লুৎফর রহমান হিমেল : যুদ্ধে মাঝে মধ্যে লুকিয়ে পড়তে হয়। পালাতে হয়। এ পলায়নপরতা যুদ্ধেরই একটি কৌশল। এই এখন যেমন আমরা করোনার বিরুদ্ধে লকডাউনে আছি। এটির অর্থ আসলে আমরা করোনাযুদ্ধের মাঠ থেকে পালিয়ে আছি। এই পালিয়ে থাকা করোনার সঙ্গে যুদ্ধের একটি কৌশল। যতোক্ষণ না আমাদের কাছে করোনার ভ্যাকসিন আসছে, যতোক্ষণ না আমরা আক্রান্তদের আলাদা করতে পারছি, যতোক্ষণ না আমরা আবার পূর্ণ শক্তি পাচ্ছি, ততোক্ষণই সবাইকে লকডাউনে থাকতে হবে। এই লকডাউন সময়টুকু এ জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টুকুতে পর্যাপ্ত টেস্ট করতে হবে। আক্রান্তদের আলাদা করে ফেলতে হবে। মুমূর্ষুদের চিকিৎসা দিতে হবে। শ্রমজীবীদের এই সময়টুকুতে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে। কৃষকের ফলফসল খাদ্যপণ্য যাতে পড়ে থেকে নষ্ট না হয়, সেগুলো যাতে ভোক্তার কাছে বিশেষ করে শহুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজগুলো খুবই নিয়মতান্ত্রিকভাবে করতে হবে। অর্থনীতির চাকাকে চলমান রাখতেই এটা করতে হবে। একটু এদিক-সেদিক হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশও যেখানে এখন খাবি খাচ্ছে, আমরা তো তাদের কাছে নস্যি। তাই স্পর্শকাতর এই সময়টায় মাথা খাটাতে হবে। না হলে একবার অরাজকতা শুরু হলে সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। করোনাভাইরাসের কারণে এর মধ্যেই অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের আঘাত লেগেছে। সব কিছু বন্ধ থাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের পাঁচ কোটির বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। ফলে করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যেতে পারে। সেটিও এখন সরকারকে মাথায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, লকডাউন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই নয়, এটি একটি কৌশলমাত্র। করোনার ভ্যাকসিন কবে আসবে সেদিকে চেয়ে না থেকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চিন্তা করতে হবে। বেশিদিন পালিয়ে থাকা পরাজয়েরই নামান্তর। এরচে দ্রুততায় করোনা রোগীদের আলাদা করার মিশন শুরু করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। এরপর একটা সময় পর্যায়ক্রমে কঠোরতা বলবৎ রেখে লকডাউন শিথিল করার চিন্তা করা যেতে পারে। যদিও লকডাউন তুলে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো আসেনি। আরও একমাস গেলেই কেবল বলা যাবে বাংলাদেশের অগ্নিপরীক্ষার সময়টা গেছে, তার আগে নয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :