ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা থেকে বগুড়া এসে করোনা পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ খবর শুনে মুঠোফোন বন্ধ করে বাড়ি থেকে পালান এক ব্যক্তি। শুক্রবার জানা গেল তার স্ত্রীও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত।
বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির স্ত্রী শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের একজন নার্স। শুক্রবার হাসপাতালের ল্যাবে ১৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শুধুমাত্র তিনিই করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হন।
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ল্যাবে বগুড়ার ১২৪টি, জয়পুরহাটের ৬৩টি এবং সিরাজগঞ্জ থেকে আসা একটি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শুধু ওই নার্সেরই করোনা পজিটিভ আসে।’
করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ওই নার্সের স্বামী শহরের ফুলতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি ঢাকায় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। গত ১০ এপ্রিল বগুড়া শহরের বাসায় আসেন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে ফিরে গত ২৬ এপ্রিল শজিমেক হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দেন ওই ব্যক্তি। ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় পাওয়া প্রতিবেদনে জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত। পরে বিষয়টি তাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানানো হয়। তারপরই বাড়ি থেকে পালান তিনি।
গত বুধবার রাত নয়টার দিকে ওই ব্যক্তিকে বগুড়া সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে আইসোলেশনে নেওয়া হয় বলেও জানান ডেপুটি সিভিল সার্জন। তিনি আরও বলেন, ‘আইসোলেশনে আনার আগে সদর উপজেলার ওই গ্রামে তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তিনি যে বাড়িতে ছিলেন, সেটিসহ আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করে দেয় প্রশাসন। এমনকি শহরের ফুলতলা এলাকায় ওই ব্যক্তির ভাড়া বাসা খুঁজে সেটিসহ আশেপাশের মোট চারটি বাড়িও লকডাউন করা হয়।’
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়, জানান বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান।
বগুড়া স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ঢাকা থেকে ফিরে কোয়ারেন্টিনে থাকলে তার স্ত্রী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতেন না। তার স্ত্রীও করোনা পজিটিভ হওয়ায় জটিলতা বাড়ল। তিনি হাসপাতালে অন্য ষ্টাফ ছাড়াও রোগীদের সংষ্পর্শে এসেছেন। সবার নমুনা পরীক্ষা করা হবে।
ওই নার্সের সংষ্পর্শে আসা পাঁচ চিকিৎসক ও নার্সকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই নার্সের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অন্য ষ্টাফেদরও নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন শজিমেকের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ।
আপনার মতামত লিখুন :