শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ০৯:৫২ সকাল
আপডেট : ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ০৯:৫২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মৌলভীবাজারের হাওরে ধানের চিটা নিয়ে কৃষকরা হতাশ : কৃষি বিভাগ বলছে এটা নগণ্য

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :  [২] ঝড় শীলাবৃষ্টি ও বন্যার শঙ্কা নিয়ে মৌলভীবাজারে হাওরগুলোতে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও ধানে অতিরিক্ত চিটা থাকায় কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। ফলন ভালো হলেও প্রকৃত ধান কতটুকু পাবেন সে নিয়ে কৃষকের মনে হতাশা দেখা দিয়েছে। সময় মত বৃষ্টি না হওয়াতে ধানে ধরেছে চিটা ধরেছে বলে কৃষি বিভাগের ধারণা।

[৩] জেলা কৃষি বিভাগের মতে, মৌলভীবাজার জেলার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি, কাওয়াদীঘি, হাইল হাওর, কেওলা হাওর, বড় হাওর, কাওয়াদীঘি হাওরসহ মোট ছয়টি হাওরে সেচ প্রকল্পের ভেতর ও বাহিরে মোট এবছর ৫৩ হাজার ৫শত ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের ধারণা হাওর এলাকা থেকে ২ লাখ ৪ হাজার ৩৭৩ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদন হতে পারে।

[৪] কিছুদিন আগে কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে কাওয়াদীঘি হাওরে আংশিক ধান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগাম বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য কৃষকদের স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্ষেতের ধান কাটার পরামর্শ দিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিক যোগাড় করে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। গত ১০-১২ দিন থেকে হাকালুকি ও কাওয়াদীঘি হাওর অঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বোরো ধান ঘরে তুলতে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাওর এলাকার প্রতিটি সড়কে ধান তোলার কাজ চলছে। কোথাও কৃষকরা ধান কেটে রাস্তায় জমা করছে আবার কোথাও ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছে।

[৫] হাকালুকি হাওর এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। কথা হয় সদর উপজেলার হাওর কাওয়া দীঘির আখাইলকুড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ, ছমেদ মিয়া, আব্দুর রজাকের সাথে। তারা জানান, চলতি বছর ধানের ফলন অনেকটা ভাল হলেও সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় ধানে চিটা দেখা দিয়েছে। তারা বলেন বেশির ভাগ কৃষক বি-২৮ ও ২৯ বি-৫৮ ধান কাটা শুরু করলেও ক্ষেতের ধান পরিপক্ক হয়নি। প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভয়ে নিজেরা ধান কাটা ও মড়াইয়ের কাজ করছেন।

[৬] রাজনগর উপজেলার হাওর পারের রক্তা গ্রামের রফিক মিয়া, রমজান আলী জানান, বৃষ্টির অভাবে তাদের ধানে চিটা ধরেছে আর শিলা বৃষ্টিতে ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় তারা আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন।

[৭] হাকালুকি হাওর পারের কৃষকরা জানান, ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেশী হওয়া ধানের দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন। করোনা ভাইরাসের কারনে সময়মত শ্রমিক মিলছেনা। এ পর্যন্ত হাওরের ৪০-৪৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটে জনপ্রতি দৈনিক ৫ থেকে ৬শত টাকা মজুরি দিয়েও ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না।

[৮] মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন হাওর অঞ্চল ঘুরে বোরো ধান তাড়াতাড়ি কাটার জন্য শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করছেন। এছাড়া হাওর এলাকার উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ থেকে প্রান্তিক কৃষক ও শ্রমিকদের সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

[৯] হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক বকসি ইকবাল আহমদ বলেন, হাওর অঞ্চলে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যদি ধান কাটার মেশিন সরবরাহ করা হয় তাহলে অতি দ্রুত ও সহজভাবে কৃষক ধান তুলতে পারবে। তাতে এ ঝুঁকিটাও কমবে। তিনি আরো বলেন, সরকার খাদ্য সংকট মোকাবেলায় আউশ ফসলটা করার জন্য জোর দিচ্ছে । এ জেলায় অনেক অব্যবহৃত কৃষি জমি পড়ে রয়েছে। সেটা সরকারের খাস জমি বা ব্যক্তি মালিকানা জমি হতে পারে। এগুলো স্থানীয় সরকার ও কৃষি অফিসের মাধ্যমে সার্ভে করে পানি সেচের ব্যবস্থা করলে আউশ আবাদ সম্ভব হবে।

[১০] জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারি জানান, হাওরে সেচ প্রকল্পের আওতায় মোট ২ লাখ ৪ হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। ধানে যে চিটার কথা কৃষক বলছে তার পরিমাণ নগণ্য। কিছু কিছু এলাকায় খরা ছিল, সেখানে কিছু চিটা হয়েছে। তিনি বলেন হাওরের ৫৪ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে কিছুটা বেশী উৎপাদন হয়েছে।

[১১] আউশ আবাদের ব্যাপারে তিনি বলেন,আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বৈঠক করেছি। তারা প্রয়োজনে প্রকল্প থেকে সেচের পানি সরবরাহ করবে। এবছর ৫লাখ ৫৮হাজার ৯৭হেক্টর জমিতে আউশ চাষ করার লক্ষ্যমাত্র দেয়া হয়েছে। এটি দেশের দ্বিতীয় লক্ষ্যমাত্রা হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়