শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৭ মে, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ০৭ মে, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দানের কোনো ধর্ম বা রাজনীতি থাকতে পারে না

কামরুল হাসান মামুন : সকালবেলা (৫ মে) ফেসবুক খুলেই জানতে হলো বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার পদ থেকে সরে যাবার। এই সংবাদ পড়ার পর কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলাম না। করোনা যখন আসি আসি করছে তখন থেকে দেখেছি গণপনে জীবাণুমুক্তকরন, সমাজের সকল শ্রেণির জন্য আহার বিতরণ, চলপথে পথকের ক্ষুধা নিবারণ, শহরের রাস্তা জীবানছিটানো কিংবা রাস্তার অসহায় জীব কুকুবিড়ালকে খাওনো ইত্যাদিতে বিদ্যানন্দ-নরফুধহড়হফড় কাজ করে মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছে। এইরকম আরেকজনের নাম শুনেছি চন্দ্র নাথ। অত্যন্ত অত্যন্ত দরিদ্র ঘর থেকে দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে জীবনে সফল হয়ে বাংলাদেশের দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছে। চন্দ্র নাথ ফান্ডরাইজার নামে পেজ খুলে বেশ অংকের ফান্ড তুলে করোনা যুদ্ধে ডোনেট করেছেন।
শুনছি বিদ্যানন্দের কিশোর কুমার দাশের ধর্ম পরিচয়ের দিকে আঙ্গুল তুলেছে এক পাল মৌলবাদী। শুনছি পেজে গিয়ে অসভ্য বর্বররা নাকি ক্রমাগত গালি দিচ্ছে, হিন্দু প্রতিষ্ঠাতাকে অপমান করতে চাইছে এবং এর ফলে কিশোর কুমার দাস সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার পদ থেকে সরে যাবার, যাতে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকা- বাধাগ্রস্থ না হয়, কোনো ধরনের প্রশ্নের মুখে না পড়ে। একই সাথে তিনি বিদ্যানন্দ নামটির ব্যাপারটি ক্ল্যারিফাই করেছেন এই মৌলবাদীদের উদ্দেশ্যে। অর্থাৎ সমস্যা কেবল কিশোর কুমার দাশে না। সমস্যা স্বয়ং ‘বিদ্যানন্দ’ নামেও। এতোদিন কোনো সমস্যা হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানে যারা ডোনেট করেছেন তাদের অনেকেই মুসলমান আর বিদ্যানন্দে যারা কাজ করে তাদেরও ৯০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবক মুসলমান। স্বাভাবিক ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে ৯০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবক হবে এবং এই স্বেচ্ছাসেবকদের ওখানে কাজ করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। তাহলে বুঝতে হবে বিদ্যানন্দ ও কিশোর কুমার দাসকে নিয়ে সমাজের খুব ক্ষুদ্র অংশের মানুষের সমস্যা। আপনার পদত্যাগ করার এই সিদ্ধান্ত ৯০ শতাংশ মানুষকে হারিয়ে দেবে। তাই আমার অনুরোধ আপনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন। প্লিজ, আমাদেরকে হারিয়ে দেবেন না। করোনা পরিস্থিতিতে কারা সমাজের গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়িয়েছে? একটু খোঁজ নিলেই জানবেন প্রগতিশীল ধারার রাজনীতি যারা করে তারা এবং প্রগিতিশীলতাকে যারা ধারণ করে তারা। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে তাদের ব্যানারে কোনো স্বেচ্ছাসেবকদের দেখতে পাচ্ছেন? যারা সরকারি দল করে তারাও তেমন জোরালোভাবে মাঠে নেই। বরং তারা চাল চুরি ও ত্রাণ চুরিতে ব্যস্ত। কিন্তু আমি বেশ কয়েককটি বাম অথবা বাম ধারার মানুষদের দেখেছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। দানের কোনো ধর্ম বা রাজনীতি থাকতে পারে না। দানের সাথে পুণ্য কামানোর লোভও থাকতে পারে না। তারপরও আমি লক্ষ্য করেছি মুসলমানরা দান বলতে মসজিদ, এতিমখানা ইত্যাদিতে দান বুঝে। এখন অনেক মুসলমান অনেক ধনী হয়েছে কিন্তু তারা স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় দেয় না। কেন জানি মুসলমানরা দানের সাথে প্রাপ্তিকে মিলিয়ে ফেলে। দানের সাথে পুণ্য এবং পূণ্যের সাথে বেহেস্ত মেলানোতে মসজিদ, এতিমখানাতে দানের বাহিরে আমরা ভাবতে পারি না। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়