শিরোনাম
◈ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার তাগিদ রাষ্ট্রপতির ◈ ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা, সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৩:২০ রাত
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৩:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] লকডাউনে রোজগারের অভাবে অসহায় রাজশাহীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা!

মুসবা তিন্নি : [২] সারাদেশ রয়েছে করোনার প্রভাব থেকে বাঁচতে লকডাউনে! এই সময় নিম্নবিত্ত, মধ্যেবিত্তদের মতো কর্মহীনতার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছে রাজশাহীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অঞ্চলের মানুষেরা। অভাব-অনটন তো তাদের চিরসঙ্গী ছিলোই এর সাথে যোগ হয়েছে করোনার প্রভাবে হাতে কাজ আর ঘরে খাবার না থাকার চিন্তা।

[৩] সরেজমিনে রাজশাহীর মালদা কলোনী,হরিজন পল্লী এবং খৃষ্টানপাড়ার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অঞ্চল পরিদর্শনে জানা যায় তাদের বর্তমান জীবন সম্পর্কে।

[৪] আলাপ হয় চল্লিশোর্ধ নারী আরতির সাথে। তিনি জানান, পরিবারে স্বামী আর ২ মেয়ে নিয়ে ৪ জন। রাতে ১ কেজি চাল রান্না করে আলু ভর্তা করে অর্ধেকটা খেয়েছেন ৪ জন মিলে। বাঁকি অর্ধেক সকালে নুন দিয়ে পান্তা খেয়েছেন। স্বামী বাহিরে গেছে চালের সংস্থান করতে। বাজার এলে দুপুরে রান্না হবে। বাজার না এলে কি হবে জানিনা।

[৫] আলাপকালে এই নারী আরো জানান, তাদের নিজেদের কোন জায়গা নেই। খাস পুকুরপাড়ে ১০/১২টি পরিবার ঘর তুলে বাস করছেন। নেই নিজেদের কোন জমিজমা। অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে জীবন চলে। যখন কৃষিকাজ থাকে না তখন স্বামী শহরে যায় কাজের সন্ধানে। বর্তমানে কৃষিকাজ নেই। শহরে সবকিছু বন্ধ থাকায় স্বামী কাজে যেতে পারছেন না। এ কারণে অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। এভাবে দিন কাটালেও এখনও তাদের সম্পর্কে কেউ কোন খবর নেয়নি বলেও তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

[৬] সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জবিনের স্ত্রী আদরী জানান, স্বামী ইটের ভাটায় কাজ করে। করোনা ভাইরাসের কারণে ভাটার কাজ বন্ধ আছে। বাড়িতে ৫ জন সদস্য নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার হচ্ছে।

[৭] কল্পনা রাণী নামক আরেক নারী জানান, রাতে গাছের সজনা আর আলু দিয়ে ভাত খেয়েছেন। সকালে খেয়েছেন পান্তা আর কাঁচা মরিচ। গত ১মাস থেকে মাছ চোখে দেখিনি। বাড়িতে বয়স্ক শ্বাশুড়ি আছে। এতোদিন তারা কোন খাদ্য সহায়তা পাননি। বাড়িতে চাল, ডাল তৈল কিছুই ছিলনা। তবে আজ সকালে বরেন্দ্রভূমি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা থেকে বৃদ্ধ শ্বাশুড়িকে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ লিটার সয়াবিন তৈল, ১ কেজি লবণ ও ১ টি সাবান দিয়ে গেছে।

[৮] ঐ সংস্থা থেকে গ্রামের আরো ১০জন বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সময় আরো কয়েকজন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, হাতে কাজকর্ম না থাকায় তারা বেকার সময় পার করছেন এবং খুব কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। কোন ধরণের সরকারি সহায়তা তারা পাচ্ছেন না। মাঠে ধান কাটা শুরু না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য তারা জোর দাবি জানান।

[৯] এ বিষয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন বিএসডিও’র নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রউফ জানান, রাজশাহীতে প্রায় লক্ষাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাস। এরা সবাই কৃষিমজুর। বছরে ৫/৬মাস কৃষি কাজ থাকে। অন্য সময়গুলিতে তাদের আগাম শ্রম বিক্রয় করে অথবা ধার দেনা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।  বিএসডিও’র পক্ষ থেকে সাধ্যমত খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারের চলমান খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষি মজুরদের কর্মহীন হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান এই উন্নয়ন সংগঠক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়