শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হার্ড ইমিউনিটি ও যোগ্যদের বেঁচে থাকা

ইকবাল আনোয়ার : মনে হলো হার্ড ইমমিউনিটি বা আমার করা বাংলা, ‘প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি’ নিয়ে একটু লিখি। হার্ড মানে পাল। যেমন মোষের পাল। ইংরেজি থেকে বাংলা করার কৃত্রিম বুদ্ধিকে আমি জিজ্ঞাসা করি, হার্ড ইমমিউনিটির বাংলা কী, সে বলে ‘পশুর রোগ অনাক্রমণতা’। আমি দেখি যে সুন্দর তো। লেখাটা সহজ করতে এ বাংলাটা যথার্থ। মানুষের যেমন ছোঁয়াছে রোগ হয় পশু বা অন্য প্রাণীদেরও তেমন হয়। প্রথম থেকেই হচ্ছে। পশুদের সমাজে আমাদের জানামতো কোনো ল্যাব নেই, যেখানে ওষুধ বা টিকা তৈরি হয়। তবে হয়তো কেন, তাদেরও নিজস্ব অভিজ্ঞতায় দীর্ঘ পরিক্রমায় নিদান ব্যবস্থা আছে। কুকুর নাকি কোনো অসুখে নির্দিষ্ট পাতার সন্ধানে যায়। মানুষ তা খেয়াল করে শিখে নেয় চিকিৎসা। পশুদের বেঁচে থাকা গৃহপালিত ছাড়া, অনেকটাই প্রাকৃতিক। যে প্রাকৃতিক পদ্ধতিটা তাদের বংশ পরম্পরায় বাঁচিয়ে রাখে এবং এই যে বেঁচে থাকা, তার জন্য প্রথমে অনেক পশুকে তাদের প্রাণ উৎসর্গ করতে হয়, সেটা হলো হার্ড ইমমিউনিটি। হার্ড ইমমিউনিটির বিজ্ঞানটা হলো নতুন কোনো ভাইরাস বা অন্য জীবাণু কোনো সমাজে বা পালে আসলে, চাই মানুষ পশু বা যেকোনো প্রাণই হোক, সেখানে যা যা হয়, তাহলো :
১. কিছু সংখ্যক বা অনেক সংখ্যক, যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা নানা কারণে কম, তারা মারা যায়। ২. অনেক সংখ্যকের রোগটা হয় বটে, কিন্তু তারা তা খেয়ালই করতে পারে না, তাদের কিছুই হয় না, তবে তারা অন্যদের মাঝে রোগ ছড়াতে থাকে। ৩. কিছু সংখ্যক রোগে ভোগে, মানুষ হলে চিকিৎসা পায়, পশু হলে তা তাদের মতো ভালো হয়ে যায়। ৪. মানুষ হলে টিকা প্রদান করা হয়। পশুদের এটা নেই। এই যে উপরের চারটা বিষয় বলা হলো এ চার ভাগের মারা যাওয়া বাদে বাকি তিন প্রকার উপায়ে তাদের মাধ্যমে সেই পালের বা সেই সমাজের মধ্যে একটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। প্রাকৃতিকভাবে রোগ হয়ে বা কৃত্রিমভাবে টিকা দেওয়ার ফলে দেহে সেই রোগটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হওয়ার ফলেই তা হয়। যখন এভাবে বেশি সংখ্যকের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়, তখন বাকি অল্প সংখ্যকেরর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি না হলেও রোগ ছড়ানোর সুযোগ এমন মাত্রায় কমে আসে যে তা আর কার্যকর থাকে না। এটাই হলো হার্ড ইমমিউনিটি। এখন কোটি টাকার প্রশ্ন : করোনার বিরুদ্ধে এটা হবে কিনা? হলে কখন হবে। উত্তর দেওয়ার আগে আবার কিছু কথা বলতে হয়। হার্ড ইমমিউনিটি কিন্তু সব রোগে হয় না। তবে রোগের প্রভাব কমে আসে। যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা। কারণ হলো এ রোগের ভাইরাস ঘনঘন রূপ পাল্টায়। ফলে এর বিরুদ্ধে একই কারণে টিকাও আবিষ্কার করা যায় না। এর কোনো একটা রূপের বিরুদ্ধে টিকা বানাতে বানাতে আরেকটা রূপ এসে পড়ে। আরেকটা দিক হলো একেক রোগে একেক রকম নিয়মে হার্ড ইমমিউনিটি তৈরি হয়। মানব সমাজের কতো শতাংশ অংশে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে অপর অংশ নিরাপদ হয় তা এক এক রোগে এক এক রকম। সাধারণ তো রোগভেদে ধরি সত্তর থেকে নব্বই শতাংশ। করোনার ক্ষেত্রে তা কতো শতাংশের সংক্রমণ বা টিকা দিলে অর্জিত হবে তা জানা যায়নি। চূড়ান্ত কথা: যতো কিছুই মানুষ করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত প্রকৃতির কাছেই নিরাময় বা সিদ্ধান্ত নির্ভর করে। করোনাও তেমনি, আগের বহু বহু মহামারির মতো, একসময় নিদানে যাবে সে। মানবের জয় হবে। তবে কতো মানুষের জীবন গেলে অর্থনীতি ও সামাজিকতার উপর কী প্রভাবের পর তা অর্জিত হবে সেটাই প্রশ্ন। যারা যোগ্য তারাই বাঁচবে বা টিকবে, ডারউইনের তত্ত্বের এ অংশ মেনে নিতে কোনো দর্শনেরই আপত্তি করার কিছু নেই। মানুষ কীভাবে এলো তার সে ব্যাখ্যার নানা সমালোচনা আছে, থাকবে, থাকুক। এটা তো বুঝতে বড় জ্ঞানী হতে হয় না যে কথার কথা, যারা স্বাস্থ্যবান, যুবক, ধনী, নানাভাবে শক্তিশালী তারাই রোগে ভোগবে কম। যারা গরিব তারা করোনায় বেঁচে গেলেও অভাবে জর্জরিত হবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে তাদের, ম্যানেজ করা না গেলে তারা না খেতে পেলে যা হয়, তাই হবে। অর্থনৈতিক বা অন্য শক্তিই তো বেঁচেবর্তে থাকা, ভালো থাকা, সম্মান নিয়ে প্রভাব নিয়ে থাকার মাপকাঠি। টেলিভিশন বলবে ডিম, দুধ, মাংস খান, রঙিন ফলমূল, শাকসবজি খান, এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। টেলিভিশন জড়বস্তু, তার মেধা অতোটুকু ভাবতে পারে না যে, এটা কাদের বলা হচ্ছে। ক’জন তা পারবে। আদতে টেলিভিশনও ডারউইনকে ফলো করেÑ যারা পারেন তারা খান, বাকিরা। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়