এইচএম দিদার(দাউদকান্দি, কুমিল্লা) : [২] আপনি কী নদ বা নদীর কান্না শুনছেন? বলবেন নিশ্চয়ই শুনেন নি।শুনতে যদি মন চায় কৃষক বন্ধু,পরিবেশ সংগ্রামি, প্রাণি বন্ধু মতিন সৈকতের আদমপুরের যান। দাউদকান্দির আদমপুরের কালাডুমুর শুকিয়ে যাওয়া নদের তিনি কয়েক বছর যাবৎ কানপেতে কান্না শুনছেন। বুক চিতিয়ে দুঃখ শুনছেন।
[৩] আমি আপনি খাই খাই নিয়ে ব্যস্ত।আর মতিন সৈকতরা দেশ,পরিবেশ,প্রাণি ও কৃষক নিয়ে ব্যস্ত। মতিন সৈকতরা আছে বলেই আমরা শার্ট প্যান্ট, হাতে ঘরি ও চোখে কালো চমশা লাগিয়ে দিব্যি ঘুরি।
[৪]তিনি কতো বছর যাবৎ এ নদী বাঁচানো আন্দলোন করছেন তা না হয় নাই বলছি। নদী মাতৃক বাংলাদেশ, এ নদ হারিয়ে গেছে।যদি কালাডুমুর নদের স্রোত, প্রবাহ ফিরানো না যায়, বাঁচবে না দাউদকান্দির হাজার হাজার কৃষক। তাই সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে মতিন সৈকত বলেন, "কালাডুমুর নদ খনন না করা গেলে এখানকার কৃষকগুলো হয়ে পরবে কর্মহীন, ফলাতে পারবে না ফসল।
[৫]এই মানুষটি পাশে থাকে অসহায় কৃষকের।মানুষকে এতো সহজে আপন করে নেয়, খুব কাছাকাছি একেবারে হৃদয়ের কাছাকাছি মানুষকে তিনি আগলে রাখেন। তেমনি নদী, গাছ পাখি ও কৃষকদের ভালোবেসে নিজের ঘর সংসারের কথা ভুলে যান।অনেকটা কৃষকের জমিতে,মরা নদীর বুকেই বিছায়ে রেখেছে তার অর্ধেক জীবন। স্থানীয় খাল- নদী পূনঃখনন আন্দোলনের পুরোধা মতিন সৈকত-
[৬]"এই মূহুর্তে দরকার, খাল-নদী সংস্কার"। দেশের সবকটি খাল- নদী পূনঃখনন করে পূনঃর্জীবন দান করতে হবে এই শ্লোগান নিয়ে মতিন সৈকত ১৯৯০ সাল থেকে খাল-নদী পূনঃখনন আন্দোলন করছেন। তার অন্ঞ্চলের নদী কালাডুমুরকে তিনি নিজের নদী মনে করেন। নদীটির তলদেশ বালি,পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। সে জন্য পানি শুকিয়ে গেলে বোরোধানের আবাদে মারাত্মক বিপর্য দেখা দেয়। কালাডুমুর নদী কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর গোমতী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে ইলিয়টগঞ্জ পর্যন্ত ৪১৮৫০ফুট প্রায় ১৩ কিলোমিটার তিনি নিজস্ব উদ্যোগ এবং খরচে পরিমাপ করে পূনঃখননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে জমা দিয়েছেন। নদীটি পানি দিয়ে দাউদকান্দি, চান্দিনা, মুরাদ নগর, কচুয়া চারটি উপজেলার আনুমানিক ৫০ হাজার বিঘা বোরোধানের জমিনে প্রায় ১২ লক্ষ্য ৫০ হাজার মণ ধান ফলনে সেচের একমাত্র উৎস্য। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ২০০৭ সালে মতিন সৈকতের উদ্যোগে সেচ প্রকল্পের মালিকদের সমন্বয়ে ২ কিলোমিটার এবং ২০১৫ সালে আধা কিলোমিটার পূনঃখনন করে সেচের প্রবাহ সচল রাখেন। পানি প্রবাহের প্রয়োজনে তিনি বিভিন্ন সময়ে কচুরিপানা পরিস্কার এবং ড্রেনেছ করে দিচ্ছেন। নদীটি খননের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ২০ বার মানববন্ধন, সংবাদ সন্মেলন, প্রতীকি অনশন, কোদাল মিছিল, নদী মেলা, নদী অলিম্পিয়াড করেছেন। উপজেলা এবং জেলা প্রশাসন,পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করে চলছেন। স্থানীয় সাংসদের কাছে নদীটি খননের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, এবং কৃষি মন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন। নদীটি খননের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়েছেন কৃষক বন্ধু মতিন সৈকত।
[৭] উল্লেখ্য,এ বিষয়ে কৃষি মিডিয়া ব্যক্তি ও সাংবাদিক শাইখ সিরাজ ২০১৫ সালে তাকে নিয়ে একটি প্রোগ্রাম করেন।