শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ০৮:৫৫ সকাল
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ০৮:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে লোকসঙ্গীত শিল্পী কাঙ্গালিনী সুফিয়ার

জনকণ্ঠ : অদৃশ্য ভাইরাসের প্রভাবে অসহায় মানুষদের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া। কোভিড-১৯-এর প্রভাবে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়েছেন পরাণের বান্ধব রে’ গান শুনিয়ে প্রাণপ্রিয় হওয়া এই শিল্পীও। ক্ষুধার জ্বালায় দিনের বেলায়ও যেন দেখছেন অন্ধকার। লাখো শ্রোতার হৃদয় রাঙানো এই বাউল শিল্পীর ঘরে এখন নেই খাবার। লোকজ সুরের মায়াজালে বাংলার পথ-প্রান্তর রঙিন করা শিল্পীর নেই ওষুধ কেনার পয়সা। দুই মাসের বেশি সময় আগে তিনি দোল পূর্ণিমায় ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়ায় গান গাইতে কুষ্টিয়ায় যান।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ভালো নাই, ফোন করছেন কেন, আপনি কি আমাকে কিছু সাহায্য করবেন। পারলে কিছু সাহায্য করেন। আমার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। এখন গান গাওয়ার মতো শারীরিক অবস্থাও নেই আমার। এখানে লালন ফকিরের আখড়ায় গান গাইতে এসেছিলাম। লকডাউনে কবলে পড়ে কুষ্টিয়ার জেলখানা মোড়ের এরশাদ নগরের আশ্রম পরিকল্পনার ৯/১০ নম্বর বাড়িতে ২ মাসের বেশি সময় ধরে আটকা পড়ে থাকায় নিজ গ্রাম রাজবাড়ি জেলার রামদিযার বসতভিটায় ফেরা হয়নি। এই খুপড়ি ঘরে অর্ধাহারে-অনাহারে কাটছে দিন। ঘরে কোন খাবার নেই। ২ সপ্তাহের বেশি সময় আগে কুষ্টিয়া ডিসি অফিস থেকে ১৩০ পরিবারের সঙ্গে আমিও কিছু চাল, ডাল ও আলু পেয়েছিলাম। সবই এখন ফুরিয়ে গেছে। আছে হৃদযন্ত্রের সমস্যাসহ নানা রোগ। পয়সার অভাবে ওষুধ কিনতে পারছি না। এই অবস্থায় আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও সাহায্য চাই। কুষ্টিয়ায় এখন যে ঘরে আছি সেটাও প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকেই পেয়েছিলাম। আমি তো চাইলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব না। কোথাও আমার কোন খবর দেখে তিনি যদি কোন সহায়তার উদ্যোগ নেন তাহলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যাব।

আলাপচারিতায় নিজের অপ্রাপ্তির কথা বলেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া। একুশে পদকপ্রাপ্তির আশা প্রকাশ করে বলেন, আবদুর রহমান বয়াতী এই পুরস্কার পেলে আমি কেন পাব না। তাকে মরণোত্তর পদক প্রদান করা হয়েছিল। মৃত্যুর পরে আমি কিছু চাই না। যদি কিছু পাওয়ার থাকে সেটা জীবদ্দশাতেই চাই। তাইলে কিছুটা ভাল থাকব এবং মরেও শান্তি পাব। এর আগে সরকারীভাবে কেবল শিল্পকলা একাডেমি পদক পেয়েছি।

কাঙ্গালিনী সুফিয়া জন্মেছিলেন হিন্দু পরিবারে। নাম ছিল অনিতা ঠেপি। পরবর্তীতে মুসলিম ধর্ম গ্রহণের পর নাম হয় সুফিয়া খাতুন। চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ারের দেয়া কাঙ্গালিনী’ উপাধিতে পরবর্তী সেই নামটি হয় কাঙ্গালিনী সুফিয়া।

১৯৬১ সালে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার রামকান্দি গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন লোকসঙ্গীতের এই শিল্পী। গ্রামের একটি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার মাধ্যমে মাত্র ১৪ বছর বয়সে শুরু হয় তার সঙ্গীতজীবন। এরপর ১৫ বছর বয়সে বিয়ে সুধির হালদার নামের এক বাউলের সঙ্গে। যদিও সে বিয়ে টেকেনি বেশিদিন। ১৯৭৮ সালে গ্রহণ করেন ওস্তাদ হালিম বয়াতির শিষ্যত্ব। সেই সময়ই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সুফিয়া খাতুন নাম ধারণ করেন। গান গাওয়ার পাশাপাশি নিজেও অসংখ্য গান লিখেছেন, সুরও দিয়েছেন নিজে। এসব গানের মধ্যে কোন বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই, আমরা নারী কত কষ্ট করি’ বুকের মধ্যে আগুন জ্বলে’ নারীর কাছে কেউ যাইও না’ অন্যতম। এছাড়া তার গাওয়া তুমুল শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে পরাণের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে। কণ্ঠ দিয়েছেন বেশকিছু চলচ্চিত্রের গানে। এছাড়াও অভিনয় করছেন দেয়াল, নোনাজলের গল্প শিরোনামের নাটকে। অনুলিখন : মাজহারুল ইসলাম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়