শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১০ মে, ২০২০, ১০:০৯ দুপুর
আপডেট : ১০ মে, ২০২০, ১০:০৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] কোভিড-১৯ আক্রান্ত এলাকায় কাজ করার সময় ‘সতর্ক’ থেকেও সংক্রমণ এড়াতে পারছেন না বলে দাবি করছেন তারা।

[৩] পুলিশে এই পর্যন্ত ১ হাজার ৫০৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০৮ জনই ঢাকা মহানগরের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১১০ জন, মারা গেছেন ৭ জন। দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর তার বিস্তার ঠেকানোর কাজটিতে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে আক্রান্তদের কাছাকাছিও তাদের যেতে হয়েছে।

[৪] ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শুরুতে পুলিশ সদস্যদের গায়ে-হাতে কোনো সুরক্ষা সরঞ্জাম দেখা যায়নি। যদিও ওই সময় চিকিৎসকদেরও সুরক্ষা পোশাকও ছিল অপ্রতুল। সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার না করা এবং এই পরিস্থিতিতে কীভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়, সে বিষয়ে উদাসীনতাই পুলিশে আক্রান্ত বেশি হওয়ার কারণ বলে অনেকে মনে করেন। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, তারা মহামারীর এই সময়ে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা মেনেই কাজ করছিলেন।

[৫] কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এএসআই বোরহান উদ্দিন ওই থানায় প্রথম নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছেন সবার আগে। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বোরহান ৩ মে তার থানার পাশের বাসায় ফিরে আসেন। এখন সুস্থ হলেও খানিকটা দুর্বল বোধ করছেন বলে জানালেন তিনি।

[৬] এএসআই বোরহান বলেন, ৫ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ মডেল টাউনের একটি বহুতল ভবনে একজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। ভবনটি লকডাউন করা হয় এবং রাতে আমার ডিউটি দিতে হয়েছে ফটকে। সারারাতে ডিউটি দেয়ার সময় কিছু মানুষ ওষুধ কিনতে বের হয়েছে। আবার বাইরে যারা ছিল, তার ভেতরে ঢুকেছে। সেখানে কারও সঙ্গে স্পর্শ লাগেনি। শুধু যারা ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হয়েছিল, সেটা ধরে দেখেছিলাম, ঠিক বলছে কি না বুঝতে। ওই এলাকায় কোনো টং দোকানও ছিল না যে, ভুল করে কোনো দোকান থেকে চা খাব। আমার ও কনস্টেবলদের মাস্ক ছিল, স্যানিটাইজার ব্যবহার করেছি, গ্লাভসও ছিল।

 

[৭] পরদিন জিনজিরা বাজারে তল্লাশি চৌকিতে কাজ করেছিলেন এএসআই বোরহান। লকডাউনের মধ্যে মনু ব্যাপারীর ঢালে কাঁধে চালের বস্তা নিয়ে কয়েকটি পরিবারকে পৌঁছে দেন। তার পরদিন ৭ এপ্রিল জ্বর আসে বোরহানের, সঙ্গে কাশি। ৮ এপ্রিল রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ওষুধ ও ৮ দিনের বিশ্রাম দেন। বাসায় আলাদা কক্ষে বিশ্রাম নিলেও কাশি সারছিল না। পরে ১৮ এপ্রিল নমুনা কেরানীগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে এসে নিয়ে যায় এবং ২০ এপ্রিল জানা যায় রেজাল্ট পজেটিভ।

[৮] কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ কনস্টেবল রাকিবুল ইসলামও আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠেছেন। তিনি বলেন, কীভাবে যে আক্রান্ত হলাম বুঝতে পারিনি। সতর্ক ছিলাম। থানার ব্যারাকে যারা থাকেন, তাদের অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু প্রথমজনের সংক্রমণ কীভাবে হল, সেটা বের করা যাচ্ছে না। রাকিবুল বলেন, ব্যারাকগুলোতে বিছানা তো ঘন ঘন। তাই চেষ্টা করলেও অনেক কিছু পারা যায় না।

[৯] পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মো. সোহেল রানা ফেইসবুকে লিখেছেন, ব্যারাকে বা পুলিশ লাইনসে চিরাচারিতভাবে অল্প পরিসরে অনেককে থাকতে হয়। আমরা চেষ্টা করেছি, সেখানে যারা থাকেন। তাদের সামাজিক দুরত্ব বাজায় রাখার জন্য। তা আমরা করেছিও স্বাস্থ্য বিধি মেনে থাকার জন্য। তারপরও পেশাগত কারণে বাড়তি কিছু ঝুঁকি থেকেই যায়। এই কারণে বাংলাদেশ পুলিশের সংক্রমণের হার একটু বেশি। যেহেতু আমাদের ঝুঁকি বেশি, আমরা ঝুঁকি নিচ্ছিও।

[১০] পুরান ঢাকার চকবাজার থানায় ১৫ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে সবার আগে আক্রান্ত হয়েছেন এসআই লোকমান হোসেন। তিনি বলেন, খুবই সাবধান ছিলাম। আমার যতটুকু মনে হয়, বেগমবাজারের একটি ঘর থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ে কেরানীগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সেই তথ্য পুলিশের কাছে গোপন রেখেছিল। লোকমান বলেন, আমার বাসা কেরানীগঞ্জে। প্রতিদিন চকবাজার থানায় ডিউটি শেষ করে একা নৌকায় যাওয়ার সময় ভাড়ার টাকা আগে থেকে ভাংগিয়ে রাখতাম, যাতে মাঝির কাছ থেকে কোনো টাকা না নিতে হয়। কিন্তু সেই আমিই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলাম। বর্তমানে সুস্থ্ হয়েছেন এসআই লোকমান। পরপর ২বার তার নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে।

[১১] কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ পুলিশ সদস্য। পুলিশ সদরদপ্তরের দিক-নির্দেশনার বিষয়ে ওই থানার ওসি শাহ জামান বলেন, অনেকগুলো নির্দেশনা ছিল। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তাদের সচেতন করেছি। কিন্তু তারপরও আক্রান্ত হচ্ছেন। অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, কালীগঞ্জ এলাকায় ৩ ফুট দূরত্ব থাকার কথা থাকলেও মানুষজন গা-ঘেঁষে চলাচল করে।

[১২] করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেরা ওঠা পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখার এসআই কামাল হোসেন বলেন, পরিপূর্ণ পিপিই পরার পরও কীভাবে যে আক্রান্ত হলাম, বুঝতে পারছি না। থাকতেন পুলিশ সদর দপ্তরের উল্টো দিকে ব্যারাকে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ক্যান্টিনে যাওয়া ও খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পিপিই পরেই অফিসে যেতেন হেঁটে। বিডিনিউজ২৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়