শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৯ মে, ২০২০, ০৮:৩৯ সকাল
আপডেট : ০৯ মে, ২০২০, ০৮:৩৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আসুন শুধু ফেসবুকে সমালোচনা না করে, শপিং বর্জন করে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই

প্রভাষ আমিন : ২৬ মার্চ থেকে দেশজুড়ে ‘সাধারণ ছুটি’ চলছে। শুরু থেকেই আমি বলছিলাম, ‘সাধারণ ছুটি’ টার্মটিই বিভ্রান্তিকর। সবাই ছুটির আমেজেই যেন আছে। সরকার ছুটি দিয়েছিলো ঘরে থাকার জন্য। কিন্তু মানুষ দলে দলে বাড়ি ফিরেছে, উৎসবের আমেজে প্রতিদিন বাজারে গেছে। সাধারণ ছুটি ৪০ দিন পেরিয়েছে। সরকার যদি এই ৪০ দিন সত্যি সত্যি লকডাউন কার্যকর করতে পারতো, তাহলে নিশ্চয়ই এখন আমরা শিথিলের দিকে যেতে পারতাম। কিন্তু কেন জানি না, সরকার শুরু থেকেই পুরো বিষয়টায় সফট ছিলো। মানুষকে ঘরে রাখতে কখনোই সরকার কঠোর হয়নি। আইন প্রয়োগ করেছে, কিন্তু বলপ্রয়োগ করেনি। কেন? সমালোচনার ভয়ে? কিন্তু জনগণের স্বার্থেই সরকারের কঠোর হওয়া উচিত ছিলো। সরকারের নরম থাকার সুযোগে মানুষ দলে দলে বাড়ি গেছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে মালিকরা পিংপং খেলেছে। বিকালে অলিতে গলিতে ছিলো ‘ভাললাগে না’ গ্রুপের দাপট। এমনকি জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগমের মতো অবিশ্বাস্য ঘটনাও ঘটেছে এই বাংলাদেশে। এভাবে করোনার বিস্তার ঘটেছে দেশজুড়ে। অথচ বাস্তবতা হলো সাধারণ ছুটিকে অল্প সময়ের জন্য হলেও লকডাউন, ইমার্জেন্সি বা কারফিউতে উন্নীত করা দরকার ছিলো। ‘সাধারণ ছুটি’র সফট টার্মে মানুষ বিষয়টা ঠিক উপলব্ধি করতে পারছে না। অথচ এই সময়েই সরকার ধাপে ধাপে ছুটি শিথিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ১০ মে থেকে শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখি ফেসবুকে সমালোচনার সুনামি। সমালোচনার অবশ্য কারণও আছে। আপনি একদিকে বলবেন ঘরে থাকুন, আবার শপিংমলও খুলে দেবেন, তা তো হয় না। তবে সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি আমাদের হাতে আরেকটা অস্ত্র আছে, শপিংমলে না যাওয়া। তাহলেই সরকারের উচিত শিক্ষা হবে। আর এবার চারদিকে যে অভাবের পদধ্বনি, তাতে একটা ঈদ না হয় আমরা নতুন কাপড় ছাড়াই পার করি। ঈদের জন্য রাখা টাকাটা গরিব মানুষকে দিন। বিশ্বাস করুন, ঈদের চেয়ে আনন্দ বেশি হবে, পুণ্যও হবে।
আসুন শুধু ফেসবুকে সমালোচনা না করে শপিং বর্জন করে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই। সরকার কিন্তু আপনাকে জোর করে ধরে শপিংমলে নেবে না। ইতোমধ্যেই বসুন্ধরা শপিংমল সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে তারা এখনই মল খুলবে না। শুরু থেকেই আমি সর্বাত্মক লকডাউনের পক্ষে ছিলাম। সেটা পুরোপুরি না হলেও ধাপে ধাপে সরকার অনেক কিছুই কমিয়ে এনেছিলো। এমনকি অনেক ঝুঁকি নিয়েও ৬ এপ্রিল থেকে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধরনের উপাসনালয় বন্ধ রাখা হয়। বাংলাদেশের জন্য মসজিদ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অবশ্যই সাংঘাতিক স্পর্শকাতর। কিন্তু তাও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সেটা করতে হয়েছে। তবে মসজিদ পুরোপুরি বন্ধ না করে সাধারণ নামাজে ৫ জন, জুমার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জনের জামাতের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে শর্ত হলো বাইরে থেকে কেউ এই জামাতে অংশ নিতে পারবে না। শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমরাই এই জামাতে অংশ নেওয়ার কথা। রমজান আসার পর তারাবির নামাজে জামাতে আরও ২ জন হাফেজকে জামাতে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। মানে হলো তারাবির জামাত হবে সর্বোচ্চ ১২ জন। কিন্তু ৫ জন হোক, ১০ জন হোক আর ১২ জন, কারও কিন্তু বাইরে থেকে যাওয়ার কথা নয়। অথচ এই নিয়ম মানা হয়নি। ইমাম ছাড়া বাকি সবাই বাইরে থেকে গিয়ে জামাতে অংশ নিয়েছেন। গ্রামের দিকে অনেকেই জামাতে নামাজ পড়েছেন। যিনি বেশি প্রভাবশালী তিনিই জামাতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। এ নিয়ে মসজিদের ইমামরা খুব বিপদে ছিলেন। মসজিদে এসেও জামাতে অংশ নিতে না পারা নামাজীরা তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতো। তাদের সেই বিপদ কেটেছে। মসজিদও খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব কিছু খুলে দেওয়ার পর শুধু মসজিদে জামাত বন্ধ রাখার কোনো মানেই হয় না। বরং সামনে যে ঝুঁকি, তাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। তার চেয়ে বড় কথা ঝুঁকিতেও সমতা থাকা দরকার।
আমার কাছে নিরাপত্তাটাই সবার আগে। মানুষের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। তবে খোলাই যখন হচ্ছে তখন আর বৈষম্য করে লাভ কী। আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে দেওয়া হোক। করোনার সঙ্গেই হোক আমাদের বসবাস। করোনার সঙ্গে লড়াই হবে। যে জিতবে জিতবে, যে হারবে হারবে। যার যার নিরাপত্তা তাকেই নিশ্চিত করতে হবে। বাস্তবতা মেনে সরকার আস্তে আস্তে সব খুলে দেবে। কিন্তু কোথায় যাবেন, কী করবেন সে সিদ্ধান্ত আপনার। আপনার নিজের জীবন নিরাপদ রাখার দায়িত্বও আপনার। সরকারকে গালি দেওয়ার আগে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। সরকারকে গালি দিলেই করোনা দূরে থাকবে না। ঈষৎ সংক্ষেপিত। লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়