শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৮:০৩ সকাল
আপডেট : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৮:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চারপাশের পাহাড় ছাড়া কেউ আমাদের কান্না দেখে না, ইয়েমেনের মেয়ে মুনতাহার বুকফাটা আর্তনাদ

আক্তারুজ্জামান : মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি, যদি আল্লাহ আকাশ থেকে কোন খাবার পাঠাতো! যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনের ১৯ বছরের মেয়ে সিদরাতুল মুনতাহা এভাবেই নিজের আকুতি জানিয়েছেন। দেশটির মানুষ অনেক আগে থেকেই তীব্র কষ্টে জীবনযাপন করছে। বর্তমান বিশ্ব যে লকডাউন ভোগ করছে এটার সঙ্গে তারা পরিচিত অনেক আগ থেকেই। গত দুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে মুনতাহার একটি মেইলের বঙ্গানুবাদ ঘোরাঘুরি করছে। আমাদের সময় ডটকম পাঠকদের জন্য সেটা তুলে ধরা হলো।

ইয়েমেনের রুমাহ শহরের আকাদি গ্রাম থেকে ১৯ বছর বয়সী মুনতাহা নামের একটি মেয়ে আমাকে মেইল পাঠিয়েছে।মেইলটি এসেছে গত তিন দিন আগে, হঠাৎ আজকে মেইলটা চোখে পড়েছে। মেইলে কি লিখেছে সেটা পরে বলি। আগে সিদরাতুল মুনতাহার পরিচয় দেই।

রুমাহ শহরটি ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে প্রায় ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব ওমান-সৌদি আরব সীমান্তে অবস্থিত। আর আকাদি গ্রামটি রুমাহ শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ী অঞ্চল অবস্থিত। সেই গ্রামে বাস করে মুনতাহা। এই আকাদি গ্রামেই আমাদের ডিউটি ছিল ইয়েমেন সফরের সময়। মুনতাহাকে আমি প্রথম দেখি ওই গ্রামে যাওয়ার পর। দ্বিতীয় দিনে ক্যাম্প এসেছিল ওষুধ নিতে।

[caption id="attachment_1123102" align="aligncenter" width="475"] তাদের কান্না পুরোনো, পুরো বিশ্বই আজ এদের জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করছে[/caption]

বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা মেয়েটার চেহারা আর চাঁদের মাঝে কোন তফাৎ করতে পারবেন না। আমার মনে হয় চাঁদের চেয়েও মুনতাহা বেশি সুন্দরী। কিন্তু, দীর্ঘদিন খাদ্যের অভাব আর নিজের যত্ন না নেওয়ায় সেই চেহারায় একটা দুঃখের ছাপ পড়ে গেছে। প্রথম দেখে আমার খুব মায়া লেগেছিল। কাছে টেনে নিয়ে কথা বললাম। সব জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু ইংরেজি অল্প বােঝে কিন্তু। একটুও বলতে পারে না।

আমাদের গাইড এর সাহায্য নিয়ে ওর কথাগুলো শুনলাম। ও আরবিতে বলছিল আর গাইড আমাকে ইংলিশে ট্রান্সলেট করে বলছিল। ওর ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিল ভালো পড়াশোনা করছিল হঠাৎ দেশে যুদ্ধ নেমে এলো। পরিস্থিতি এখন পুরোটাই উল্টো। ডাক্তারের কথা ভুলে গিয়ে দু'মুঠো খাবারের জন্য এখন সংগ্রাম করতে হয়। মা বাবার একমাত্র মেয়ে। ৯দিন ছিলাম ৯দিনই আমাদের ক্যাম্পে আমাদের সাথে রেখে দিয়েছিলাম। আসার সময় সে কি কান্না!

এবার আসি মেইলে কি লিখেছে৷ ভালোবাসার হিমাদ্রি আপু, অনেকগুলাে ক্ষুধার্ত মানুষের ভালোবাসা নিবেন। গত ১৮ ঘণ্টায় এখানে খাবার পানি আসেনি। আমি গত ১দিন আগে শেষ রুটি খেয়েছি। আজ সকালে দু'টো খেজুর, দুপুরে এখন পর্যন্ত কিছু খাইনি। অনেক কষ্ট করে এখানে হেঁটে এসে একজন আন্তর্জাতিক সাংবাদিকের অনেক হাত পা ধরে আপনাকে এই মেইল পাঠাচ্ছি। বাবা-মা দাঁড়াতে পারে না। গত এক সপ্তাহ ধরে চার পায়ের জন্তুর মত মাটিতে হাটে, এত ক্ষুধা তাদের।

গত কয়েক সপ্তাহ টক গাছের পাতা সিদ্ধ করে ভর্তা করে খেয়েছিলাম। এখন সে পাহাড়ের গাছগুলোর পাতা ও শেষ হয়ে গেছে। সামনে রমাদান আসছে! জানিনা কিভাবে সাহরি করব কি দিয়ে ইফতার করব৷ আপনারা যারা এসেছিলেন যদি দয়া করে রমাদানের আগে আরেকবার আসেন! অন্তত একটু খাবার পানি নিয়ে আসেন! অথবা, ৫ কেজি আটা দেন যাতে আমি, আমার মা আর বাবা রমাদানের রোজাগুলো রাখতে পারি।

মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি, যদি আল্লাহ আকাশ থেকে কোন খাবার পাঠাতো! আমাদের দুঃখ গুলাে শুধু আমাদের আশপাশের পাহাড় ছাড়া কেউ দেখেনা। আপনার সাথের সকল সঙ্গীদের সালাম দেবেন। আপনাদের ফেরার অপেক্ষায়।ফেসবুক পেজ তাকওয়া থেকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়