সিরাজুম মুনির : ১. করোনা আক্রান্ত ক্রিটিক্যাল রোগীর সংখ্যা এতোই অধিক যে হাসপাতালে তিল ধারণের জায়গা নেই। অক্সিজেন সিলিন্ডার, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের ঘাটতিতে চিকিৎসা ছাড়াই শ্বাসকষ্টে কাতরাচ্ছে মানুষ, মারা যাচ্ছে একের পর এক। ২. এ রকম হাজারো মানুষ যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিন্তু পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ১ জন ছড়াচ্ছে ৩ জনের শরীরে, সেই ৩ জন ৯ জনে, সেই ৯ থেকে ২৭। এ রকমটা হয়ে আসছে বিগত দেড় মাস ধরে। গুণিতকহারে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা ইমার্জেন্সি নম্বরের ১৪ লাখ ফোন কল থেকে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যায়। এটা এই মুহূর্তে কী হারে বিস্তৃত হচ্ছে।
৩. মানুষ টেস্ট না করে, চিকিৎসা না পেয়ে হুটহাট এখানে সেখানে মরে যাচ্ছে। এখন অসংজ্ঞায়িত এই মৃত্যুর সংখ্যাটা দশকের ঘরে আছে। সেটি পৌঁছে যাচ্ছে শতক কিংবা হাজারের ঘরে, এ রকম সময়টা কীভাবে সামাল দেবে পরিবার, মানুষ, দেশ। ৪. দেশে নাকি এখন পর্যন্ত ৪০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন। এমনিতেই ডাক্তার, নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল, সব মিলিয়ে প্রায় ৮৫ হাজার জন। তারাই যদি ব্যাপকহারে সংক্রমিত হতে থাকেন, তখন চিকিৎসা দেবেন কারা? সেটার ব্যাকআপ হিসেবে আমরা কি কিছু ভেবেছি?
৫. মে মাসের মধ্যে সিঙ্গাপুরের অতি আশাবাদী গবেষণা অনুযায়ী যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমে, যদি করোনা আগামী দু’তিন মাসের জন্য জেঁকে বসে, যদি উচ্ছৃঙ্খলতার খেসারত দিতে গিয়ে লাখো মানুষ আক্রান্ত হয়, তবে দেশের মেরুদ- কী পরিমাণে ভেঙে যাবে। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কতোটুকু প্রস্তুত আমরা? ৬. এই দেড় মাসের মধ্যেই গরিব মানুষের যে হাহাকার, মহামারির ব্যাপকতায় সেটি কতোটা তীব্র হবে। কীভাবে সেই মানুষদের সহায়তা দেবে বিপর্যস্ত এক জাতি, যারা নিজের বাবা মাকেও ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে যেখানে-সেখানে, গ্রহণ করছে না মৃতদেহ, যেখানে কাউকে ছুঁয়ে যাচ্ছে না মানবিকতা। আমাকে ভাবায়, প্রতিনিয়ত। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :