আজিজুল ইসলাম : [২] নারিকেলবাড়িয়া বাজারের বিশিষ্ট কাপড়ের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান। শালিখার কাদিরপাড়া গ্রামে বাড়ি।প্রতিদিন সকাল-বিকাল বাজারে আসতে হয়। সেতু বন্ধ থাকায় নদী সাতরিয়ে পার হতে হয় তাকে। তিনি খুব দুঃখ করে কথাগুলো বলেন।
[৩] এমন অনেক ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ কে এখন এভাবেই চিত্রা নদী সাতরিয়ে নারিকেলবাড়িয়া হাট-বাজার করতে আসতে হচ্ছে। এ অবস্থায় যশোরের বাঘারপাড়া ও মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত নারিকেলবাড়িয়া ব্রিজটি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দু’উপজেলার বাসিন্দারা।
[৪] করোনাভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতে কেউ অবাধে প্রবেশ না করতে পারে-সেজন্য ব্রিজটি ঘিরে রাখে বাঘারপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
[৫] বাঘারপাড়ার ক্ষেত্রপালা গ্রামের বাসিন্দা মন্টু মিয়া জানান,নারিকেলবাড়িয়ার ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন শালিখার সীমাখালী ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা। বাঘারপাড়া উপজেলার মানুষ পেলেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একই অভিযোগ করেন নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক ফজর আলী। তিনি জানান,ব্রিজ আটকে দেওয়ায় সীমাখালী
যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করছে শালিখা উপজেলার বাসিন্দারা।
[৬] এদিকে শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন,‘নারিকেলবাড়িয়া বাজার কাছাকাছি হওয়ায় আমরা এই বাজার থেকে কেনাবেচা করে থাকি। ব্রিজটি আটকে দেওয়ায় আমরা অনেক সমস্যায় পড়েছি।
[৭] জানতে চাইলে শালিখার শতখালি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ঝন্টু অভিযোগ করে বলেন,‘ বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল সরদারের লোকজন আমার এলাকার মানুষকে বাঘারপাড়ায় ঢুকতে দিচ্ছেনা।
[৮] প্রশাসনের নির্দেশে প্রথমে আমার এলাকা বন্ধ করা হযেছিল। পরে আলোচনার ভিত্তিতে খুলে দিয়েছি। কিন্তু তারা (নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়্রম্যানের লোকজন) ব্রিজ আটকে রেখেছেন। তবে বিষয়টি এখন দু’উপজেলার প্রশাসনের হাতে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। চেয়ারম্যান আবুল সরদারের সাথে তার কোন বিরোধ নেই বলেও উল্লেখ করেন।
[৯] এ ব্যপারে নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল সরদার বলেন,‘উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ব্রিজ আটকে দেওয়া হযেছে। এতে আমার ব্যক্তিগত কোন হাত নেই। আমার বিরুেেদ্ধ যারা কথা বলছেন-তারা মনগড়া অসত্য কথা বলছেন’।
[১০] অনেকেই দাবি করেছেন দু’উপজেলার সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। মুলত: যানবাহন শ্রমিকদের আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা উপলক্ষ মাত্র।
এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ বলেন,‘করোনাভাইরাস যাতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়াতে না পারে- সে জন্য নারিকেলবাড়িয়া ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খুলে দেওয়া হবে।
[১১] অপরদিকে জানতে চাইলে শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর রহমান বলেন,‘ দুই এলাকার সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করেনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এক জেলা থেকে অন্য জেলার ছোট ছোট সীমান্ত পথ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :