নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : [২] সিলেটে পুলিশ-চিকিৎসকসহ আরও ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে সিলেট বিভাগে ৪৮১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। আর সিলেট জেলায় করোনাক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়াল। বুধবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় এ ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
[৩] শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ২১ জন সিলেট জেলার ও অপরজন মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা।
[৪] বুধবার রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, বুধবার ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এরমধ্যে ২২ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। যাদের পজেটিভ এসেছে তাদের মধ্যে ২১ জনই সিলেট জেলার ও একজন মৌলভীবাজার জেলার বাসিন্দা। আক্রান্ত হওয়াদের মাঝে চিকিৎসক এবং পুলিশ সদস্যও আছেন। শনাক্ত হওয়ারা সিলেট নগর, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
[৫] বুধবার (২০ মে) প্রথমবারের মতো শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে ৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত এই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
[৬] এনিয়ে সিলেট বিভাগে মোট ৪৮১ জনের করোনা শনাক্ত হলো। আর সিলেট জেলায় শনাক্ত হয়েছে ২০৬জনের। সুনামগঞ্জে ৮২ জন, হবিগঞ্জে ১৩১ জন ও মৌলভীবাজার জেলায় ৬২জন। এ পর্যন্ত এই বিভাগে করোনায় মারা গেছেন ৮ জন, সুস্থ ১৩৪ জন। আর হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৫৮ জন রোগী।
[৭] এদিকে, সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বাড়লেও নগরের সড়কগুলোতে ভিড়ও বাড়ছে সমানতালে। প্রতিদিনই শনাক্ত হচ্ছেন অনেক রোগী। করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হলেও এমন আহ্বান উপেক্ষা করেই সিলেট নগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার রাস্তাঘাটে যানচলাচল ও জনসমাগম বেড়েই চলছে।
[৮] বুধবার নগরের অনেক স্থানে রীতিমত যানজট লেগেছিলো। এমন চিত্র দেখা গেছে চলতি সপ্তাহজুড়েই। গত সপ্তাহ থেকেই নগরের দোকানপাট ও কিছু শপিং মল খুলতে শুরু করে। এসব দোকানে কেনাকাটা করতেও ভিড় করছেন অনেকে। মানুষের এই অবাধ বিচরণ এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলার কারণে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
[৯] সরকারি সাধারণ ছুটি চলমান থাকলেও ঈদ উপলক্ষে ১০ মে থেকে সীমিত আকারে শপিংমল ও দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয় সরকার। প্রথম অবস্থায় সিলেটের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা মিলে সকল শপিংমল ও দোকানপাট ঈদ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেও পরবর্তীতে কিছু শপিংমল ও অনেক দোকানপাট খোলা হয়।
[১০] এতে করে নগরে বাড়তে শুরু করে যান চলাচল। নগরের বাসিন্দারাও ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর মাসখানেক নগরের রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা থাকলেও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে জনসমাগম। চলতি সপ্তাহে এসে তা যানজটে রূপ নিয়েছে। নগরের বন্দরবাজার, লালদিঘীর পাড়, কালিঘাট, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ওইসব এলাকায় যানবাহনের চাপে পুরো যানজট লেগে আছে। ফুটপাতেও মানুষের ভিড়।
[১১] এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ঘরে থাকাই এখন পর্যন্ত এই রোগ এড়ানোর সবচেয়ে বড় পন্থা। কিন্তু লোকজনকে আর ঘরে রাখা যাচ্ছে না। এদিকে সিলেটে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এভাবে মানুষজন ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে ঈদের পরে আরও দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে।
[১২] অন্যদিকে, সিলেট বিভাগে মোট কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ১৫২জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৬৪ জন। সুনামগঞ্জে ৩৫৭জন। হবিগঞ্জে ১৫৬জন ও মৌলভীবাজার জেলায় ৩৭৫জন। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ১৯১ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১১৯ জন। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :