চিররঞ্জন সরকার : ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে তোলার পক্ষে বড় যুক্তি হলো লকডাউনের সাহায্যে মহামারির বিস্তারকে খানিক শ্লথ করা যায় ঠিকই। কিন্তু যতোক্ষণ না দেশের একটা বড়সড় অংশের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অসুখের জন্য ইমিউনিটি গড়ে উঠে, সংক্রমণ চলতেই থাকবে। ওই দিকে দেশের মোটামুটি ৬০-৭০ শতাংশ জনতার যদি এই ইমিউনিটি গড়ে উঠে, তবেই থেমে যাবে ভাইরাসের বিজয়রথ। এটাই সংক্রমণের অন্তর্নিহিত বিজ্ঞান। যেকোনো মহামারির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এই কথা। হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার একটাই উপায় দেশের লোকদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কর্মকা- চালিয়ে যেতে দেওয়া। হয়তো খানিকটা নিয়ন্ত্রিতভাবে। তার ফলে বেশিরভাগ জনগণ আক্রান্ত হবে এবং এর মধ্য দিয়েই তাদের মধ্যে গড়ে উঠবে প্রতিরোধ ক্ষমতা। এই কাজটা করেছে সুইডেন। সুইডেনের মতো ধনী কিন্তু ছোট দেশ, যার জনসংখ্যা মাত্র ১ কোটি, জনঘনত্ব বেশ কম প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ২৫ এবং যে দেশের লোকজন স্বাভাবিকভাবেই সরকারি অনুশাসন আর বিধিনিষেধ মেনে চলতে অভ্যস্ত, সেখানে এই ‘হার্ড ইমিউনিটি’র তত্ত্ব প্রয়োগ করা হয়তো তুলনায় সহজ। তবু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সুইডেনের করোনায় মৃত্যুহার কিন্তু অন্য নর্ডিক দেশগুলোর মধ্যে বেশ বেশি।
কিন্তু আমাদের দেশে হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্বের প্রয়োগ অত্যন্ত বিপজ্জনক। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের এই দেশের জনঘনত্ব সুইডেনের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ। একসঙ্গে বেশি করোনা রোগী হয়ে গেলে চিকিৎসা পরিষেবা, প্রয়োজনীয় আইসিইউ কিংবা ভেন্টিলেশনে টান পড়বে এখানে। প্রতিদিন ৫-৬শ রোগীর চাপ সামলাতেই হিমশিম। এটা ২-৩ হাজারে উঠলে ধসে পড়বে সিস্টেম। তবু লকডাউনকে হয়তো আস্তে আস্তে আলগা করতেই হবে অর্থনীতিকে ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে আনার জন্য। এটি বড় কঠিন চ্যালেঞ্জ। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :