রি হয়নি। বাগান বিক্রি না হওয়ায় লিচু বাজারজাত নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন বাগান মালিকরা। এদিকে লিচু ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে মানুষের যাতায়াতের নিশ্চয়তা না থাকায় এখনও বাগানগুলো ঘুরে দেখছেন তারা। বাজারজাত ও পরিবহনের নিশ্চয়তা পেলেই বাগান থেকে লিচু ক্রয় বিক্রয় এবং বিভিন্ন স্থানে বানিজ্যিকভাবে বাজারজাত করবেন বলে আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
[৫] এ অবস্থায় লিচু বাজারজাতে প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন নাটোর জেলা এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শরিফুল ইসলাম রমজান। এছাড়াও নাটোর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, লিচু বাজারজাতে প্রশাসনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। চলতি বছর জেলার ১ হাজার হেক্টর জমির বাগানে সোয়া ৮ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
[৬] আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. সাখায়াত মোল্লা বলেন, ভোর থেকে গ্রামের বাগানগুলোতে শুরু হয় লিচু সংগ্রহ আর প্রক্রিয়াজাতকরণ। দুপুর নাগাদ এই আড়তে বিক্রির উদ্দ্যেশে লিচুর পসরা সাজানো হয়। দূরের ব্যাপারিরা লিচু কিনে তা বিক্রি করেন দেশের বিভিন্ন জেলায়।
[৭] এ আড়ত থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০টির মতো ট্রাকে লিচু নেওয়া হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। প্রতি ট্রাকে ২শ ঝুড়ি বহন করে থাকে। প্রতি ঝুড়িতে ২থেকে আড়াই হাজার পিচ লিচু থাকে। বেপারীরা গ্রামের চাষিদের কাছ পাইকারি দামে লিচু কিনে থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। করোনার কারণে তারা সামান্য কিছু অগ্রিম টাকা দিলেও লোকশানের ভয়ে আসছেনা তারা। ফলে বাগান মালিক, লিচু চাষি ও আড়ৎদাররা শঙ্কায় রয়েছেন।
[৮] হাজী শমসের আলী জানালেন তার এক একর জমিতে লিচরু বাগান রয়েছে, প্রতি বিঘায় গাছ রয়েছে ১২টি। প্রতিটি গাছে গড়ে ৪ হাজার লিচু রয়েছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী গড়ে ১২শ থেকে ১৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি হাজার লিচু। এতে প্রতি বিঘায় প্রায় ৬হাজার টাকার লিচু বিক্রি হচ্ছে। এতে তার প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক বাবদ ১৫ হাজার টাকা। ছবি ও তথ্য ফেইসবুক পেইজ ।
আপনার মতামত লিখুন :