বীথি সপ্তর্ষি : যে মেয়েরা একটু বাইরে যেতো, নাচ-গান করতো, ছেলে বন্ধু থাকতো, সাজগোজ করতো, লাল লিপস্টিক পরতো, রাত করে বাসায় ফিরতো, জোরে হাসতো, পরিপাটি কাপড়চোপড় পরতোÑ মোদ্দা কথা নিজের ইচ্ছামতো চলতো তাদের একসময় বেশ্যা বলা হতো। সবাই-ই বলতো। কাউকে দমাতে, ভেঙে দিতে ‘বেশ্যা’ শব্দের জুড়ি নেই। এই এক শব্দ শুনলেই ‘ভদ্র ঘরের মেয়েরা’ একদম চুপসে যেতো। তারপর বহু জল গড়ালো। এখন বাম রাজনীতি করা, নারীবাদী, প্রগতিশীল নারী-পুরুষ একটু আউটস্ট্যান্ডিং মেয়েদের হিউমিলিয়েট করতে ‘বেশ্যা’ বলে এবং সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো আপনি ভাবতে পারেন, তারা হয়তো বেশ্যাদের খারাপ ভাবছেন, তাই তাদের পেশাটাকে গালি হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু এ রকম ভেবে থাকলে আপনারা বোকা। বেশ্যাদের নিয়ে তাদের কোনোই সমস্যা নেই, বেশ্যাগিরি করা নিয়েও কোনো সমস্যা নেই। তাদের সমস্যা ‘বেশ্যাদের চেয়েও খারাপ’ যারা, তাদের নিয়ে। তারা কম কাপড়চোপড় পরে, ব্রা-বিকিনি পরে ছবি তোলে, সেই ছবি আপলোডও করে। তারা প্রেম করে, প্রেম ভাঙে এবং আবার নতুন প্রেম করে। একবার বিয়ে বা প্রেম করে ফেললে মারধর খেয়েও জন্ম-জন্মান্তর সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে না। সুতরাং তারা বেশ্যার চেয়েও খারাপ।
বেশ্যাকে খারাপ বললে না হয় এই জ্ঞানীগুণীদের জিজ্ঞেস করা যেতো, কেন তাদের পুনর্বাসন করেন না, বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেন না? হিউম্যান ট্রাফিকিং বন্ধ করেন না, ফুটপাথের বাচ্চা মেয়েগুলোকে সুস্থ পরিবেশ দেন না? বেশ্যাদের নিয়ে যেহেতু তাদের সমস্যা নেই, সব কিছু ঠিক আছে। সেহেতু কোনো প্রশ্নই করা যাচ্ছে না। বেশ্যাদের চেয়েও খারাপ মেয়েদের নিয়ে হয়েছে বিপদ। তাদের নিয়ে তো কিছুই করা যায় না। তারা কোনো কিছুতেই থেমে যাচ্ছে না, দমে যাচ্ছে না। নিদেনপক্ষে কান্নাকাটি তো করা উচিত, সেটাও করছে না। আফসোস। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :