শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১২:২৭ দুপুর
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১২:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] গোয়ালন্দের কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা

কামাল হোসেন : [২] উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের পল্লী অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া গ্রামীন জনগোষ্টির শতভাগ স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে গোয়ালন্দ উপজেলার ১৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েও অসুস্থ্যদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা।

[৩] সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই নানা ধরনের সাধারণ রোগের চিকিৎসা, পরামর্শ ও রেফারেল বিষয়ে কাজ করছে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। অথচ করোনা সংক্রমনের শঙ্কা সত্তেও কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থার কোন কিছুই সরবরাহ করা হচ্ছেনা। এ অবস্থায় সুরক্ষা সরঞ্জাম পিপিই, মাস্ক,হ্যান্ডস্যানিটাইজার, হ্যান্ডগ্লাভস ইত্যাদি সরবরাহ জরুরী বলে জানান সিএইচসিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা।

[৪] উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ১৬টি সরকারী কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ ক্লিনিকগুলো স্থাপিত হয়েছিল। গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃক এগুলো তদারকিসহ যাবতীয় সাপোর্ট দেয়া হয়। সেখানে প্রত্যেক ক্লিনিকে ১জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি), ১জন ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার এ্যাসিসট্যান্ট (এফডব্লিউএ), ১জন অথবা ২জন হেল্থ এ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়মিত ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

[৫] উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জায়েদুল ইসলাম জানান, সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত মানুষও এলাকায় ফিরেছেন। এ ছাড়াও দৌলতদিয়া ঘাট দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হওয়ায় অসংখ্য মানুষ এখান দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে যাতায়াত করেছে। এমতাবস্থায় প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে আমরা কাজ করে য়াচ্ছি। আগে এখানে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসতো। কিন্তু করোনা প্রভাবের কারণে এখানে এখন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন তার মধ্যে অধিকাংশই জ¦র, সর্দি, কাশি, শ^াসকষ্টজনিত কারণে। তাদের মধ্যে যদি কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকেন, তাহলে রোগী থেকে আমাদের মধ্যে সংক্রমণ হতে পারে। এর পর আমাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারেন অন্যরাও। এ মুহুর্তে সব ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী আমাদের খুব দরকার। এখন পর্যন্ত আমরা কোন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী পাইনি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

[৬] নবুওছিমদ্দিনপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ছমিরুদ্দিন জানান, আমাদেরকে এখনও কোন প্রকার কোন সুরক্ষা সামগ্রী দেয়া হয় নাই। এ অবস্থায় জ¦র ঠান্ডা নিয়ে যদি করোনায় আক্রান্ত কোন ব্যক্তি প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে ক্লিনিকে আসে সে ক্ষেত্রে তো আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনায় আতঙ্কে থাকি। তাছাড়া প্রায় ৯বছর যাবৎ একই বেতনে কাজ করে যাচ্ছি, কোন প্রকার ইনক্রিমেন্টও যোগ হয়নি। এমনকি মৃত্যু ভাতাও দেয়া হয় না আমাদের। এর পরেও নিজেদের চিন্তা না করে করোনা সংক্রমণের ভয়কে দুরে ঠেলে আমরা সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

সিএইচসিপি গোয়ালন্দ উপজেলা এ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি এনামুল হক জানান, নোভেল করোনাভাইরাস আতঙ্কে দেশের এই দূর্যোগময় মুহুর্তে চিকিৎসা সেবা দিতে পেরে আমরা গর্বিত, কিন্তু যথাযথ সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে আমাদের জীবন শংকিত। এ দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবাগ্রহীতাদের উপস্থিতি কমে গেছে। অথচ আমাদের এখানে রোগীর উপস্থিতি বেড়েছে। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে আমরা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। অথচ দঃখের বিষয় এই যে, সিএইচসিপিদের জন্য কোন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে না । এমন পরিস্থিতিতে সিএইচসিপিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পল্লীর অসহায় জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। তিনি আরোও জানান, সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার,পিপিই এবং পর্যাপ্ত পরিমান মাস্ক দিলে স্বাস্থ্যকর্মীরা সুরক্ষায় থেকে সেবাদান কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে পারবে।

এ প্রসঙ্গ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ জানান, আজ বিকেলের মধ্যেই তাদের সুরক্ষা সামগ্রী দেয়া হবে। তবে সুরক্ষা সামগ্রী পিপিই, মাক্স, হ্যান্ডস্যানিটাইজার এর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং ভীর কমিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কারণ পিপিই পড়েও অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়