নাদেরা সুলতানা নদী : ফেব্রুয়ারিতেই বোধহয় প্রথম শুনি ‘করোনা’। মার্চ আসতে না আসতেই ছড়িয়ে গেলো ছোবল অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর আরও অনেকখানে। প্রায় দুই সপ্তাহ তুমুল উৎকণ্ঠায় কাটানোর পর ১৮ মার্চ ২০ থেকে হলাম গৃহবন্দি। মানুষকে ঘিরে থাকা, আমার প্রিয় কাজেরই একটি। কাছের মানুষের সঙ্গে আড্ডা, চা কফি গল্প আমার জীবনের অন্যতম অংশ, এই ছেড়ে বেঁচে থাকাটা আমার জন্য শাস্তিতুল্য। আছি নির্বাসনে। কাজ আছে এখনো, এই শান্তি... খুব ব্যস্ততায়ই কেটে যাচ্ছে আমার এসব দিনরাত তাই। সমস্যা একটাই আমার ভালো থাকাটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ কোনোদিনও ছিলো না। মা-বাবা, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়, বন্ধু, দেশ, দেশের মানুষ ভালো না থাকলে নিজের শারীরিক সূস্থতা থাকলেও মনে শান্তি থাকে না। নেই আমারও। কোনো কোনোদিন জগত সংসার একটু বেশিই বিমর্ষ করে দিচ্ছে। আজকেও তাই। তারপরও ঘুমাতে যাওয়ার আগে বসে বাংলাদেশের দুই-একটা সংবাদ দেখছিলাম। হয়তো যথেষ্ট নয়, তারপরও মনকে দিই সান্ত¡না। অনেকেই দাঁড়াচ্ছেন মানুষের পাশে। কিছু সাধারণ মানুষ তো বটেই, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সেনাবাহিনী, অনেক স্থানীয় প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই অস্ট্রেলিয়ায় বসে আমি যেমন লকডাউনে আছি, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামো, নানা পেশার জনগোষ্ঠীকে টানা ঠিক এভাবেই ঘরে রেখে দেশকে পুরোপুরি নিরাপদ করে তোলা একটা প্রায় অসম্ভব কাজ, অনুধাবন করছি নতুন করে। বাংলাদেশে বাড়ছে টেস্ট, বাড়ছে রোগী। সময়ই বলে দিচ্ছে সবচেয়ে চরম সময়টাই পার করছে বাংলাদেশ। কিছু মানুষ আমরা হারাবো এটা নিশ্চিত, কতোটা মূল্যের বিনিময়ে আমরা পার করবো এই করোনার কালরাত এটাই এখন অপেক্ষা। আমি খুব দুঃখিত ইনবক্সে বা কারও কলে অ্যাটেন্ড করতে পারছি না বেশ কদিন। সময় সুযোগ এবং মন মেজাজ কোনোটাই আয়ত্তে নেই। ফিরবো হয়তো আবার কোনো এক নির্মল ভোরে। কোনো না কোনো এক সময়ে, কাছে কিংবা দূরে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :