শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ০১ মে, ২০২০, ০৬:৩৭ সকাল
আপডেট : ০১ মে, ২০২০, ০৬:৩৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আলহামদুলিল্লাহ, আমি যেভাবে সুস্থ হলাম!

রাজিব হাসানের ফেসবুক থেকে :   রমাদ্বান আসার দুইদিন আগে হঠাৎ জ্বর। বিকালের দিকে মাত্রা খানিকটা বেড়ে গেলেও সহনীয় পর্যায়েই ছিল। কিন্তু এই সময়ে জ্বর মানেই তো চিন্তার বিষয়। আর জ্বরটাও কেমন যেন, এরকম জ্বর এর আগে কখনও অনুভূত হয়নি। একবার আসে, কিছুক্ষণ থাকে আবার চলে যায়। যখন আসে তখন কেমন যেন অস্বস্তি লাগে। হাল্কা জ্বর তবুও কেমন যেন অস্বস্তিকর।
পরের দিন জ্বরের সাথে যোগ হল গলা ব্যাথা আর শরীর ব্যাথা। গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করলাম। মধু, কালোজিরা, আদা মিশ্রিত গরম পানি খেলাম। দিনে কয়েকবার এরকম করলাম। কিন্তু না, গলা ব্যাথা কমার কোন লক্ষণ নেই।

.
রমাদ্বানের প্রথম দিন থেকেই পিঠ, মাংসপেশী, কোমর, পা, মাথা একে একে ব্যথা শুরু হল। সলাতে রুকু দেওয়ার সময় কোমর বাঁকা করতেও বুড়োদের মত কষ্ট হতে লাগল। রুকু থেকে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে উঠত। সিজদা দিলে ও সিজদা থেকে উঠলেও মাথা ঝিমঝিম করত। সলাতের পর নিজে নিজে রুকিয়া করলাম। এই ঝাঁড়ফুকে জ্বর চলে যেত। কিন্তু কিছু সময় পর আবার চলে আসত। আমাকে দুর্বল করে ফেলত।।

.
ইফতারি খাওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম মুখে কোন স্বাদ নেই। ভাবলাম, জ্বর তাই হয়ত মুখের রুচি চলে গেছে। কিন্তু না, জিহবার রংটাও পরিবর্তিত হয়ে গেছে। কেমন যেন ফ্যাকাশে লাগছে দেখতে। সাথে ব্যথাও করছে। এরপরের দিন যোগ হল খুশ খুশ কাশি। ও কাশে প্রাণ নেই। শুকনা একদম। মাঝে মাঝে হাল্কা কফ আসে।
.
তাহলে কি করোনায় আক্রান্ত হলাম? রমাদ্বানের বাজার করে গিয়ে করোনা আমদানী করে নিয়ে আসলাম? কিন্তু আমার তো কোন শ্বাসকষ্ট তো নেই, দম বন্ধও তো হয়ে আসছে না, বমি নেই, ডাইরিয়া নেই। নাকি এগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে। করোনা চেকার এ্যাপে নিজের অবস্থা উপস্থাপন করে জানতে চাইলে তারা বলল, এই সিম্পটম দেখে বোঝা যাচ্ছে, আপনি করোনা ভাইরাস মাইল্ড টাইপ - এ আক্রান্ত হয়েছেন।
.

এই বিষয়ে বলে রাখা ভালো, করোনা ভাইরাসে তিন ধরনের সিম্পটম প্রকাশ পায় -
১। কোন লক্ষণ প্রকাশ না পেয়েই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
এরকম কেইস ৮০% এর উপরে।
২। কারো কারো মাইল্ড বা মৃদ লক্ষণ প্রকাশ পায়। ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট নিলে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
৩। সিভিয়ার কেইজ। এই কেইজে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যায়।
.

আলহামদুলিল্লাহ! আমি ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট হিসেবে ইফতারির পর ও সাহরীতে গরম পানি পান করতাম, চা খেতাম। আদা, লেবু, কালোজিরা, গোলমরিচ পানিতে দিয়ে গরম করতাম। ঐ গরম পানি একটা পাত্রে ঢেল তাতে তিনবার সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, তিনবার তিন ক্বুল ও সকাল বিকালের নিরাপত্তার দু'আগুলো পাঠ করে ফুঁক দিতাম। এরপর মাথার ওপর তোয়ালে দিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে ঐ পানির ভাপ নিতাম। এতে সাময়িক আরাম লাগলেও পুরোদমে গলা ব্যথা বা শরীর ব্যথা ও জ্বর কমত না।

.
হঠাৎ মনে পড়ে গেল যাইনাব আপার কথা। এ মাসের শুরুতে যাইনাব আপা সিভিয়ার পর্যায়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি একটি রেসিপি বানিয়ে খেয়ে একদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। ভাবলাম আমিও বানাবো, আমিও খাবো ইন শা আল্লাহ!

