মুনমুন শারমিন শামস : সাংবাদিক পারুল ৭ দিন ধরে বিরাট ঘ্যানঘ্যান শেষে অবশেষে একটা ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছেন। তাকে শেষমেষ অভিনন্দন, মেরুদ- শেষ পর্যন্ত গজালো বলে। এর আগে ৬-৭ দিন ধরে তিনি স্বামীর দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বিবাহ ঠেকাতে শ্বশুড়বাড়ির দিকে যাত্রা করেছিলেন, স্বামীর ঠ্যাং ধরে কেন্দেছিলেন, অনুনয় বিনয় করেছিলেন, সংসার রাখতে চাইছেন। অথচ তার স্বামী তাকে না বলে বাসা থেকা বের হয়েছেন বিবাহের উদ্দেশ্যে, হোয়াটঅ্যাপে তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন, নওশা সাইজা বাপ-মা চৌদ্দগোষ্ঠী নিয়ে বিবাহ করতে চলেছেন, তার আগে পারুলের গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে পারুলকে বাধ্য করেছেন, যৌতুক চেয়েছেন, মারছেন, অনেক কিছু।
তো একজন সাংবাদিক মেয়ে, শিক্ষিত, লম্বা চওড়া শক্তসমর্থ এক নারী পড়ে পড়ে এতোদিন এসব সহ্য করেছেন, পর তার পতির বিবাহ ঠেকাতে লোক জড়ো করেছেন, সালিশ বসিয়েছেন। যখন কোনোভাবেই দেখেন যে সংসার টিকছে না, তখন তিনি মামলা করেছেন। মানে বাটে পড়ে মেরুদ- গজালো আর কি। এ দেশে মেয়েদের কেন মেরুদ- থাকে না, এটা নিয়ে বিস্তর গবেষণা দরকার। দেশে নারী নির্যাতন আইন আছে, মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও বহু কিছু আছে। তবু স্বামী টিকাতে না পারলে মেয়েদের ইজ্জত যায়। স্বামীর হাতে দুইবেলা মাইর খাওয়া, বাপ-মায়ের বুকে পাড়া দিয়ে যৌতুক নিয়ে এসে স্বামীর পায়ে ঢেলে দেওয়া, স্বামী বললেই গিয়ে অ্যাবরশন করাÑ এর সব কিছুই তারা করতে পারেন শুধু স্বামীকে রেখে দেওয়ার জন্য।
তাদের জীবনে স্বামী হলো বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। এই কামটা গৃহকর্মী তাহমিনা, জরিনা বেদানা করলে তাও মানা যায়। যখন একটা পত্রিকার সাংবাদিক নারী এই কাম করে, তখন দুই গালে দুইটা থাপ্পড় কষানো ছাড়া আর কিছুই করতে ইচ্ছা করে না। যে নারী নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বামীর আদেশে ভ্রƒণ হত্যা করেন, সেই নারীর মেরুদ-হীনতার বিচারও হওয়া উচিত। যে নারী বাপের কাছ থেকে টাকা এনে স্বামীকে দেয়, সেই নারীর বিচার হওয়া উচিত। যে নারী স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ঠেকিয়ে আবার সেই স্বামীর সঙ্গে পিরিতের সংসার চায়, সেই নারীর অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। সাংবাদিক পারুলের অতীতের সব কর্মকা- সব নারীর আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যায়। তিনি নারী জাতির কলঙ্ক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :