ইয়াসিন আরাফাত : [২] ত্রুটিপূর্ণ করোনার টেস্ট কিট নিয়ে একাধিকবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন মঙ্গলবার দাবি করেন, ভারতেই তৈরি হবে করোনা টেস্ট কিট। তার বলেন, ৩১ মে'র মধ্যে প্রতিদিন ১ লক্ষ করে কিট তৈরি হবে এ দেশেই। ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এই সময়
[৩] মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'মে মাস থেকে দেশেই আমরা আরটি পিসিইআর টেস্ট কিট তৈরি করব। গোটা প্রক্রিয়া একদম শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আইসিএমআর-এর অনুমতি পেলেই এই টেস্ট কিট তৈরি শুরু করা হবে। এতে আমাদের অন্য দেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। ৩১ মে-র মধ্যে প্রতিদিন আমরা ১ লক্ষ টেস্ট কিট তৈরি করতে পারব।'
[৪] এমাসের গোড়া থেকেই ৫ লক্ষেরও বেশি র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট ভারতে রফতানি করে চীনের দুই সংস্থা। পরে ভারত সরকার তা রাজ্যগুলোর মধ্যে সরবরাহ করে। আইসিএমআর ঘোষণা করেছিল, করোনা হটস্পটের মধ্যে বাস করা সমস্ত ব্যক্তির উপরেই এই পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু নতুন টেস্ট কিট ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ জানায় রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য। সেই অভিযোগ মেনেও নেয় আরসিএমআর।
[৫] এরপর উঠে আসে আরও ভয়ংকর তথ্য, চীনের একটি সংস্থার কাছ থেকে এই কিট আমদানি করেছে ম্যাট্রিক্স নামে একটি সংস্থা। এর জন্য তারা কিট প্রতি ২৪৫ টাকা দিয়েছে। অথচ, সেই কিটই ভারত সরকার ৬০০ টাকা দিয়ে কিনেছে রিয়েল মেটাবলিক্স এবং আর্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছ থেকে। তারাই ছিলো এই কিটের ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বে।
[৬] এরপর বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত নির্দেশ দেয়, খুব বেশি হলে ৪০০ টাকায় এই কিট বিক্রি করা যেতে পারে। অন্যদিকে একাধিক রাজ্য থেকে অভিযোগ আসার পর ওই কিটের ব্যবহারই গত সপ্তাহে বন্ধ করে দিয়েছে আইসিএমআর। এতে দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠে, কেনো তাহলে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্ট করা হলো।
[৭] তবে কিট আনার জন্য চীনকে অগ্রীম কোনও টাকা দেয়নি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, অতএব কিট ফেরতের ক্ষেত্রে ভারতের কোনও সমস্যা হবে না, এই ক্ষেত্রে কোনও আর্থিক ক্ষতিরও প্রশ্ন নেই, দিন তিনেক আগে এ তথ্য জানিয়েছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধন৷ সোমবার একই কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল৷ তবে এই খারাপ মানের কিট ব্যবহার করে যাদের পরীক্ষা হয়েছে তাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কিছুই বলা হয়নি৷
[৮] ভারতের অনেকেরই অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে দেশে কিট তৈরির কথা বলে আপাতত পরিস্থিতি ঘোরানোর চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন।
আপনার মতামত লিখুন :