লিহান লিমা: [২] রমজানের দীর্ঘ সিয়াম সাধনার পর বিশ্বের মুসলিম ধর্মানুসারীরা অপেক্ষায় থাকে ঈদ-উল-ফিতরের। তবে এবার করোনার কারণে থমকে গিয়েছে সব আয়োজন। পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়া, উপহার আদান-প্রদান, খাবার ভাগাভাগি, বন্ধুদের সঙ্গে উদযাপনসহ চাঁদ দেখার মুহুর্তের উচ্ছ¡াস, সবকিছুই ¯øান হয়ে গিয়েছে। এএফপি, গার্ডিয়ান, ডয়েচে ভেলে
[৩] সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে মধ্যপ্রাচ্যে সহ এশিয়ার মুসলিম দেশগুলো ঈদের ছুটির দিনগুলোতে কারফিউ আরোপ করেছে। ওমান, মিশর ও সৌদিআরবের ধর্মীয় নেতারা মানুষকে ঘরে বসে ঈদের নামাজ আদায় করার অনুরোধ জানিয়েছেন। মিশর, তুরস্ক, ইরাক ও জর্ডান, সোমালিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেশজুড়ে আরোপ করা লকডাউন ও কারফিউয়ের সময় বাড়িয়েছে।
[৪] তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান বলেছেন, ঈদুল ফিতরের ছুটির শেষ দিন পর্যন্ত তুরস্কের ৮১টি প্রদেশে লকডাউন অব্যাহত থাকবে।
[৫] মিশরে করোনার কারণে আরোপিত কারফিউ চার ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। রোববার থেকে পরবর্তী ছয় দিন বন্ধ করা হয়েছে গণপরিবহন।
[৬] ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথেলহাম করোনার কারণে সীলগালা করে দেয়া হয়েছে।
[৭] ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ঈদের ছুটিতে যাতায়াত নিষিদ্ধ করেছেন।
[৮] মালয়েশিয়া পার্শ্ববর্তী আত্মীয়-স্বজনদের কাছে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে ২০ জনের বেশি জমায়েত হতে পারবে না। কিছু মসজিদ খুলে দেয়া হয়েছে তবে ৩০ জনের অধিক প্রার্থনায় একত্রিত হতে পারবে না।
[৯] করোনার কারণে অর্থনৈতিক দুরাবস্থার সম্মুখীন হয়েছে লেবানন। বৈরুতের বাস চালক মোহাম্মদ বলেন, ‘গৃহযুদ্ধের সময়ও হাতে টাকা ছিলো, কেউ না খেয়ে ছিলো না। এবার আমাদের কোনো ঈদ আনন্দ নেই।
[১০] ইরানের কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে উৎসবের সময় ভ্রমণ না করতে সতর্ক করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সায়েদ নামাকি বলেছেন, ‘আমাদের উদ্বেগ হচ্ছে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে।’
[১১] সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে বিদেশে থাকা অভিবাসী শ্রমিকরা। ইন্দোনেশিয়ান অভিবাসী ইউনিয়নের সমন্বয়ক মাজিদ সালাহ বলেন, ‘অভিবাসী শ্রমিকরা কাজ হারিয়েছে, দেশে থেকে বহু দূরে তারা একা , অসহায়। এবারের ঈদ তাদের ও তাদের পরিবারের জন্য সবচেয়ে কষ্টের ঈদ।
[১২] মালয়েশিয়ার অভিবাসী শ্রমিক ওয়াসিতো থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, মাসের ২ হাজার ২০০ ডলার নিয়মিত বেতন পান নি তিনি। উপরুন্তু নিজের খাওয়া খরচের জন্য মালিকের কাছ থেকে ধার নিয়ে চলতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘বেতন দেয়া হচ্ছে না কেনো এটি বলার সাহস নেই কারণ আমি মরতে চাইনা। আমার স্ত্রী বাড়ি থেকে প্রতিদিন ফোন দিয়ে কাঁদে। আমাদের জীবনে এবার কোনো ঈদ নেই।’
আপনার মতামত লিখুন :