মুনশি জাকির হোসেন : ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশ গত ২ দশকে অর্জন করেছে। এই অবস্থা অনেকটা প্রফেশনালিজম, প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই সব দুর্যোগ আসলেই প্রশাসন, জনগণের কী কী করণীয় সে সব বিষয়ে একধরনের স্বয়ংক্রীয় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছে, যেটি সকলের জন্যই ভালো লক্ষণ। যে কারণে ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি তুলনামূলকভাবে কম। তবে, দ্বিতীয় ধাপে পুনর্বাসন পর্যায়ে সরকারি বাজেট, সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, যারা স্বচ্ছল, যাদের সঞ্চয় আছে, যাদের ঘরে বসে কয়েকমাস চলার রসদ আছে তারাই মূলত করোনা নিয়ে বেশি আতঙ্কিত, তারাই মূলত লকডাউন/শাটডাউনের পক্ষে। যেদিন তাদের সঞ্চয়/পুঁজি শেষ হবে সেদিনও তারাও বলবে, কীসের লকডাউন। সেদিন তারাও খেটে খাওয়া প্রান্তিক জনগণের মতো রাস্তায় নেমে আসবে। লকডাউন যদি করতেই হয়, তাহলে হার্ড লকডাউন করা উচিত, যেখানে মাথাপিছু হারে ধনী-গরিব, সরকারি-বেসরকারি সকলেরই সমান হারে সরকারি বেতন/ভাতা/সহায়তা থাকবে। হার্ড ইমিউনিটি ছাড়া করার তেমন কিছুই নেই। গতমাসেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে দিয়েছে, করোনাভাইরাস কনটেইন করে রাখা সম্ভব না, ইউকে জরিপ বলছে, প্রতি ৪০০ জনে ১ জন করোনাভাইরাস পজেটিভ। বাংলাদেশও এই একই অবস্থা বিদ্যমান। তবে, যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো, তারা টিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের আসল চ্যালেঞ্জ সামনে, কৃষিজ উৎপাদন অব্যাহত রাখা। ৪ মাস পূর্বে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তেমন না থাকাতে ধান লাগানো পর্বে তেমন ব্যাঘাত ঘটেনি। কিন্তু সামনের ধানের মৌসুমে সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পুলিশ/প্রশাসন/ছাত্রলীগ/হার্ভেস্টার দিয়ে ধান কাটা গেলেও ধান লাগানো/বীজতলা/জমি প্রস্তুত করার মতো কাজ কৃষক/কৃষি শ্রমিকদেরকেই করতে হবে। এটি নিয়ে সরকার/কৃষি মন্ত্রণালয় কী কী পদক্ষেপ নিবে সেটিই দেখার বিষয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :