শিরোনাম
◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১০ মে, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ১০ মে, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

করোনা অবরোধ শিথিলীকরণ এবং কিছু কথা

ড. সেলিম জাহান : যে সব দেশগুলো আগামী দিনগুলোতে করোনা-অবরোধ শিথিলীকরণ কথা ভাবছে, তারা উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে নিয়ে নি¤েœাক্ত পদক্ষেপগুলো নিতে পারে : এক. অবরোধ শিথিলীকরণ একটি বিভাজিত লক্ষ্যভিত্তিক উপায়ে করতে হবে। সে বিভাজন খাতভিত্তিক, জনগোষ্ঠীভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক হতে পারে। যেমন, যে সব খাত সাধারণ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানে ভোগের জন্য অত্যাবশ্যকীয়, সেগুলোর অবরোধ আস্তে আস্তে শিথিল করা যেতে পারে। রপ্তানি পণ্য খাতের কথাও বিবেচ্য। এ সব ক্ষেত্রে সামাজিক জনদূরত্ব ব্যাপারটি মানার বিষয়টি মাথায় রাখা যায়। তেমনিভাবে এ জাতীয় শিথিলীকরণের প্রথম সুবিধাভোগী হতে পারে শিশুরা। যেহেতু করোনার সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং যেহেতু মুক্ত পরিবেশে তাদের আসাটা খুব জরুরি, তাই শিথিলীকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়েছে।
দুই. অবরোধ শিথিলীকরণের দু’টো দিক আছে। অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও সামাজিকতার কার্যক্রম পুনরাম্ভ। বলার অপেক্ষা রাখে না, অবরোধ শিথিলীকরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে প্রথমটি। সুতরাং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলেও রেস্তোরাঁ, শুঁড়িখানা, সামাজিক জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখা প্রয়োজন, যেমনটা কিনা নিউজিল্যান্ড করছে। এর কারণ হচ্ছে ঝুঁকি নিয়েও অবরোধ শিথিল করার পেছনে যে যুক্তি সবলভাবে কাজ করছে, তা হচ্ছে অর্থনৈতিক চাকা আবার সচল করার। সুতরাং অবরোধ শিথিলের ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক অর্থনৈতিক কর্মকা-কেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। সন্দেহ নেই, রেস্তোরাঁ খুলে দেওয়ার সঙ্গে অর্থনীতি-সম্পৃর্কতা থাকলেও সামাজিক জনদূরত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কারণে সেগুলো খোলার ব্যাপারে আরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। তিন. অবরোধ শিথিল করলেই দরিদ্র মানুষের খাদ্য সংকট, অর্থের ঘাটতি কিংবা কর্মসংস্থানের সমস্যার তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান হয়ে যাবে না। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও সহায়তার প্রয়োজন হবে। স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদান করছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সেখানে মূলধারার কাজ করছে। অবরোধ শিথিল করা মাত্র অর্থনীতি আপনাআপনি চাঙ্গা হয়ে উঠবে না। তার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার প্রয়োজন হবে। নীতিমালা, অর্থায়ন, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি কার্যক্রম অতীব প্রয়োজনীয়। সরকারি প্রণোদনার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ক্ষুদ্র কৃষক, ক্ষুদ্র ও মধ্যম শিল্পেদ্যোক্তা, প্রান্তিক শ্রমিক।
চার. মনে রাখা প্রয়োজন পর্যায়ক্রমে করোনা অবরোধ শিথিলীকরণের কারণ স্বাস্থ্যগত নয়, সেটা অর্থনৈতিকও। ধীরে ধীরে শিথিলীকরণের পক্ষে স্বাস্থ্যগত যুক্তি হচ্ছে যে এর ফলে সংক্রমণের বিস্তারের রাশ টেনে ধরা যাবে। কিন্তু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি যুক্তিসঙ্গত। ধাপে ধাপে অবরোধ শিথিল হলে অর্থনৈতিক কর্মকা-ও অনুক্রমনিকভাবে করা যাবে। সেই সঙ্গে শুরু করে দেওয়া কর্মকা- থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা অন্য সব অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্মে কাজে লাগানো যাবে। পাঁচ. করোনা অবরোধ শিথিলীকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক হচ্ছে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ভয়। শিথিলীকরণের সব ধাপ, সব স্তর, সব পর্যায় অত্যন্ত সতর্কভাবে বিবেচনা করতে হবে যাতে দ্বিতীয় পর্যায় সংক্রমণের সম্ভাবনা ন্যূনতম হয়। এর কারণ হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হলে তার তীব্রতা, ক্ষতিকারক ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে। ১৯১৮ সালে স্প্যানিস ফ্লুর সময়ে সানফ্রান্সিসকোর ঘটনাই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। শেষের তিনটি কথা বলি। প্রথমত : প্রক্রিয়াটি হওয়া উচিত করোনা-অবরোধ শিথিলীকরণের, অবোরধ উত্তোলনের নয়। দু’য়ের মাঝে আমরা যাতে গুলিয়ে না ফেলি। দ্বিতীয়ত : এই শিথিলীকরণ প্রক্রিয়ায় বস্তুনিষ্ঠতা, সুবিবেচনা ও সতর্কতা যেন আমাদের চালিত করে এবং তৃতীয়ত : দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ সর্বতোভাবেই পরিত্যাজ্য। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়