তৌহিদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: [২] ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলাসহ নদীবেষ্টিত হাওরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ধানকাটা শুরু হয়েছে। অন্যান্য বছর বিভিন্ন জেলা থেকে ধানকাটার শ্রমিক আসলেও চলতি বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভারের কারণে বহিরাগত শ্রমিক এসেছে অনেক কম।
[৩] বহিরাগত শ্রমিক কম থাকায় স্থানীয় কর্মহীন শ্রমিক ও অত্যাধুনিক ধানকাটা মেশিন ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ দিয়ে ধানকাটা হচ্ছে। বাইরে থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক না আসলেও জেলায় ধানকাটায় সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
[৪] সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নানা কর্মের বেকারগ্রস্ত শ্রমিকেরা মূলত ধান কাটছেন। সরাইল উপজেলার ধরন্তি হাওরে এমনি কয়েকজনকে ধান কাটতে দেখা যায়; তারা মূলত অন্যপেশার মানুষ। তাদের মধ্যে কয়েকজন রাজমিস্ত্রি, হোটেল-রেস্তুরা, ফুটপাতের হকার ও ইটাখোলার শ্রমিক রয়েছেন।
[৫] এমনি একজন মিলন মিয়া; তিনি ঢাকার একটি হোটেলে বয়ের কাজ করেন। করোনার কারণে বাড়িতে বেকার থাকায় ধান কাটছেন। ধানকাটায় তার অভিজ্ঞতা না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পারিশ্রমিক যা পাচ্ছি তা দিয়ে এখন খেঁয়ে বেঁচে থাকতে পারছি। রাজমিস্ত্রি শফিক মিয়া জানায়, বেকার অবস্হা আমার সংসার আর চলছেনা। তাই ধান কাটার কাজে লাগছি। কষ্ট হলে পেটের দায়ে কয়েকদিন যাবৎত একাজটি করে যাচ্ছি।
[৭] ধরন্তি হাওরের কৃষক মহসিন মিয়া বলেন, আগে ধানকাটার মৌসুমে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ থেকে শ্রমিক আসতেন। এ বছর তেমন কেউ আসতে পারেননি। তাই এলাকার অন্যান্য পেশার কর্মহীন মানুষকে দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন।
[৮] কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। স্থানীয় কর্মহীন অকৃষি শ্রমিকেরা ধানকাটায় এগিয়ে এসেছেন। তবে সব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন। সম্পাদনা: ইস্রাফিল
আপনার মতামত লিখুন :