শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ০৯ মে, ২০২০, ১১:৩২ দুপুর
আপডেট : ০৯ মে, ২০২০, ১১:৩২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের রোজা এবং তার ধরণ

ইসমাঈল আযহার: [২] সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মাঝে রোজার (সওম) বিধান ছিলো। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে নূহ, ইবরাহিম, দাউদ, মূসা ও ঈসা (আ.) এর সম্প্রদায় রোজা বা সওম পালন করেছেন। শুধু তাই নয়, গ্রীক ও রোমানরা যুদ্ধের আগে রোজা পালন করতো, যাতে ক্ষুধা ও কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। খ্রিষ্টান পাদরি ও পারসিক অগ্নিপূজাকারী এবং হিন্দু যোগী ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও রোজা পালনের বিধান ছিলো।

[৩] পারসিক ও হিন্দু যোগীদের রোজার ধরণ ছিলো- তারা রোজা অবস্থায় মাছ, গোশতসহ যেকোনও প্রাণীর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকতো। তবে বিভিন্ন ফল ও সামান্য পানীয় গ্রহণ করতো।

[৪] অন্যদিকে পূর্তিপূজাকারী ঋষীরা রোজার ব্যাপারে এতোটাই কঠোর ছিলো যে, সবকিছু খাওয়া ও পান করা থেকে বিরত থাকাসহ তারা স্ত্রী সহবাস থেকেও বিরত থাকতো। তারা সারা বছর রোজা পালন করে আত্মাকে কষ্ট দিয়ে পবিত্রতা অর্জনের সাধনা করতো। প্রাচীন চীনা সম্প্রদায়ের লোকেরাও একাধারে কয়েক সপ্তাহ রোজা পালন করতো।

[৫] জাহেলী যুগে নক্ষত্র পূজাকারীদের মধ্যেও রোজা পালনের প্রথা চালু ছিলো। তারা খাওয়া, পান করা ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকতো এবং ত্রিশটি রোজা পালনের পর ঈদুল ফিরত উপযাপন করতো।

[৬] বেদ অনুসারে ভারতের হিন্দুদের মধ্যেও ব্রত অর্থাৎ উপবাসের প্রথা রয়েছে। প্রত্যেক হিন্দি মাসের ১১ তারিখে ব্রাহ্মণদের ওপর একাদশীর উপবাসের বিধান রয়েছে। ব্রাহ্মণরা কার্তিক মাসের প্রত্যেক সোমবার উপবাস করেন। হিন্দু যোগীরা কখনও ৪০ দিন পানাহার থেকে বিরত থেকে ৪০ ব্রত পালন করেন। হিন্দু মেয়েরা স্বামীদের মঙ্গল কামনায় কার্তিক মাসের ১৮তম দিনে ‘‘কারওয়া চাওত’’ নামে উপবাস থাকেন।

[৭] বৌদ্ধ ধর্মে রোজা বা উপবাস থাকার প্রথা আছে। তারা চন্দ্রমাসের upisata মাসে ১, ৯, ১৫ ও ২২ তারিখে ৪ দিন উপবাস থাকেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ গুরুরা দুপুরের খাবারের পর থেকে সব ধরণের খাদ্য থেকে বিরত থেকে সংযম ও শারীরিক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মংগোলীরা প্রতি ১০ দিন ও যারাদাশতিরা প্রতি ৫ পর পর রোজা বা উপবাস পালন করতো।

[৮] নবী (স.) এর যুগে মুশকিকরাও রোজা পালন করতো। কুরাইশদের ভেতর আরবি মহরম মাসের ১০ তারিখে রোজা পালনের প্রথা ছিলো।

[৯] ইসলাম ধর্মে রোজা: আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর সওম তথা রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ওপর।

[১০] ইসলাম ধর্মে রোজা হলো- সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরণের খাবার ও পানীয়সহ স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা। সেহরি খাওয়া ইসলামিক শরিয়াতে রোজার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইসলামে রমজান মাসে রোজা পালন ফরজ ও অন্য মাসে রোজা পালন মুস্তাহাব।

[১২] রোজা, সওম, উপবাসের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে যে বিষয়টি সামনে আসে সেটি হচ্ছে সংযম। মূলত সংযম ও আত্মশুদ্ধি মাধ্যমে যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষেরা প্রভূর নৈকট্য অর্জনের লক্ষে সওম পালন করে আসছে। প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সওমের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করা।
সূত্র: ফিহরাসাত নবম খন্ড, সূরা বাকারা, রমজান ওমা বা’দা গ্রন্থ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়