রেসিপির জন্য নিলাম -
১। কালোজিরা (দুই চামচ)
২। জিরা (দুই চামচ)
৩। লবঙ্গ (দুই চামচ)
৪। মেথি (দুই চামচ)
৫। যয়তুন তেল (দুই চামচ)
৬। মধু (দুই চামচ)

কালোজিরা, জিরা, মেথি ও লবঙ্গ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করলাম আর মধু আর যয়তুন ঢেলে পেষ্ট বানিয়ে নিলাম। পেষ্ট হয়ে এলে একটি পাত্রে ঢেলে রেখে দিলাম। এরপর ইফতারির পর কিবলামুখী হয়ে বসে পাত্রটি হাতে নিয়ে তাতে -
৭বার সূরা ফাতিহা
৭বার দরূদ
৭বার আয়াতুল কুরসি
৩ ক্বুল ৩ বার করে,
সকাল বিকালের নিরাপত্তার দুআগুলো পড়ে তাতে ফুঁক দিলাম। এরপর এই দু'আটি "ওয়া ইযা মারিদ্বতু ফাহুয়া ইয়াশফীন (আর আমি যখন অসুস্থ হই, তিনিই আমাকে সুস্থ করেন।)" পড়ে চামচে তুলে অল্পে অল্প করে জিহবাতে নিয়ে আস্তে আস্তে গিলতে লাগলাম। এভাবে দুই চামচ খেলাম।
_

সুবহানাল্লাহ! যাইনাব আপার এই ওষুধ খাওয়ার আধাঘন্টার মধ্যে বিদায় নিল খুশ খুশ কাশি। গলা ব্যথাও খানিকটা কমে এল। বিদায় নিল জ্বর। আরামে ঘুমালাম, আলহামদুলিল্লাহ। সাহরীতে খেলাম আরো দুই চামচ। সকালে শরীর একদম হাল্কা লাগছিল। কোন ব্যথা নেই শরীরে।
.
গতকাল ইফতারি খাওয়ার সময় দেখলাম মুখের রুচি ফিরে এসেছে। তৃপ্তি করে ইফতারি খেলাম। দেখলাম জিহবা তার আগের রূপ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু জ্বরটা আর গলা ব্যাথাটা তখনও ছিল। সাহরীতে আরেক ডোজ খেলাম, তাতে ওষুধ শেষ হয়ে গেল। গতকাল সকাল থেকে আমার কোন জ্বর নেই কোন গলা ব্যাথা নেই। শরীরে কোন দুর্বলতা নেও। আমি একদম সুস্থ। পুরদোমে সুস্থ। ফালিল্লাহিল হামদ!
.

আল্লাহর কসম! একটুও বাড়িয়ে বলছি না। এভাবেই আমি দুইদিনে পুরোদমে সুস্থ হয়েছি। মহান আল্লাহ আমাকে সুস্থ করে দিয়েছেন।

এর বাইরে গত পরশু আর গতকাল ইফাতারির পর দুইটা করে কমলালেবু খেয়েছিলাম। আর সাহরীতে একগ্লাস গরম পানি, সাতটি আজওয়া খেজুর আর রাতে ঘুমাবার আগে ম্যাগি স্যুপ খেয়েছি, যে গুলো আমি আগে থেকেই খেতাম।
.
বাহ্যিক উপকরণ গ্রহণ ছাড়া আল্লাহর কাছে প্রচুর দুআ করতাম যেন রমাদ্বানটা অসুস্থতায় না কাটে। রুকিয়া করেছি নিজে নিজে। হাল্কা কিছু দান সদাক্বা করেছি।
.

আলহামদুলিল্লাহ! যাবতীয় হামদ ও সানা একমাত্র আল্লাহর যিনি অসুস্থ হলে আমাকে সুস্থতা দান করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়