মাজহারুল ইসলাম [২] এবারের ঝড়টি নাম আমফান দিয়েছে থাইল্যান্ড। ঝড়টি কোন উপকূলে আছড়ে পড়বে সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হলেও গতির কারণে এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগুবে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
[৩] ভারতীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি রবিবার নাগাদ ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মঙ্গলবার নাগাদ এর গতি ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে স্থলভাগের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কমতে থাকবে।
[৪] শনিবার দুপুরে ওই গভীর নিম্নচাপটি উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে ১ হাজার ৬০ কিলোমিটার এবং পশ্চিমবঙ্গের দিঘা সমুদ্র উপকূল থেকে ১ হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। আমফানের প্রভাবে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে এটি বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। তবে তা নির্ভর করছে ঘূর্ণিঝড়টি কোনদিকে বাঁক নেয় তার ওপর।
[৫] দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মহসিন বলেন, এখনও এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি। কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাসের পরই উপকূলীয় এলাক গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। এই সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে গাদাগাদি করে রাখা যাবে না। তাই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও বন্ধ থাকা স্থানীয় স্কুল-কলেজগুলোর চাবি সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে।
[৬] আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আজ শনিবার দুপুরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এখন নিম্নচাপটি আরও সামান্য পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
[৭] আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান জানান, এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
[৮] গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
[৯] চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
[১০] আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ এবং বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকার আকাশ মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। ইত্তেফাক, যুগান্তর, বাংলা ট্রিবিউন, জনকন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :