স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : [২] জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এক কৃষকের ঘরে সপ্তাহ ধরে খাবার নেই, সরকারি কোন ত্রাণও জোটেনি তার ভাগ্যে। পরিবারের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাঁচার তাগিদে বাধ্য হয়ে তিনি ক্ষেতের আধা-পাকা ধান কাটছেন। একথা জানালেন শ্রীমঙ্গলের সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বর্গাচাষী কৃষক মছদ্দর মিয়া ।
[৩] তিনি বলেন, ‘সপ্তাহ ধরে ঘরে খাবার নাই। এক বেলা খাইলে আরেক বেলা উপোস থাকতে হয়। স্ত্রী ছেলে-মেয়ে না খেয়ে আছে তাই কাচা ধান কেটে যদি কিছুপাই তা দিয়ে চাল করে আমার পরিবার বাঁচাতে পারবো।’
[৪] জমিতে কি পরিমান ধান রোপন করেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এবছর জমি বর্গা(অন্যের জমি) নিয়ে প্রায় দেড় একর জমিতে বোরো ধান রোপন করেছি। এই ধান পাকলে হয়তো ২০ -৩০ মণ ধান ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু অভাবের কারণে কাজ কাম না থাকায় এখন বাধ্য হয়েই কাচা ধান কাটতেছি। এই ধান কাটলে ৮-৯ মণ ধান পাবো। এই ধান থেকে অর্ধেক ধান আবার জমির মালিককে দিয়ে দিতে হবে।’
[৫] তিনি জানান, কৃষি অধিদপ্তর থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাননি। কেউ আমদের কিছু দেয় না। কৃষি অফিস গেলে বলে আমাদের নাকি সাহায্য লাগবে না। অফিসের লোকজন বলে তোমরা কি ভাবে পাবে তোমাদেরতো কার্ড নাই। যাদের কার্ড আছে তাদের বীজ, সার দেয়া হয়। আর কৃষি অফিস থেকে মেম্বার ও চেয়্যারম্যানের কাছে গেলে বলে কার্ড শেষ হয়ে গেছে। পরের বছর দিব। পরের বছর গেলে বলে কার্ড আসেনি।
[৬] উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে শ্রীমঙ্গলে ৯ হাজার ৪১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩৯৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ বেশি হয়েছে।
[৭] ওই কৃষকের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন বলেন, মাঠ পর্যায়ে যে অফিসার কাজ করেন অনেক সময় তাদের মিসটেক হয়ে যায়। যার ফলে অনেক প্রান্তিক কৃষকরা কার্ড পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। আগামীতে এধরণের কৃষকদের তালিকাভুক্ত করে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে কৃষি উপকরণ। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :