মৌরী সিদ্দিকা : [২] ভারতে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠানোর অভিযোগ এনআরএসের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে। আতঙ্কিত প্রসূতি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিলে নিজের বাড়িতে ফিরে শৌচাগারে পুত্রসন্তান প্রসব করলেন। যদিও সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি মা।
[৩] প্রসূতি জানান, শুক্রবার রাত থেকে তার প্রসব-বেদনা শুরু হয়। একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ তাকে ভর্তি নিতে চায়নি। পারিবারিক সূত্রে এনআরএসের এক স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে প্রসূতির যোগাযোগ ছিলো। তার পরামর্শ মেনে তিনি ১৮ এপ্রিল শনিবার বিকেলে এনআরএসের জরুরি বিভাগে আসেন। তাকে স্ত্রীরোগ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
[৪] সম্প্রতি এনআরএসে এক প্রসূতির দেহে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। তিনি জানান, স্ত্রীরোগ বিভাগে যাওয়া মাত্র তাকে জানানো হয়, ওই ঘটনার জন্য সেখানে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি পরিচিত স্বাস্থ্যকর্মীকে জানায় প্রসূতির পরিবার। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা কোনো কথা শুনতে রাজি ছিলেন না। প্রসূতির বলেন, প্রতি মুহূর্তে আমাকে বলে যাচ্ছে, এখানে ভর্তির পরে আপনি ও আপনার সন্তানের করোনা হলে আমরা কেউ দায়ী থাকবো না। আপনাকে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সঙ্গে থাকতে হবে! আমি নিজে স্বাস্থ্য পরিসেবার সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসকেরা যে এত দুর্ব্যবহার করবে কখনো ভাবিনি।
[৫] প্রসূতির দাবি, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে নানা ভাবে তাকে বোঝানো হয়, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হলে করোনা হবেই। শেষ পর্যন্ত মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত প্রসূতি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসেন। তিনি বলেন, বাড়িতে পৌঁছনোর পরে শৌচাগারে আমার প্রসব হয়ে গেলো। আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। ওরা হাসপাতালে বারবার বলছিলো, আমি, আমার বাচ্চা মরে গেলে কেউ দায়ী থাকবে না। বাচ্চাটা আমার মরেই গেলো।
[৬] অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় জানান, সেই সময়ে কারা ডিউটিতে ছিলেন তাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। ২০ এপ্রিল সোমবার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
[৭] রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত না করা যায়, তা হলে ইউনিট হেড এবং বিভাগীয় প্রধানকে দায়িত্ব নিতে হবে। সূত্র : আনন্দবাজার
আপনার মতামত লিখুন :