ডা. এ বি এম কামরুল হাসান, ব্রুনাই থেকে : প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মহামারীতে সবার অংশগ্রহণ যুগে-যুগে, দেশে-মহাদেশে আদিকাল থেকে চলে আসছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ইউরোপ-আমেরিকা, এমনকি এশিয়ার দেশগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়। এসব দেশের সর্বসাধারণ চিকিৎসাকর্মীদের সর্বতোভাবে সহযোগিতা করছে। হাসপাতালে খাবার সরবরাহ করছে, চিকিৎসাকর্মীদের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে, তাদের বাসায় বাজার হচ্ছে কিনা খবর নিচ্ছে। শপিংমল এ লাইন ছেড়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশই এর ব্যতিক্রম। পত্রিকায় দেখলাম, ডাক্তাররা কাজ করছে বলে বাড়িওয়ালা তাড়িয়ে দিচ্ছে, ডাক্তার-নার্সরা খাবার পাচ্ছে না। অথচ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ব্রুনাইয়ে হাসপাতালে খাবার অপচয় হচ্ছে। সব দিচ্ছে সাধারণ জনগণ। যারা দিচ্ছে, তাদের সবাই যে বিত্তশালী, তা কিন্তু নয়। যার যা সামর্থ্য, তাই দিচ্ছে। দিনশেষে কী নেই এখানে? খাবার পানি থেকে শুরু করে কোমল পানীয়, বিস্কুট, টিসু পেপার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টুথব্রাশ-পেস্ট, এমনকি মাইক্রোওভেন, ফ্রিজ পর্যন্ত। হাসপাতালের কোনো কোনো কক্ষ দেখলে মনে হবে এ বুঝি একটি গুদাম। তিনবেলা খাবার দিচ্ছে কেউ না কেউ। এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই বলে নষ্ট হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতেও একই চিত্র। সিঙ্গাপুরে তো একধাপ এগিয়ে কোয়ারান্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাসায় খাওয়া পৌঁছে দিচ্ছে।
আমাদের দেশে বিত্তবানের অভাব নেই। মানবিক মানসিকাতার মানুষেরও অভাব নেই। হতে পারে, লকডাউনের কারণে বের হতেধ পারছেন না। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া যেতে পারে। মানবিক বিপর্যয় এড়াতে সবারই অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সব দায় রাষ্ট্রের না। সবারই কিছু কিছু দায় থাকা উচিত। লেখক : চিকিৎসক, ব্রুনাইতে কর্মরত। ফৎশধসৎঁষ@মসধরষ.পড়স
আপনার মতামত লিখুন :