ফরিদ কবির
‘পকেটে হারাম পয়সা নিয়ে আমরা হালাল মাংসের দোকান খুঁজি...’Ñ সংলাপটি ‘খুদাকে লিয়ে’ নামের একটি চলচ্চিত্র নেওয়া। এক মাওলানার সংস্পর্শে এসে এক সংগীতশিল্পীর ক্রমশ জঙ্গি হয়ে ওঠা এবং লন্ডনে বেড়ে ওঠা এক তরুণীকে জবরদস্তি তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই এর কাহিনি এগোয়। ধর্মের অপব্যাখ্যা আর ভুল প্রয়োগ তাদের জীবনকে কীভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়, এ ছবির গল্প এমনই স্পর্শকাতর বিষয়কে কেন্দ্র করে। একইসঙ্গে ধর্মের নামে হত্যাকা-, নাইন ইলেভেনের পর আমেরিকায় মুসলমানদের নিপীড়নও এ ছবির উপজীব্য। আমি নিশ্চিত, এমন একটা ছবি করার ক্ষমতা ও সাহস বাংলাদেশের কোনো পরিচালকের নেই। ছবিটি পাকিস্তানি। পরিচালক শোয়াইব মনসুর।
ধর্মের নামে কীভাবে অধর্ম ও অন্যায় মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়, এ ছবিটিতে তুলে ধরা হয়েছে সেই চিরাচরিত গল্পই। আমাদের দেশেও কি এমন কাহিনি নেই? আমরা তো বেড়েই উঠছি এমন পরিবেশের মধ্যে। কিন্তু এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কাজ করার সাহস ও ক্ষমতা আমাদের নেই। তাছাড়া, আমাদের একাংশ এমন একটা ছবি ও তার বক্তব্যকে গ্রহণ করবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। আমার তো ধারণা, এমন ছবি মুক্তির পর পরিচালক ও শিল্পীদের কল্লাই আস্ত থাকবে না। ধর্মের নামে কোনো অধর্ম করা হলে এখানে তা নিয়ে প্রশ্ন করাও ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের ধারণা, পাকিস্তানের অবস্থাই আমাদের চাইতে বেশি নাজুক, অন্তত ধর্ম বিষয়ে এবং নারী-পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কের ব্যাপারে। কিন্তু এ ছবি সেই ধারণাকেই পাল্টে দেয়।
শিল্পগুণে তেমন অসাধারণ কিছু না হলেও এ ছবি দেখা উচিত প্রতিটি সিনেমাপ্রেমিকের। পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পাশাপাশি এ ছবির একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহও। শোয়াইব মনসুর সম্ভবত দুটো ছবিই বানিয়েছেন এখন অব্দি। তার অপর ছবিটি ‘বোল’। দুর্দান্ত আর মর্মস্পর্শী এ ছবিটিও। ছবি দুটো পাওয়া যাবে ইউটিউবেই। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :