আব্দুল্লাহ মামুন: [২] বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, ক্যাম্পে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরেও এখানকার লোকদের মধ্যে সামান্যতম সচেতনতাবোধ গড়ে ওঠেনি। ক্যাম্পে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করা হলেও বাসিন্দারাই ভেতরে অবাধে ঘোরাফেরা করছেন। ক্যাম্পের অলি-গলিতে দিনভর যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের বেশিরভাগ মানুষই কোনো ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করছেন না।
[৩] ক্যাম্পের বর্তমান চিত্র জানিয়ে সেখানকার বাসিন্দারা জানান, ক্যাম্পের ভেতরের অংশে মোবাইল সার্ভিসিং, চায়ের দোকানসহ সব দোকানপাট খোলা রয়েছে। দুপুর দুইটার পর সব দোকানপাট বন্ধ করার নির্দেশনা থাকলেও ক্যাম্পের ভেতরে তা মানা হচ্ছে না। আর দোকান ঘিরে চলছে আড্ডা। নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব।
[৪] জেনেভা ক্যাম্পের উর্দুভাষী যুব ছাত্র আন্দোলন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এরশাদ আলম নয়ন জানান, করোনাভাইরাসের এখন পর্যন্ত জেনেভা ক্যাম্পের তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন গতকাল মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তি ক্যাম্পের ৪ নম্বর সেক্টরের ভাড়াটিয়া ছিলেন। বর্তমানে ৭ নম্বর ও ২ নম্বরে সেক্টরে একজন করে আক্রান্ত রয়েছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ গবেষণা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পরীক্ষার পরেই তারা আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হয়েছেন। আক্রান্তরা বর্তমানে ক্যাম্পেই লকডাউন অবস্থায় রয়েছেন।
[৫] স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টনের নির্দেশে জেনেভা ক্যাম্পে করোনা আক্রান্ত রোগীর বাসা ও গলিতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির সময় আমরা পরবর্তীকালে দেশান্তরিত হয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই ভূখণ্ডে আসি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীকাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত শতাধিক ক্যাম্পে মানবেতর জীবন যাপন করছি। দেশের সবচেয়ে বড় ক্যাম্প জেনেভা ক্যাম্প। এখানে প্রায় ছয় হাজার পরিবার বসবাস করে। এখানে বসবাসীদের মধ্যে বর্তমান করোনা সংকটে তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ক্যাম্প লকডাউন বলা হলেও ভেতরে প্রায় সকল দোকানপাট খোলা রয়েছে। লোকজন মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছে। কারো মধ্যে কোনো সতর্কতা নেই।‘
[৬] জেনেভা ক্যাম্পে বসবাসকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ক্যাম্পে অভ্যন্তরিণ লকডাউনের দাবি জানিয়েছেন উর্দুভাষী যুব ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা।
আপনার মতামত লিখুন :