শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২০, ০৬:০৫ সকাল
আপডেট : ১৬ মে, ২০২০, ০৬:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছাত্রছাত্রীর প্রতি অপরিসীম স্নেহ বৎসল একজন আদর্শ শিক্ষক ড. আনিসুজ্জামান

ড. তোফায়েল আহমেদ : ছাত্রছাত্রীর প্রতি অপরিসীম স্নেহ বৎসল এক আদর্শ শিক্ষক, সর্বোপরি একজন অত্যন্ত নির্ভরশীল অভিভাবক, উদারতা ও বাৎসল্যের এক মূর্ত প্রতীক প্রফেসর আনিসুজ্জামানও আজ থেকে স্মৃতি হয়ে গেলেন। তিনি যখন চবিতে যোগ দেন, তখন আমরা দশম শ্রেণির ছাত্র। বাড়ি চবি সংলগ্ন গ্রামে। তাই দূর থেকে দেখতাম। বেশ লম্বা ছিপছিপে গড়ন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে স্যার যাকে বলে ‘আইকন’ সে রকম ভাবমূর্তি ও ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভুত হন। আগে পরিচয় থাকলেও ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার সুযোগ হয়নি। ১৯৯১ এর পর থেকে স্যারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ হয়।

 

ঢাকার ব্যস্ততার মাঝে অনেক কাজ একনিষ্ঠভাবে করা সম্ভব হতো না। তাই তিনি মাঝে মাঝে স্বেচ্ছানির্বাসনে আসতেন কুমিল্লায়, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। তখন সকাল, দুপুর ও বিকালে কিছু সময় কাটানো যেতো, বিশেষত ক্যাফেটেরিয়া এবং হোস্টেলে। কোনো সময়ই স্যারের কোনো তাড়াহুড়া দেখতাম না। আমারই মাঝে মধ্যে মনে হতো নিরুপদ্রুবে কিছু কাজ করার জন্য এখানে আসা, আমি বোধহয় স্যারের মূল্যবান সময় নষ্ট করছি। কোনো কোােন রাতে বাসায় একসঙ্গে খাওয়ার দাওয়াত করেছি। স্যার শিশুসুলভ সারল্যে রাজি হয়ে যেতেন। আমাদের একমাত্র শিশুকন্যা সাদিয়ার বয়স তখন মাত্র ৪/৫ বছর। স্যারের সঙ্গে তার কী ভাব, কতো গল্প। মাঝে মাঝে আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনই অপ্রস্তুত হয়ে যেতাম। মেয়ে স্যারকে এমন এমন প্রশ্ন এবং আবদার করতো আমরা লজ্জা পেয়ে যেতাম।

 

সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ একসময় বার্ড কুমিল্লার ডিজি ছিলেন। তিনি আমাদের মেয়ে সাদিয়াকে খুবই আদর করতেন। মার্গুব স্যার হয়তো কোনো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসনে বসে আছেন, সে যদি কোনো কারণে ওই অনুষ্ঠানে থাকে, তাকে ধরে রাখা যেতো না সে মঞ্চে উঠে সোজা তার কোলে বসে পড়তেন। তিনি কোনোদিন বিরক্তি প্রকাশ তো নয়ই, বরং আমি তখন উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে, আমার স্ত্রী মাসুদা চৌধুরীকে বলতেন, যেন অফিসে আসার সময় তাকে নিয়ে আসে। এতোগুলো অপ্রাসঙ্গিক কথার অবতারণা একটি কারণে। যখন মার্গুব সাহেব বার্ড থেকে ঢাকায় বদলি হয়ে গেলেন, তখন থেকে মেয়ের মধ্যে যে স্নেহশীল মানুষের ভাবমূর্তি ছিলো তা সে আর অন্যদের কাছে দেখতে পায়নি। কাকতালীয়ভাবে ওই সময় আনিস স্যারের বার্ডে আসা-যাওয়া এবং বাসায় কযেকবার আসা-যাওয়া এবং আনিস স্যারেরও মার্গুব সাহেবের মতো স্নেহ, আদর এবং শিশুর সঙ্গে শিশুর মতো মিশে যেতে পারাটা তার সে শূন্যতা পূরণ করে। সে একদিন একটা আবদার করে বসলো, ‘আঙ্কেল, আপনি বার্ডের ডিজি হয়ে যান’। আমরা লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছিলাম। আমি ধমক দিয়ে বললাম।

 

আঙ্কেল তোমার বার্ডের ডিজির চেয়ে অনেক বড় পদে আছেন। মেয়ে বলে, ‘তবুও’। তিনি বললেন, আহা সে তার কথা বলেছে। তার বাৎসল্যের একটি ছোট্ট নমুনা দিলাম।
আমার এ মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে আনিস স্যার সস্ত্রীক, মার্গুব স্যার এবং সদ্য প্রয়াত ড. সা’দত হোসাইন এসেছিলেন। আমার স্ত্রী ও সে মেয়ে এখন বিদেশে চিকিৎসাধীন। তারা শুনে খুব কষ্ট পাচ্ছে। স্যারের বাসায় কাজের লোকজন যারা ছিলেন বা আছেন, স্যারের ছেলেমেয়েরা তাদের ‘ভাই’ ‘আপা’ বলে ডাকেন এবং সম্বোধন করে ‘আপনি’ হিসেবে। বয়সে ছোট হলেই শুধু ‘তুমি’ বলা যেতো। ১৯৯১-এর পর থেকে নানাভাবে স্যারকে পেয়েছি। নলেজ ট্রাস্ট নামক একটা প্রতিষ্ঠান আমরা করেছিলাম। স্নেহাষ্পদ বিধান চন্দ্র পাল যার সদস্য সচিব। আমাকে সভাপতি করা হয়। মিসেস জামান নলেজ ট্রাস্টের একজন ট্রাস্টি। স্যার নানাভাবে আমোদের সাহায্য করেছেন। তার বাসায় প্রচুর খাওয়া-দাওয়াসহ আমরা ট্রাস্টের সভাও করেছি। স্যারের বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করি। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়