খান আসাদ : ধর্ম নিয়ে যখন কেউ কথা বলেন, আমি বোঝার চেষ্টা করি, তিনি কী আসলে ‘ধর্মের’ কথা বলছেন, নাকি ধর্মের পরিভাষা নিয়ে ‘রাজনীতির’ কথা বলছেন। যখন কেউ নিজেকে মুসলমান দাবি করেন, বেশ জোরের সাথে চিৎকার করে। আমি তার উদ্দেশ্য বোঝার চেষ্টা করি। তিনি কি নিয়ে রাজনীতি করছেন। কী তার স্বার্থ? টাকাপয়সা, নাকি ক্ষমতা? কী তার জীবনের মৌলিক প্রয়োজন?
যখন কেউ একজন ধার্মিকের সাথে ধর্মান্ধ, ধর্মসন্ত্রাসী, ধর্মব্যবসায়ী, ধর্মজীবী, ধর্মের নামে রাজনীতি করা সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীকে মিলিয়ে ফেলে, আমি তার দিকে সন্দেহের চোখে তাকাই।
একটি ফিল্টার আছে, যে ফিল্টারে ধর্মান্ধ/ধর্মসন্ত্রাসীরা আটকে যায়। প্রশ্ন করুন, ‘ধর্মের অবমাননা হলে আপনি কী করবেন?’ সত্যিকার ধার্মিক উত্তর দেবেন, ‘ঈশ্বর/আল্লাহ/গড তার বিচার করবেন’। ধার্মিক তার পরমাত্মার ক্ষমতায় বিশ্বাসী। সে শান্তিকামী ও ধৈর্যশীল। কিন্তু ধর্মান্ধ/ধর্মসন্ত্রাসী সহিংসতার উস্কানি দেবে। সাম্প্রদায়িক দাঙা করবে। মানুষ হত্যা করবে। যখন কোনো রাজনীতিবিদ মানুষের জাতীয় আত্মপরিচয় নিয়ে কথা বলেন, যখন নারী-পুরুষ আত্মপরিচয় নিয়ে কথা বলেন, যখন পেশা আত্মপরিচয় নিয়ে কথা বলেন, এসব কিছু আত্মপরিচয়ের রাজনীতি।
এগুলো হতে পারে জাতিগত, লিঙ্গগত, পেশাগত বা শ্রেণিগত বৈষম্য নিয়ে। কিন্তু যখন কেউ ধর্মীয়আত্মপরিচয়কে প্রধান করে, সেটাই সাম্প্রদায়িকতা। হতে পারে তা সংখ্যাগুরুর বা সংখ্যালঘুর। এই আত্মপরিচয়ের রাজনীতির সাথে ঘৃণা ও সহিংসতার সম্পর্ক মৌলিক। মানুষের ধর্মীয় আধ্যাত্মিক স্বাধীনতা মৌলিক মানবাধিকার। ব্যক্তির ধর্মচিন্তা ও ধর্মচর্চার অধিকার রক্ষার জন্য, আপনাকে ধার্মিকদের অধিকারের পক্ষে দাঁড়াতেই হবে। কিন্তু এই অবস্থান নিতে হলে, আপনি যদি সৎ ও মানবিক মানুষ হন, তাহলে প্রথমেই আপনাকে ধার্মিক/ধর্মভীরু শান্তিপ্রিয় মানুষদের সাথে পার্থক্য করতে হবে ধর্মান্ধ/ধর্মসন্ত্রাসী/ধর্মজীবী/সাম্প্রদায়িক/মৌলবাদী/জঙ্গিবাদীদের। এটা না করতে পারলে আপনিও একজন সমর্থক, মৌলবাদী সহিংস ধর্মসন্ত্রাসের। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :