চিররঞ্জন সরকার : ছোটকালে অনেক শিশুরই বাবা-মার কাছে প্রশ্ন থাকে, সে কী করে জন্ম নিয়েছে বা এসেছে। এই প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ বাবা-মা ‘এই কুড়িয়ে পেয়েছি’, ‘একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি তুমি আমাদের বিছানায় শুয়ে আছ’, ঈশ্বর তোমাকে একটি হাসপাতালে রেখেছিল, সেখানে আমরা গিয়ে নিয়ে এসেছি’ মার্কা কথা বলেন। সন্তানের জন্মদান যে ‘নারী-পুরুষের যৌন কর্মের ফল’ এটা লুকাতে তারা শিশুকে কিছু একটা বুঝ দেন। কারণ শিশুরা সরল। সরল এবং আহাম্মককে কিছু একটা বুঝ দিলেই তারা বিশ্বাস করে।
কিন্তু দেশের মানুষকে কি কিছু একটা বোঝালেই হয়? দেশের সব মানুষ তো বলদ নয়। কিন্তু আমাদের দেশের মন্ত্রী-আমলারা তাই মনে করেন। তা না হলে গরিব মানুষকে নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যাপক ভুল-ভাল একটা তালিকার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান কী করে বলেন, টাকা আত্মসাতের জন্য এটা করা হয়নি। কোনো কোনো তালিকায় একই মোবাইল নম্বর ২০০ বারও আছে। কারণ তালিকা করার সময় যাদের মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়নি তাদের নামের পাশে যারা তালিকা করেছেন তাদের মোবাইল নম্বর বারবার বসিয়ে দিয়েছেন!
মন্ত্রী মহোদয়কে বলি, স্যার, যদি সত্যিই কোনো দরিদ্র ব্যক্তির মোবাইল নম্বর না থাকে, তাহলে সেই তালিকা পাঠানো হলো কেন? যদি মোবাইলের ঘর ফাঁকা থাকত এবং তাতে লেখা থাকত, ‘পরে সংযোজন করা হবে’ তাহলেও মানা যেতো।
তালিকা প্রণয়নে ব্যর্থতা ও দুর্নীতি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা অযথা কেন করছেন? এই দেশে জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে সঠিক তালিকা প্রণয়ন কখনও সম্ভব নয়। এটা সম্ভব হবে যদি কিছু ‘জংলি আইন’ কার্যকর করা যায়। যেমন, কারো তালিকায় যদি একটাও ভুল নাম ও ভুল নম্বর বের হয় তাহলে তাকে বউ-বাচ্চার সামনে প্রকাশ্য হাটে বা বাজারে অন্তত ১০টি জুতার বাড়ি মারা হবে। এই তালিকা রেন্ডোম ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব সুনাম আছে এমন এনজিও বা সেনাবাহিনীকে দিন। দেখবেন ঠিকই সঠিক তালিকা হবে!
আপনার মতামত লিখুন :