ডেস্ক রিপোর্ট : আজ থেকে শুরু হলো মাগফিরাত লাভের পালা। আজ এগারো রমজানুল করীম। আলহামদুলিল্লাহ ইতোমধ্যে আমাদের নিকট থেকে বিদায় নিয়েছে রহমতের প্রথম দশটি দিবস। আজ থেকে শুরু হলো আল্লাহর অশেষ দয়ার ভাণ্ডার থেকে মাগফিরাত লাভের পালা।
নবীয়ে করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত রমজান শরীফের রোজা রাখে। তার পূর্বের সমস্ত গোনাহসমূহকে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন মাফ করে দেন। এখানে দুটি শর্ত দেয়া হয়েছে, যারা এ দুটি শর্ত পালন করবে তাদের গোনাহ আল্লাহপাক মাফ করে দিবেন। এক. ঈমান থাকতে হবে, ঈমানের অর্থ বিশ্বাস স্থাপন, আঁকড়ে ধরা, বোঝা। অর্থাৎ আমি যে, একজন মুমিন হিসেবে মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি ঈমান এনেছি। সেই ঈমানের পেছনে কতটুকু মেহনত করেছি। আমার ঈমান কতটুকু মজবুদ, আমার ঈমান সঠিক আছে কি না তা বুঝে নেয়া।
দুই. ইহতিসাব অর্থ মনে মনে হিসাব করে দেখতে হবে যে, মূল শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আল্লাহপাক রোজাকে ফরজ করেছেন, সেই মূল শিক্ষাটা আমি গ্রহণ করছি কিনা। অর্থাৎ রোজার মাসে দিনের বেলায় যেমন, আল্লাহর হুকুম নেই বলেই খানাপিনা ও স্ত্রীদের সাথে সহমিলন থেকে দূরে থাকি। ঠিক তেমনি সমাজের যাবতীয় ভুল বা আল্লাহ বিরোধী আইন কানুন যদি পরিত্যাগ করে আল্লাহর আইন কানুন মেনে চলার মত মন তৈরি করতে না পারি তাহলে এ রোজায় কাজ হবে না। মানুষ যা খায় তার থেকে যদি পরিপাক যন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্যে প্রাণ বা খাদ্যের মধ্যে যে ভিটামিন মানুষের দেহের ক্ষয় পূরণ ও দেহকে সুস্থ রাখারমতো যে উপাদান আছে তা বের করে নিয়ে শীরের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে অক্ষম হয়, তবে ঐ খাদ্যে যেমন দেহের উপকার হয় না, ঠিক রোজার মৌলিক শিক্ষা যদি সমাজ জীবন বা সামগ্রীক জীবনের সর্বত্র কার্যকরী না হয় তবে ঐ রোজার কোনো ফায়দা হবে না।
এসব কথা হিসেব করে দেখার নামই হচ্ছে ইহতিসাবের সাথে রোজা রাখা। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীয়ে করীম (সা.) বলেছেন যে, আদম সন্তানের প্রত্যেকটি নেক আমলের সওয়াব দশগুণ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহপাক বলেন তবে রোজা ব্যতীত। কারণ রোজা আমার জন্যই হয়ে থাকে, তাই এর বদলা আমি নিজেই দিব। যেহেতু বান্দা আমার জন্যই তার কামনা বাসনা ও খানা-পিনা ত্যাগ করেছে (মুসলিম শরীফ) হযরত আবু উমামা বাহিলী রা. থেকে বর্ণিত যে, নবীয়ে করীম সা. বলেছেন যে, আমি শুয়েছিলাম এমতাবস্থায় আমার নিকট দুজন ফেরেশতা আসলেন। তারা আমাকে সাথে নিয়ে একটি পাহাড়ের নিকট গেলেন।
তারা উভয়েই আমাকে বললেন পাহাড়ে আরোহন কর। আমি বললাম তাতে আরোহন করা আমার জন্য একটু কঠিন হবে। তারা বললেন আমরা আপনার জন্য তা সহজ করে দিব। তখন আমি সেখানে আরোহন করলাম, এমনকি আমি পাহাড়ের চ‚ড়ায় পৌঁছে গেলাম। সেখানে আমি কঠিন চিকারের আওয়াজ শুনতে পেলাম।
আমি জিজ্ঞেস করলাম এ আওয়াজ কিসের তারা আমাকে বললেন এটা হলো জাহান্নামিদের কান্নাকাটির আওয়াজ। অতঃপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে আমি কিছু লোক উল্টো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখলাম যাদের মুখ ফাটা এবং রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? তারা আমাকে বললেন এরা ওইসব লোক যারা রোজার দিন, সময় হওয়ার আগেই ইফতার করে নিতে অর্থাৎ তারা যথানিয়মে রোজা পালন করত না। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন আমাদের যথানিয়মে রোজা রাখার তৌফিক দান করুক।
সূত্র-মানবকণ্ঠ